টিকা পেয়েছেন মাত্র ১২ লাখ শিক্ষার্থী

স্কুলশিক্ষার্থীদের টিকাদান
স্কুলশিক্ষার্থীদের টিকাদান  © সংগৃহীত ছবি

রাজধানীতে চলতি বছরের ১ নভেম্বর ১২-১৭ বছরের শিক্ষার্থীদের করোনা টিকা দেওয়ার কার্যক্রম শুরু হয়। ২৬ নভেম্বর থেকে শুরু হয় জেলা পর্যায়ে। এ পর্যন্ত দেশের ৫৫টি জেলায় এ কার্যক্রম চলছে। দেশে এক কোটির বেশি স্কুল শিক্ষার্থীর মধ্যে মাত্র ১২ লাখ শিক্ষার্থীকে প্রথম ডোজ টিকা পেয়েছেন।

যেসব জেলা টিকার আওতায় এসেছে সেখানেও কার্যক্রম চলছে ধীরগতিতে। কেন্দ্র দূরে হওয়া, সংরক্ষণে প্রতিবন্ধকতা, এসএমএস প্রাপ্তি নিয়ে সমস্যাসহ নানান জটিলতায় এ কার্যক্রমে পুরপুরি আলোর মুখ দেখছে না।

আরও পড়ুন: ২২ লাখ শিক্ষার্থীর অপেক্ষার অবসান হচ্ছে কাল

আগামী ১ জানুয়ারি থেকে এইচএসসি পরীক্ষার্থীদের দ্বিতীয় ডোজ দেওয়া শুরু হবে বলে জানিয়েছেন মাধ্যমিক ও উচ্চশিক্ষা অধিদপ্তর (মাউশি)।

খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, টিকা কার্যক্রম চালু হওয়ার পর সুরক্ষা অ্যাপে রেজিস্ট্রেশন জটিলতা, ১৭ ডিজিটের জন্মনিবন্ধন সনদ গ্রহণ না করা, টিকাকেন্দ্রে বিশৃঙ্খলা, টিকার জন্য এসএমএস না আসা, কেন্দ্রে টিকা সংকটসহ নানা জটিলতা তৈরি হয়। এসব কারণে টিকা থেকে বঞ্চিত হয় অনেক শিক্ষার্থী। এ কারণে সুরক্ষা অ্যাপে রেজিস্ট্রেশন না হলেও পরিচয়পত্র নিয়ে কেন্দ্রে গেলে টিকা দেওয়ার সিদ্ধান্ত হয়। তবে রেজিস্ট্রেশন না থাকলে শিক্ষার্থীরা পাচ্ছে না টিকার সনদ।

আরও পড়ুন: পড়াশোনা নিয়ে মানসিক চাপে কিশোর-কিশোরীরা

মাউশি সূত্র থেকে জানা গেছে, এসএসসি ও এইচএসসি পরীক্ষা শুরুর আগে পরীক্ষার্থীদের অগ্রাধিকারভিত্তিতে দেওয়া হয় করোনার টিকা। ১ জানুয়ারি থেকে তাদের দেওয়া হবে দ্বিতীয় ডোজের টিকা। জেলা পর্যায়ে শিক্ষার্থীদের টিকার জন্য আলাদা আলাদা কমিটি রয়েছে। তাদের তত্ত্বাবধানে পরিচালিত হচ্ছে টিকা কার্যক্রম। কমিটিতে জেলা প্রশাসক ও জেলার সিভিল সার্জেন্ট প্রধান হিসেবে দায়িত্ব পালন করছেন।

সূত্র থেকে জানা গেছে, যে পরিকল্পনা অনুযায়ী টিকা কার্যক্রম শুরুর কথা ছিল দায়িত্বরতদের অবহেলার কারণে টিকা কার্যক্রমে অগ্রগতি হয়নি। ঢাকায় সাড়ে পাঁচ লাখ শিক্ষার্থীর মধ্যে অধিকাংশই প্রথম ডোজ পেয়েছে। তবে সারাদেশে শিক্ষার্থীদের মোট এক কোটির অধিক শিক্ষার্থীর মধ্যে গত দুই মাসে টিকা দেওয়া সম্ভব হয়েছে প্রায় ১২ লাখ শিক্ষার্থীর। রাজাধানীতে শিক্ষার্থীদের জন্য দ্বিতীয় ডোজ শুরু হলেও জেলা পর্যায়ে এটা কবে শুরু হবে তা এখনো অনিশ্চিত।

আরও জানা গেছে, প্রতিটি জেলা সদরে টিকাকেন্দ্র করায় দূর থেকে অনেকে আসতে আগ্রহ পাচ্ছে না। নানা জটিলতার কারণে কেউ কেউ আবার টিকা নিতে এসে ফিরে যাচ্ছে। পরে আর তারা আসছে না। এ বিষয়ে সরকারিভাবে সুনির্দিষ্ট নির্দেশনা না থাকায় এমন পরিস্থিতি তৈরি হয়েছে।

আরও পড়ুন: এসএসসির ফল ঘরে বসে জানবেন যেভাবে

এ বিষয় মাউশির পরিচালক ও স্কুলশিক্ষার্থীদের টিকা তত্ত্বাবধায়ক অধ্যাপক শাহেদুল খবির চৌধুরী বলেন, এসএসসি ও এইচএসসি পরীক্ষাসহ বিভিন্ন কারণে টিকাদান কার্যক্রমে কিছুটা ধীরগতিতে চলছে। এছাড়া জেলা পর্যায়ে টিকা মজুত রাখা বিষয় কিছুটা জটিলতা হচ্ছে। টিকা মজুতের জন্য নির্ধারিত তাপমাত্রা প্রয়োজন হয়। যেসব স্কুলে শীতাতপ নিয়ন্ত্রণ ব্যবস্থা রয়েছে সেখানে রাখা হয়েছে টিকা। এ ধরনের জায়গা সংকট থাকায় জেলা পর্যায়ে সদরে টিকাকেন্দ্র স্থাপন করা হয়েছে। একটি শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে বেশিদিন কেন্দ্র রাখা সম্ভব হচ্ছে না, কারণ সেখানে একাডেমিক কার্যক্রম চালিয়ে যেতে নানা ধরনের সমস্যা সৃষ্টি হয়। এসব কারণে জেলা পর্যায়ে দ্রুতগতিতে টিকা কার্যক্রম চালিয়ে নেওয়া যাচ্ছে না।

তিনি আরও বলেন, সব শিক্ষার্থীকে দুই ডোজ টিকার আওতায় আনা হবে। এরই মধ্যে রাজধানীর শিক্ষার্থীদের দ্বিতীয় ডোজ দেওয়া শুরু হয়েছে।


সর্বশেষ সংবাদ