‘অনলাইন ক্লাসের চেয়ে সরাসরি ক্লাসই বেশি ভালো লাগে’

  © টিডিসি ফাইল ফটো

‘অনলাইন ক্লাসে তেমন মজা নেই। বন্ধুবান্ধব কারো সাথে দেখা হয়না। তাছাড়া মনোযোগ দিয়ে ক্লাস করাও হয়না। এর চেয়ে সরাসরি ক্লাসই বেশি ভালো লাগে।’ দীর্ঘদিন পর ক্লাসে ফিরে এভাবেই নিজের অভিব্যক্তি প্রকাশ করছিলেন রাজধানীর গবর্নমেন্ট ল্যাবরেটরি হাই স্কুলের ৬ষ্ঠ শ্রেণীর শিক্ষার্থী মোহাম্মদ সাখাওয়াত।

পাশে থাকা সাখাওয়াত এর বন্ধু হুমায়রা আজমানও জানালেন দীর্ঘদিন পর স্কুল ড্রেস পরে স্কুল আঙিনায় আসতে পারায় খুব ভালো লাগছে। বললেন, ‘অনেক দিন পর স্কুলে এসে ভাল লাগছে ৷ স্যারদের সাথে বন্ধুদের সাথে দেখা হয়েছে ৷ আমরা অনেক আনন্দিত৷ আর যেন স্কুল বন্ধ না হয়৷ আমরা নিয়মিত ক্লাস করতে চাই।’

আরও পড়ুনঃ অবশেষে স্কুল খুলে দিচ্ছে আফ্রিকার জনবহুল দেশ মিশরও

শুধু সাখাওয়াত কিংবা আজমানই নয়, বরং দেখা গেলো অসংখ্য শিক্ষার্থী দীর্ঘদিন পর স্কুলে আসতে পেরে বেশ উচ্ছ্বসিত। মূলত করোনার সংক্রমণ রোধে গতবছরের ১৮ মার্চ থেকে বন্ধ ঘোষণার পর থেকে গতকাল অবধি দীর্ঘ প্রায় ৫৪৩ দিন পর পুনরায় ক্লাসে ফিরেছে শিক্ষার্থীরা। রোববার (১২ সেপ্টেম্বর) সর্বোচ্চ স্বাস্থ্যসুরক্ষা নিশ্চিত করেই খুলেছে দেশের প্রাথমিক থেকে উচ্চ মাধ্যমিক পর্যায়ের সব শিক্ষা প্রতিষ্ঠান ৷ স্বাস্থ্যবিধি মেনে শিক্ষার্থীদের সশরীরে শ্রেনী কক্ষে পাঠদানের ব্যবস্থা করেছে প্রতিষ্ঠানগুলো৷ শিক্ষার্থীদের সশরীরে ক্লাস নিতে স্কুল ক্যাম্পাসে প্রবেশের আগেই হাত ধোয়া, মাস্ক পরা সহ স্বাস্থ্যবিধি মেনে চলার বিষয়গুলো তদারকি করতে দেখা যায় স্কুলের শিক্ষকদের ৷

সরেজমিনে রাজধানীর গবর্নমেন্ট ল্যাবরেটরি হাই স্কুল ও কলেজ ঘুরে দেখা যায়, শিক্ষার্থীরা স্কুলে প্রবেশের সময় মাস্ক পরা নিশ্চিত, হাত ধোয়া সহ সামাজিক দূরত্ব মেনে শ্রেনী কক্ষে প্রবেশ করার বিষয়টি সরাসরি শিক্ষকরাই তদারকি করছেন৷ এছাড়া শ্রেনী কক্ষে প্রতি বেঞ্চে একজন করে বসানো হয়েছে৷ ক্লাস শুরুর আগে করোনায় স্বাস্থ্যসুরক্ষা নিয়ে শিক্ষার্থীদের উদ্দেশ্যে বক্তব্য দিচ্ছেন শিক্ষকরা।

স্কুল কর্তৃপক্ষ জানায়, স্কুলে ক্লাসের ক্ষেত্রে সকালে ১৯টি শিফটের ক্লাস ৮টা থেকে ১১টা এবং বিকেলে ১১টি শিফটের ক্লাস ১২টা২০ থেকে ৩টা৪০ পর্যন্ত চলবে। তবে কোনো কক্ষেই বসানো হচ্ছে না ৩০ জনের অধিক শিক্ষার্থী।

গভমেন্ট ল্যাবরেটরী স্কুলের সিনিয়র শিক্ষক আবু নোমান ডেইলি ক্যাম্পাসকে বলেন, সকাল থেকেই শিক্ষার্থীদের স্বাস্থ্যবিধি মানাতে আমরা শিক্ষকরা কাজ করে যাচ্ছি। দুটি গেটে আলাদা করো শিক্ষক প্রতিনিধিরা কাজ করছেন এবং শিক্ষার্থীদের হ্যান্ড স্যানিটাইজার ও হাত দেওয়ার বিষয়টি নিশ্চিত করছেন।

প্রথম দিনেই প্রায় ৯২ শতাংশ শিক্ষার্থী ক্লাসে উপস্থিত হয়েছে জানিয়ে স্কুলের প্রধান শিক্ষক মোঃ আবু সাঈদ ভূঁইয়া ডেইলি ক্যাম্পাসকে বলেন, পূর্ববর্তী সিদ্ধান্ত অনুযায়ী শিক্ষার্থীদের স্বাস্থ্যবিধি নিশ্চিতে আমরা কাজ করছি। শিক্ষার্থীদের শরীরের তাপমাত্রা পরীক্ষা করার পর, হাত ধুয়ে সামাজিক দূরত্ব মেনেই শ্রেণিকক্ষে পৌঁছে দেয়া হচ্ছে। এছাড়াও শিক্ষার্থীরা ক্লাসের মধ্যে যেন সামাজিক দূরত্ব ও স্বাস্থ্যবিধি মেনে চলে সেটি নিশ্চিতে শিক্ষকরাও তদারকি করছেন।


সর্বশেষ সংবাদ