মেয়াদোত্তীর্ণ জনবলেই চলছে জবি

জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়
জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়  © টিডিসি ফটো

জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ে (জবি) গুরুত্বপূর্ণ চার দপ্তরের মেয়াদোত্তীর্ণ আট মাস পরেও সেখানে নতুন কাউকে দেওয়া হয়নি দায়িত্ব। পুরাতনদের মেয়াদ পুনরায় বৃদ্ধির মাধ্যমেই চলছে চারটি দপ্তর।

জানা গেছে, এইসব দপ্তরে পুনরায় নিয়োগ পাওয়ার জন্য সাবেক উপাচার্যের কাছেও অনেকে ধর্না দিচ্ছেন। এদিকে ৪ দাপ্তরিক প্রধানকেই পরবর্তী নির্দেশ না দেয়া পর্যন্ত দায়িত্ব পালনের নির্দেশনা দিয়েছে বর্তমান উপাচার্য। অনেকের ধারনা নতুন উপাচার্য ড. মো. ইমদাদুল হকের নিয়োগের আট মাস পেরিয়ে গেলেও এখনো সাবেক উপাচার্য অধ্যাপক ড. মীজানুর রহমানের ছকেই চলছে বিশ্ববিদ্যালয়।

বিশ্ববিদ্যালয় সূত্রে জানা যায়, বিশ্ববিদ্যালয়ের অর্থ ও হিসাব দপ্তরের পরিচালক একাউন্টিং এন্ড ইনফরমেশন সিস্টেমস বিভাগের সহযোগী অধ্যাপক কাজী মো. নাসির উদ্দীনের নিযুক্তির মেয়াদ গত বছরের ২২জুন শেষ হয়। এরপর নতুন পরিচালক নিযুক্ত না করে আবার সহযোগী অধ্যাপক কাজী মো. নাসির উদ্দীনকে গত বছরের ২৩ জুন পুনরায় অনির্দিষ্ট কালের জন্য অর্থ ও হিসাব দপ্তরের পরিচালক হিসাবে নিযুক্ত করা হয়েছে। তিনি পরবর্তী পরিচালক নিয়োগ না হওয়া পর্যন্ত দায়িত্ব পালন করবেন। বিশ্ববিদ্যালয়ের ট্রেজারার ড. কামালউদ্দিন আহমদের আস্থাভাজন হিসেবে পরিচিত কাজী মো. নাসির উদ্দিনের বিরুদ্ধে ২০১৯ সালে আয়কর প্রদানের বেতন বিবরণী ও ইভিনিং প্রোগ্রামের কাজ দেখিয়ে অতিরিক্ত অর্থ লোপাটের অভিযোগ আছে।

আরও পড়ুন: ধর্ষণের বিচার চাইতে গিয়ে হামলার শিকার, উত্তাল বশেমুরবিপ্রবি 

একই অবস্থা বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রক্টর দপ্তরে। বিশ্ববিদ্যালয়ের ইসলামিক স্টাডিজ বিভাগের সহযোগী অধ্যাপক মোস্তফা কামালের নিযুক্তির মেয়াদ গত বছরের ২৪ জুলাই শেষ হয়। এরপর ২৫ জুলাই এক বিজ্ঞপ্তিতে পুনরাদেশ না দেওয়া পর্যন্ত প্রক্টর পদে দায়িত্ব পালন করতে বলা হয়। প্রক্টর পদে ড. মো. মোস্তফা কামাল সাবেক উপাচার্য ড. মীজানুর রহমানের কাছের লোক। সাবেক উপাচার্যপন্থী হিসেবে পরিচিত নীলদল একাংশের সদ্য সাবেক কমিটির সাধারণ সম্পাদক ছিলেন তিনি। বিশ্ববিদ্যালয়ের পরিবহন পুলের প্রশাসক হিসেবে গত ২০১৭ সালের ২০ জুলাই থেকে দায়িত্ব পালন করে আসছেন প্রানিবিদ্যা বিভাগের সহযোগী অধ্যাপক আব্দুল্লাহ আল মাসুদ। ২০১৯ সালের ২০ জুলাই তার দায়িত্বের মেয়াদ শেষ হলে নতুন কাউকে নিয়োগ না দিয়ে সহযোগী অধ্যাপক আব্দুল্লাহ আল মাসুদকেও পরবর্তী নির্দেশনা না দেওয়া পর্যন্ত পরিবহন প্রশাসকের দায়িত্ব পালন করতে বলা হয়।

গত বছরের ১৪ মার্চ বিশ্ববিদ্যালয়ের জনসংযোগ, তথ্য ও প্রকাশনা দপ্তরের পরিচালক বাংলা বিভাগের অধ্যাপক ড. মিল্টন বিশ্বাসের দায়িত্বের মেয়াদ শেষ হলে ১৫ মার্চ উক্ত পদে দপ্তরের উপ-পরিচালক মো. সাইফুল ইসলামকে পরিচালক পদে দায়িত্ব প্রদান করা হয়। বিশ্ববিদ্যালয়ের নিয়ম অনুযায়ী দপ্তর প্রধান হিসেবে শিক্ষক নিয়োগ দেওয়ার কথা থাকলেও তার পরিবর্তে একজন কর্মকর্তা দিয়ে দপ্তরের কার্যক্রম চালানো হচ্ছে।

এছাড়াও বিশ্ববিদ্যালয়ের আইটি দপ্তরে কম্পিউটার সায়েন্স ইঞ্জিনিয়ারিং বিভাগের অধ্যাপক ড. উজ্জল কুমার আচার্য্য আইটি দপ্তর প্রতিষ্ঠার পর থেকেই পরিচালক হিসেবে দায়িত্ব পালন করে আসছে। সর্বশেষ ২০২০ সালের ২ মার্চ থেকে এই শিক্ষককে আইটি দপ্তরের পরিচালক হিসেবে পুনরায় নিয়োগ দেওয়া হয়েছে। যার মেয়াদ চলতি বছরের আগামী ৩ মার্চ শেষ হবে। আইটি বিষয়ে বিশেষজ্ঞ একাধিক শিক্ষক থাকলেও এই পদে একজনকে দীর্ঘদিন ধরে বহাল রাখায় শিক্ষকদের মধ্যে ক্ষোভের সঞ্চার হচ্ছে।

আরও পড়ুন: ইউক্রেনে আটকে পড়া বাংলাদেশিদের জন্য যোগাযোগের জরুরি নম্বর 

এইদিকে বর্তমানে চলতি দায়িত্বে থাকা পরিচালকরা পুনরায় পূর্ণ মেয়াদে দায়িত্ব পেতে বিভিন্নভাবে লবিং-তদবির চালিয়ে যাচ্ছেন। কেউ যাচ্ছেন সাবেক উপাচার্য এর কাছে আবার কেউ আবার পদ ধরে রাখতে উপাচার্যের পছন্দের লোকের তালিকায় যুক্ত হওয়ার জন্য চালিয়ে যাচ্ছেন নানা চেষ্টা। এ নিয়ে বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক-কর্মকর্তা মহলে ক্ষোভের সঞ্চার হয়েছে। জ্যেষ্ঠ শিক্ষকরা একাধিকবার বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্যের কাছে নতুন পরিচালক নিয়োগের দাবি জানিয়ে আসলেও কোন সাড়া মিলেনি।

জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয় মনোবিজ্ঞান বিভাগের জ্যেষ্ঠ অধ্যাপক এবং বিশ্ববিদ্যালয়ের সিন্ডিকেট সদস্য অধ্যাপক ড. কাজী সাইফুদ্দীন বলেন, কোনো পদেই অতিরিক্ত দায়িত্ব দেয়া উচিৎ না। মেয়াদ শেষ হলেই নতুন কাউকে পূর্ণ মেয়াদে নিয়োগ দিতে হবে। এর ফলে ভিতরে ভিতরে অনেকের মাঝে ক্ষোভের সৃষ্টি হচ্ছে। আবার এসব অতিরিক্ত দায়িত্ব দেয়ায় দৃষ্টান্ত তৈরী হচ্ছে। পরবর্তী যে কেউ দায়িত্বে গেলে মেয়াদ শেষে অতিরিক্ত দায়িত্ব পাওয়ার জন্য বসে থাকবে। তাই এগুলা এখনই বন্ধ করতে হবে।

এ বিষয়ে জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য ড. মো. ইমদাদুল হক বলেন, এই পদগুলোর দায়িত্বের মেয়াদ শেষ হওয়ায় অতিরিক্ত দায়িত্বে দেয়া হয়েছে। যে কোনো সময় রদবদল হবে।


সর্বশেষ সংবাদ

×
  • Application Deadline
  • December 17, 2025
  • Admission Test
  • December 19, 2025
APPLY
NOW!
GRADUATE ADMISSION
SPRING 2026!
NORTH SOUTH UNIVERSITY
Center of Excellence