ইবি চিকিৎসাকেন্দ্রে শিক্ষার্থীদের সকল অসুখের এক ওষুধ প্যারাসিটামল

ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয় চিকিৎসা কেন্দ্র
ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয় চিকিৎসা কেন্দ্র  © ফাইল ফটো

প্যারাসিটামল ওষুধ ছাড়া কোনো ওষুধ থাকে না চিকিৎসাকেন্দ্রে তাই   ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীদের কাছে বিশ্ববিদ্যালয় মেডিকেল মানেই প্যারাসিটামল সেন্টার।  ইবি মেডিকেল সেন্টার সপ্তাহে ৭ দিন ২৪ ঘণ্টা খোলা থাকলেও কাঙ্ক্ষিত সেবা পাচ্ছেন না সাধারণ শিক্ষার্থীরা। অপ্রতুল চিকিৎসক, চিকিৎসক স্টেশনে না থাকা, ওষুধের সংকট, প্রয়োজনীয় পরীক্ষা নিরীক্ষার সুযোগ না থাকা, জরুরি কল করলে কল না ধরা, কল কেটে দেওয়াসহ কর্মকর্তাদের অসৌজন্যমূলক ব্যবহারের মতো নানা সমস্যায় জর্জরিত ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয় মেডিকেল সেন্টার।

১৯৯৫ সালে চালু হয় বিশ্ববিদ্যালয়টির মেডিকেল সেন্টার। এত বছরেও সেবায় পরিবর্তন আনতে পারেনি মেডিকেল সেন্টারটি। ফলে মৌলিক চাহিদা পূরণেই দুর্ভোগের শিকার হচ্ছেন বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রায় ১৫ হাজার শিক্ষার্থী। 

শিক্ষার্থীদের অভিযোগ, নামমাত্র মেডিকেল সার্ভিস দিচ্ছে বিশ্ববিদ্যালয়ের এই চিকিৎসা সেন্টারটি। মাথা ব্যথা, জ্বর, ডায়রিয়ার ওষুধ ছাড়া কোনো ওষুধ থাকে না মেডিকেল সেন্টারে। বিশ্ববিদ্যালয়ে ৮টি আবাসিক হল রয়েছে। এসব হলে ৩ হাজার ৫৯৪ শিক্ষার্থীর আবাসন ব্যবস্থা আছে। বিশ্ববিদ্যালয়ের ১৫ হাজার ৫৭ জন শিক্ষার্থীর মধ্যে মাত্র ২৪ শতাংশের জন্য আবাসনের ব্যবস্থা আছে। আর বাকি ৭৬ শতাংশের জন্য নেই কোনো আবাসনের ব্যবস্থা। বিপুল শিক্ষার্থী ক্যাম্পাসের আশপাশে মেস ও বাসা ভাড়া নিয়ে থাকে। এই ৭৬ শতাংশ শিক্ষার্থীর ই জরুরি প্রয়োজনে বিশ্ববিদ্যালয় থেকে অ্যাম্বুলেন্স সেবা পেতে ভোগান্তি পোহাতে হয়। জরুরি সেবায় রাতে কল করা হলে ঠিকমতো কল ধরেন না। ধরলেও রাতের অজুহাতে গড়িমসি করেন। 

শিক্ষার্থীরা জানান, অসুস্থ হয়ে মেডিকেলে গেলে প্যারাসিটামল, হিস্টাসিন, স্যালাইন ইত্যাদি জাতীয় প্রাথমিক ওষুধ ছাড়া কিছুই পাওয়া যায় না। অন্য ওষুধ কিনতে হয় বাহির থেকে। কয়েকটি ছোট টেস্ট করানোর ব্যবস্থা আছে। তবে বেশির ভাগ টেস্ট এখানে হয় না। টেস্ট করাতে হয় প্রাইভেট হাসপাতাল থেকে। এসব ওষুধ ও টেস্টের ব্যয়ভার বহন করা সাধারণ শিক্ষার্থীদের পক্ষে সম্ভব হয় না। 

জানা যায়, বিশ্ববিদ্যালয় মেডিকেল সেন্টারটিতে পনেরো হাজার শিক্ষার্থীর জন্য ভারপ্রাপ্ত মেডিকেল অফিসারের নেতৃত্বে রয়েছে ১১ জন ডাক্তার, নার্স ১ জন, সহকারী নার্স ২ জন, স্টাফ ৫ জন। 

বিশ্ববিদ্যালয় শাখা ছাত্র মৈত্রী সভাপতি আব্দুর রউফ বলেন, চার দশকে বিশ্ববিদ্যালয়ের মেডিকেলের এ অবস্থার দায় প্রশাসন এড়াতে পারে না। শিক্ষার্থীদের জন্য মেডিকেলকে যুগোপযোগী গড়ে তুলতে হবে। 

এই বিপুলসংখ্যক শিক্ষার্থীদের এত অল্পসংখ্যক চিকিৎসক, নার্স দ্বারা সার্বক্ষণিক চিকিৎসা সেবা প্রদান করা সম্ভাব্য না মনে করেন ভারপ্রাপ্ত প্রধান মেডিকেল অফিসার ডা. নজরুল ইসলাম। এ দিকে সংকট নিরসনে প্রশাসনেরও নেই কোনো উদ্যোগ। 

এ বিষয়ে ডেপুটি চিফ মেডিকেল অফিসার ডা. সিরাজুল ইসলাম বলেন, ‘সাধারণ জ্বরের জন্য নাপাই দেওয়া হয়। পর্যায়ক্রমে অ্যান্টিবায়োটিক দেওয়া হয়। ২০২২ বর্ষের জন্য তেরো লাখ টাকার ওষুধের চাহিদা দেওয়া হয়েছে। কর্তৃপক্ষ আমাদের দশ লাখ টাকার ওষুধ সরবরাহ করেছে। এ ক্ষেত্রে সংকট হয়ে যায়। লোকবল সংকট আছে।’ 

এ বিষয়ে উপাচার্য অধ্যাপক ড. শেখ আবদুস সালাম বলেন, ‘ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে এসব অভিযোগ ১৯৭১ সাল থেকে শুনে আসছি। এসব অভিযোগ সব সময় থাকবে। বড় বড় হাসপাতালেই এসব অভিযোগ আছে। এটা মেডিকেল সেন্টার, পূর্ণাঙ্গ হাসপাতাল না, যে সব সেবা পাবে। ডাক্তারদের বলা আছে যেটা লাগবে, সেটা জানাবেন। আমরা চেষ্টা করছি শিক্ষার্থীদের ভালো সেবা দিতে। আশা করি সমস্যা সমাধান হয়ে যাবে।’  


সর্বশেষ সংবাদ

×
  • Application Deadline
  • December 17, 2025
  • Admission Test
  • December 19, 2025
APPLY
NOW!
GRADUATE ADMISSION
SPRING 2026!
NORTH SOUTH UNIVERSITY
Center of Excellence