কুমিল্লা বিশ্ববিদ্যালয়

মেগা প্রকল্পে ক্যাম্পাস অখন্ড রাখতে এবার আইনি নোটিশ

দ্বিখন্ডিত না করে ক্যাম্পাস সংলগ্ন ভূমি অধিগ্রহণের মাধ্যমে কুমিল্লা বিশ্ববিদ্যালয়কে সম্প্রসারণের জন্য এবার আইনি নোটিশ প্রেরণ করা হয়েছে। বিশ্ববিদ্যালয় সংলগ্ন এলাকাবাসীর অভিযোগের প্রেক্ষিতে এই নোটিশ প্রেরণ করা হয়। বাংলাদেশ সুপ্রিম কোর্টের আইনজীবী এডভোকেট মো. কামাল হোসেন বিশ্ববিদ্যালয় এলাকা সংলগ্ন ১৩ জন বাদীর পক্ষে এ আইনি নোটিশটি প্রেরণ করেন।

আইনি নোটিশে বলা হয়, ২০১৮ সালের ২৩ অক্টোবর জাতীয় অর্থনৈতিক পরিষদের নির্বাহী কমিটির (একনেক) সভায় কুমিল্লা বিশ্ববিদ্যালয়ের জন্য এক হাজার ৬৫৫ কোটি ৫০ লক্ষ টাকার মেঘা প্রকল্পের অনুমোদন দেয়া হয়। এ প্রকল্পের জন্য ব্যয়িত অর্থের অধিকাংশই ভূমি অধিগ্রহণের জন্য ব্যয় হবে। মেঘা প্রকল্পটি হাতে নেয়ার বিষয়টি জানার পর একটি প্রভাবশালী মহল সিন্ডিকেট করে বর্তমান ক্যাম্পাস থেকে প্রায় তিন কিলোমিটার দূরে (ভূমি অধিগ্রহণের জন্য নির্ধারিত এলাকা) জমি কিনে নিয়েছে।

নোটিশটিতে আরো বলা হয়, বিশ্ববিদ্যালয়ের নামে ভূমি অধিগ্রহনে কুমিল্লা সদর উপেজেলার লালমাই মৌজার অর্ন্তভুক্ত ৭, ৯, ১২ ও ১৩ নম্বর সিটের জমি নির্ধারণ করা হয়েছে। এতে বিশ্ববিদ্যালয়টি দ্বিখন্ডিত করার মধ্য দিয়ে প্রভাবশালী এ মহলটি গভীর চক্রান্ত করছে বলে উল্লেখ করা হয় নোটিশটিতে। এছাড়াও নোটিশটিতে বর্তমান ক্যাম্পাস সংলগ্ন এলাকার স্থানীয় বাসিন্দরা যে কোন শর্তে ক্যাম্পাস সম্প্রসারণের জন্য ভূমি দিতে প্রস্তুত বলে উল্লেখ করা হয়।

নোটিশ প্রেরণের তারিখ থেকে ১৫ দিনের মধ্যে নোটিশ দাতাগণের প্রার্থীত দাবির প্রক্ষিতে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণের জন্য বলা হয়েছে। অন্যথায় সুপ্রিম কোর্টের হাইকোর্ট বিভাগে রিট পিটিশন দায়ের করা হবে বলে নোটিশে উল্লেখ করা হয়।

নাম প্রকাশ না করার শর্তে বিশ্ববিদ্যালয়ের এক ছাত্রনেতা বলেন, ‘বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন সুকৌশলে ক্যাম্পাস দ্বিখন্ডিত করার চেষ্টা করছে। বর্তমান ক্যাম্পাস সংলগ্ন যাদের জমি আছে তারা যে কোন শর্তে জমি দিতে প্রস্তুত এবং এ ব্যাপারে তারা হাইকোর্টেও লিখিত দিয়েছে।’

এ বিষয়ে নোটিশদাতা আইনজীবি কামাল হোসেন বলেন, ‘গত ৩০ মে সংশ্লিষ্টদের বরাবর বিশ্ববিদ্যালয়ের জমি সংক্রান্ত আইনি নোটিশ প্রেরণ করি এবং সেখানে নোটিশ প্রাপ্তির ১৫ দিনের মধ্যে ক্যাম্পাস দ্বিখন্ডিত করার কার্যক্রম বন্ধ করার ব্যবস্থা গ্রহণের নির্দেশনা দেওয়া হয়। আশা করি নোটিশ গ্রহিতাগণ এ বিষয়ে কার্যকরি পদক্ষেপ নেবেন।’

এ বিষয়ে কুমিল্লার জেলা প্রশাসক আবুল ফজল মীর বলেন, ‘কোর্ট থেকে লিগ্যাল নোটিশ দেওয়া হয়েছে তার জবাব আমি কোর্টকে দেব। এ বিষয়ে সাংবাদিকের কাছে কোন বক্তব্য দিতে রাজি নই।’

চট্টগ্রাম বিভাগীয় কমিশনার এবং বিশ্ববিদ্যালয়ের সিন্ডিকেট সদস্য মো. আবদুল মান্নান বলেন, ‘লিগ্যাল নোটিশ আমি পাইনি, তাই এ বিষয়ে আমি কিছু জানি না। তবে আমি এটুকু বলতে পারি, যদি বর্তমান ক্যাম্পাস সংলগ্ন পর্যাপ্ত জায়গা থাকে তাহলে দূরে কেন জায়গা নেবে? তাছাড়া এখানে সরকারের কোটি কোটি অর্থ ব্যয় হয়েছে। আমার সুযোগ থাকলে এ বিষয়ে আমি কথা বলবো।’

বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য অধ্যাপক ড. এমরান কবির চৌধুরীকে বেশ কয়েকবার ফোনে যোগাযোগের চেষ্টা করা হলেও তাকে পাওয়া যায়নি। তবে বিশ্ববিদ্যালয়ের রেজিস্ট্রার (অতিরিক্ত দায়িত্ব) অধ্যাপক ড. মো. আবু তাহের বলেন, ‘আমরা লিগ্যাল নোটিশটি পেয়েছি এবং বিশ্ববিদ্যালয়ের আইন উপদেষ্টার পরামর্শ অনুযায়ী তার জবাব দিব।’


সর্বশেষ সংবাদ