নারীর পোশাক নিয়ে কটূক্তিকারী ইবি অধ্যাপকের বিরুদ্ধে অভিযোগ দাখিল
- ইবি প্রতিনিধি
- প্রকাশ: ০১ নভেম্বর ২০২৫, ০৫:৪৬ PM
ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয়ের (ইবি) আল কুরআন অ্যান্ড ইসলামিক স্টাডিজ বিভাগের সভাপতি অধ্যাপক ড. নাছির উদ্দিন মিঝি কর্তৃক সাজিদ আব্দুল্লাহ হত্যার ঘটনার আন্দোলনে অংশ নেওয়া নারী শিক্ষার্থীদের পোশাক নিয়ে কটূক্তির অডিও ভাইরাল হওয়ার পরে তাকে বহিষ্কারের দাবিতে লিখিত অভিযোগ দিয়েছেন শিক্ষার্থীরা।
শনিবার (১ নভেম্বর) দুপুর ১২টার দিকে বিশ্ববিদ্যালয়ের ভারপ্রাপ্ত রেজিস্ট্রার অধ্যাপক ড. মনজুরুল হক বরাবর এ অভিযোগপত্র দেন তারা।
অভিযোগপত্রে শিক্ষার্থীরা বলেন, ‘অধ্যাপক ড. নাছির উদ্দিন বিভাগের মেধাবী শিক্ষার্থী শহীদ সাজিদ আব্দুল্লাহকে উদ্দেশ্য করে কোথাকার কোন মৃত ছেলে- সে তো মইরাই গেছে বলে হেয়প্রতিপন্ন ও ন্যক্কারজনক বক্তৃতা সোশ্যাল মিডিয়ায় ছড়িয়ে পড়েছে। পাশাপাশি হত্যার বিচারের দাবিতে আন্দোলনরত নারী শিক্ষার্থীকে উদ্দেশ্য করে জিন্স পরা, ল্যাংটা মেয়ে এবং মানুষ না, হইওয়ান অর্থাৎ আন্দোলনরত শিক্ষার্থী মানুষ না, নিকৃষ্ট পশু বলে হেয় করতে শোনা গেছে। যা আমাদের তথা বিশ্ববিদ্যালয়ের সব শিক্ষার্থীর জন্য অত্যন্ত অপমানজনক, ঘৃণাসূচক এবং তীব্র নারীবিদ্বেষী মনভবের বহিঃপ্রকাশ। এটি বিশ্ববিদ্যালয়ের নারী শিক্ষার্থীদের মানসিক স্বাস্থের ওপরও অত্যন্ত নেতিবাচক প্রভাব ফেলেছে, যা মানসিক হেনস্তার শামিল। এই বক্তব্য সরাসরি নারীর মৌলিক অধিকার পোশাক ও মতপ্রকাশের স্বাধীনতাকে খর্ব করার প্রচেষ্টা, যা আইনত দণ্ডনীয়।’
শিক্ষার্থীরা আরও বলেন, ‘সাজিদ হত্যার বিচারের দাবীতে করা আন্দোলনকে গালি দিয়ে শাওয়ার আন্দোলন বলেন একই অডিওতে। তিনি আন্দোলনরত শিক্ষার্থীদেরকে উদ্দেশ্য করে বলেন, ওই মেয়ে আল কুরআনের কে? ওর হাতে মাইক দিছে কে? যা সরাসরি বাকস্বাধীনতার বিরুদ্ধাচারণ ও একই সঙ্গে আন্দোলনের মৌলিক অধিকারের ওপর হস্তক্ষেপ করার অভিব্যক্তি।’ ইতোমধ্যেই এই ছড়িয়ে পড়া অডিওটি তার নিজের বলে তিনি স্বীকারোক্তি দিলে তাও বিভিন্ন প্রিন্ট মিডিয়া তে ছাপা হয়।
এ সময় অধ্যাপক ড. নাছির উদ্দিনের বিরুদ্ধে নারী শিক্ষার্থীর প্রতি কটূক্তি, বিদ্বেষপূর্ণ ও হিংস্র মনভাব প্রকাশ; মানসিক হেনস্তা, আন্দোলনের অধিকার খর্ব করার প্রচেষ্টা ও আন্দোলনরত শিক্ষার্থীকে হুমকি এবং শহীদ সাজিদ হত্যার বিচারের দাবিতে করা আন্দোলনকে হেয় করে বিশ্ববিদ্যালয়ের নিরপেক্ষতাকে প্রশ্নবিদ্ধ করার অপচেষ্টার অভিযোগ তুলে তার অত্যন্ত হীন ও জঘন্য আচরণ এবং নারী বিদ্বেষ ছড়ানোর অপরাধ ও অপচেষ্টার দায়ে আগামী ৩০ ঘণ্টার মধ্যে স্বপদ হতে বহিষ্কার করে যথাযথ তদন্ত সাপেক্ষে উপযুক্ত আইনি ব্যবস্থা গ্রহণ করার দাবি জানান তারা।
অভিযোগপত্র গ্রহণ করে ভারপ্রাপ্ত রেজিস্ট্রার অধ্যাপক ড. মনজুরুল হক বলেন, ‘শিক্ষার্থীদের লিখিত অভিযোগ পেয়েছি। আজকে ভাইস চ্যান্সেলর মহোদয় নেই। আমি তাদের পত্রটি নোটিং করে রেখেছি। আগামীকাল ভাইস চ্যান্সেলর মহোদয় এলে উনার সাথে উপস্থাপন করা হবে৷ পরবর্তী সিদ্ধান্ত তিনি নেবেন।’