রাবির হাত-পা ভাঙা এই ছাত্র কি হাতুড়ি মামুন?

ছবিতে গোলচিহ্নিত ব্যক্তির নাম আবদুল্লাহ আল মামুন। ডানের আহত ব্যক্তি ছাত্রলীগ নেতা কানন। মেহেদীর আহত অবস্থার ছবি পাওয়া যায়নি।
ছবিতে গোলচিহ্নিত ব্যক্তির নাম আবদুল্লাহ আল মামুন। ডানের আহত ব্যক্তি ছাত্রলীগ নেতা কানন। মেহেদীর আহত অবস্থার ছবি পাওয়া যায়নি।

রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয় সংলগ্ন লিচু বাগানে রাতের বেলা লিচু পাড়তে গেলে প্রহরীদের হাতে ধরা পড়েন শাখা ছাত্রলীগের ৮ নেতা-কর্মী। এসময় বাগানের প্রহরীরা তাদেরকে বাঁশ-লাঠি দিয়ে মেরে গুরুতর আহত করে করে। এ খবর পেয়ে বিশ্ববিদ্যালয় ক্যাম্পাস থেকে ছাত্রলীগের অন্যান্য নেতা-কর্মীরা গিয়ে তাদের উদ্ধার করে এবং হাসপাতালে ভর্তি করা হয়।

মঙ্গলবার রাত সাড়ে ৯ টার দিকে বিশ্ববিদ্যালয়ের রোকেয়া হলের পেছনের গোদাগাড়ী বাগানে এ ঘটনা ঘটে। পরবর্তীতে ক্ষুব্ধ নেতাকর্মীরা বাগানের ভেতর প্রহরীদের থাকার ঘরে আগুন লাগিয়ে দেয়।

লিচু বাগানের প্রহরীদের হাতে মারধরে শিকার ছাত্রলীগের নেতা-কর্মীদের মধ্যে দুইজন গুরুতর আহত হন। তারা হলেন- বিশ্ববিদ্যালয় ছাত্রলীগের তথ্য ও গবেষণা বিষয়ক সম্পাদক মাহমুদুর রহমান কানন এবং উপ-আন্তর্জাতিক সম্পাদক মেহেদি হাসান।

খোঁজ নিয়ে জানা যায়, কোটা সংস্কার আন্দোলনে অংশ নেওয়ায় রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের (রাবি) ইসলামিক স্টাডিজ বিভাগের মাস্টার্সের ছাত্র তরিকুল ইসলামকে হাতুড়িপেটা করা ছাত্রলীগের সেই নেতা আবদুল্লাহ আল মামুনের সহযোগী ছিলেন আহত মেহেদি হাসান।

গত বছরের ২ জুলাই কোটা সংস্কারের দাবিতে পূর্বঘোষিত শান্তিপূর্ণ আন্দোলন কর্মসূচিতে অংশ নিতে গেলে মেহেদীসহ ছাত্রলীগের কয়েকজন নেতাকর্মীর হামলায় মারাত্মক আহত হন তরিকুল। পরে আশঙ্কাজনক অবস্থায় তাকে রাজশাহী মেডিক্যাল কলেজ (রামেক) হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। হাসপাতালে এক্স-রেসহ বিভিন্ন পরীক্ষা-নিরীক্ষা করে দেখা গেছে, হাতুড়ির আঘাতে তরিকুলের ডান পা ভেঙে গেছে।

এদিকে লিচু বাগানের প্রহরীদের হাতে ছাত্রলীগের নেতা-কর্মীদের মারধরের পর বিভিন্ন গণমাধ্যমে ছড়িয়ে পড়ে, “কোটা সংস্কার আন্দোলনে অংশ নেওয়ায় রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের (রাবি) ইসলামিক স্টাডিজ বিভাগের মাস্টার্সের ছাত্র তরিকুল ইসলামকে হাতুড়িপেটা করা ছাত্রলীগের সেই নেতাকে এবার মারধর করে হাত ও পা ভেঙে দিয়েছে লিচু বাগানের প্রহরীরা।’’ বাস্তবে তরিকুলকে হাতুড়িপেটা করা সেই ছাত্রলীগ নেতার নাম “আব্দুল্লাহ আল মামুন”। তিনি রাবি ছাত্রলীগের সহসম্পাদক এবং সমাজবিজ্ঞান বিভাগের ছাত্র ছিলেন।”

শিক্ষার্থীদের সাথে কথা বলে জানা যায়, রাত সাড়ে ৯টার দিকে কানন ও মেহেদিসহ ছাত্রলীগের আটজন নেতাকর্মী গোদাগাড়ী বাগানে লিচু পাড়তে যান। বাগানটি পাহারার দায়িত্বে থাকা বেশ কয়েকজন প্রহরী তাদেরকে বাধা দেন। কানন ও মেহেদীসহ সবাই ছাত্রলীগের নেতাকর্মী পরিচয় দেওয়ার এক পর্যায়ে তাদের মধ্যে হাতাহাতি শুরু হয়। এতে প্রহরীরা তাদের ওপর ক্ষিপ্ত হয়ে লাঠি-বাঁশ দিয়ে সবাইকে এলোপাথাড়ি মারধর করে। খবর পেয়ে ছাত্রলীগের নেতাকর্মীরা ঘটনাস্থলে রড, স্ট্যাম্পসহ অস্ত্রসস্ত্র নিয়ে উপস্থিত হন। তাদের উপস্থিতি টের পেয়ে মারধরকারীরা পালিয়ে যায়। ওই সময় নেতাকর্মীরা প্রহরীদের থাকার জন্য তৈরি করা মাচার ঘরটিতে আগুন দেয়।

এদিকে, মারধরের শিকার হওয়া ছাত্রলীগের ওই দুই নেতাকে চিকিৎসার জন্য রাজশাহী মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে। মারধরে কাননের দুটি হাতই ভেঙে গেছে এবং মেহেদীর এক পায়ে গুরুতর জখম হয়েছে। এক্সরে করার পর দেখা গেছে মেহেদীর পায়ের হাড় ভেঙে গেছে। তবে মারধরকারীদের পরিচয় পাওয়া যায়নি।

এ ঘটনার সত্যতা স্বীকার করেন ছাত্রলীগের সাধারণ সম্পাদক ফয়সাল আহমেদ রুনু। তিনি বলেন, ‘আমাদের দুইজনকে মারধর করা হয়েছে। আমরা তাদেরকে হাসপাতালে ভর্তি করেছি। তাদের চিকিৎসা চলছে।’


সর্বশেষ সংবাদ