আওয়ামী লীগ নিষিদ্ধে ইবিতে আনন্দ মিছিল

আনন্দ মিছিলে ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীরা
আনন্দ মিছিলে ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীরা  © টিডিসি

গণহত্যাকারী দল হিসেবে আওয়ামী লীগকে নিষিদ্ধ ঘোষণার খবরে আনন্দ মিছিল করেছে ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীরা। শনিবার (১০ মে) রাত ১১টায় অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের উপদেষ্টা অধ্যাপক ড. আসিফ নজরুল উপদেষ্টা পরিষদের বৈঠক শেষে সংবাদ সম্মেলনে এ ঘোষণা দেওয়ার পরপরই বিশ্ববিদ্যালয়ের জিয়া মোড় থেকে শিক্ষার্থীরা আনন্দ মিছিল বের করেন।

মিছিলটি ক্যাম্পাসের বিভিন্ন সড়ক প্রদক্ষিণ করে মেইন গেটে গিয়ে সমাবেশে মিলিত হয়।

মিছিলে উপস্থিত ছিলেন ইসলামী ছাত্র আন্দোলনের সভাপতি ইসমাইল হোসেন রাহাত, খেলাফত ছাত্র মজলিশের সভাপতি সাদেক আহমেদ, শাখা ছাত্রশিবির সভাপতি মাহমুদুল হাসান, ইবি সহ-সমন্বয়ক গোলাম রাব্বানী, ইয়াশিরুল কবীর, সাজ্জাতুল্লাহ শেখ, নাহিদ হাসান, এস এম সুইটসহ কয়েকশো শিক্ষার্থী।

মিছিলে শিক্ষার্থীরা বিভিন্ন স্লোগান দেন, “নারায়ে তাকবির, আল্লাহু আকবার”; “খুনি লীগের বিরুদ্ধে, ডাইরেক্ট অ্যাকশন”; “এই মুহূর্তে খবর এল, আওয়ামী লীগ নিষিদ্ধ হলো”; “যমুনা থেকে খবর এল, আওয়ামী লীগ নিষিদ্ধ হলো”; “পতেঙ্গা না যমুনা, যমুনা যমুনা”; “আবু সাঈদ মুগ্ধ, শেষ হয়নি যুদ্ধ”; “ইনকিলাব জিন্দাবাদ”; “দিল্লি না ঢাকা, ঢাকা ঢাকা”; “লীগ ধর, জেলে ভর”।

সমাবেশে ইসলামী ছাত্র আন্দোলনের সভাপতি ইসমাইল হোসেন রাহাত বলেন, “জুলাই অভ্যুত্থানের পর থেকেই আমাদের প্রথম দাবি ছিল আওয়ামী লীগকে নিষিদ্ধ করা। দীর্ঘ সময় অপেক্ষার পর অবশেষে আমাদের সেই দাবি পূরণ হয়েছে। এখন বিচারিক প্রক্রিয়া শেষে দ্রুত আওয়ামী লীগকে সর্বাত্মকভাবে নিষিদ্ধ করতে হবে। শহীদ আবু সাইদ, মুগ্ধ, ওয়াসিম, ওসামার এই বাংলায় আমরা আর কোনো কালো হাত সহ্য করব না। আমাদের ভাইদের রক্তের বদলা এই অন্তর্বর্তীকালীন সরকারকে নিতে হবে।”

শিবির সভাপতি মাহমুদুল হাসান বলেন, “এই আওয়ামী লীগ সরকার ক্ষমতায় আসার পর ভারতের তাঁবেদারি করতে গিয়ে আমার সেনাবাহিনীর ভাইদের হত্যা করেছে। দেশের সাহসী নেতাদের মিথ্যা মামলায় ফাঁসিয়ে হত্যা করেছে। গুম-খুনের রাজনীতি করেছে। শাপলা চত্বরে নির্বিচারে গুলি চালিয়ে আমার ভাইদের হত্যা করেছে। যারা ভারতীয় আধিপত্যবাদের বিরুদ্ধে এবং আওয়ামী দুঃশাসনের বিরুদ্ধে কথা বলেছে, তাদের কখনোই সহ্য করেনি। আওয়ামী সন্ত্রাসীদের বিচার না হওয়া পর্যন্ত আমরা ঘরে ফিরব না।”

ইবি সমন্বয়ক এস এম সুইট বলেন, “জুলাই অভ্যুত্থানের ৯ মাস পর আরও একটি বিষয় স্পষ্ট হয়েছে—বাংলাদেশের মানুষ যা বলবে, সরকার তা করতে বাধ্য। আগামী বাংলাদেশের পথ নির্ধারণ করবে এ দেশের ছাত্র-জনতা। আমরা বলতে চাই, যারা এই আন্দোলনে ছিলেন না, রাজনৈতিকভাবে মানুষ ভুল করতেই পারে—আমরা সে ভুল ক্ষমা করতে চাই। তবে ভবিষ্যতে যদি আপনারাও সেই ভুল করেন, আপনাদেরও আওয়ামী লীগের মতো পরিণতি হবে। জুলাইয়ের ঘোষণাপত্র না পাওয়া পর্যন্ত বিপ্লবীদের জীবন নিরাপত্তাহীনতায় থাকবে। ঘোষণাপত্র দিতে ৩১ কার্যদিবস সময় দিলেও, প্রয়োজনে আমরা আরও আগেই রাজপথে নামব।”


সর্বশেষ সংবাদ