পুরান ঢাকার ফুটপাতে জমজমাট শীতের কাপড়ের বাজার

ফুটপাতে জমজমাট পোশাক বিক্রির ভ্রাম্যমাণ দোকান
ফুটপাতে জমজমাট পোশাক বিক্রির ভ্রাম্যমাণ দোকান  © টিডিসি ফটো

শীতের প্রকোপ বেড়ে যাওয়ায় পুরান ঢাকার লক্ষ্মীবাজার কবি নজরুল কলেজ ও জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয় এলাকায় ফুটপাতগুলোতে ফুটপাতে বসেছে স্বল্পমূল্যে শীতকালীন পোশাক বিক্রির জমজমাট ভ্রাম্যমাণ দোকান। দোকানিদের হাক-ডাকে জম উঠেছে ফুটপাতের ভ্রাম্যমাণ দোকানগুলো।

এসব দোকানে বিকেল থেকে মধ্যরাত পর্যন্ত চলে বেঁচাকেনা। সাধারণত স্বল্প আয়ের মানুষদেরই পোশাক ক্রয় করতে দেখা যায় এই দোকানগুলোতে। তাদের মতে শপিংমলের থেকে স্বল্পমূল্যে ভালো মানেরই শীত বস্ত্র  পাওয়া যায় এখানে।

পৌষের শুরুর সাথে সাথেই শীত জেঁকে বসেছে পুরান ঢাকায়। উত্তরবঙ্গের মতো হিম শীতল ঠান্ডা এখানে না থাকলেও, গায়ে চাঁদর বা সোয়েটার জড়ানোর মতো শীত পরেছে। সন্ধ্যার পর থেকে সকাল পর্যন্ত তাপমাত্রা কমই থাকে এখানে। শীতের হাত থেকে নিজেদের রক্ষা করতে স্বল্প আয়ের মানুষেরা শীতকালীন বস্ত্র ক্রয় করে ফুটপাতের এসব দোকান থেকে।

দোকানগুলোতে  হুডি, মোটা গেঞ্জি, জ্যাকেট, সুয়েটার, মেয়েদের কার্ডিগান, শর্ট কোর্ট, বেলবেড জ্যাকেট , ডেনিম শার্ট, বাচ্চাদের শীতের জামা, কানটুপি, মাফলার, মোজাসহ বিভিন্ন ধরনের শীতবস্ত্র নিয়ে বসেছেন ফুটপাতে। সকল বয়সের মানুষের শীত বস্ত্র পাওয়া যায় এসব দোকানে। হকারদের হাঁকডাকে বিক্রি হচ্ছে ফুটপাতের এসব শীত বস্ত্র। 

ফুটপাতের বিভিন্ন দোকানের শীতবস্ত্রের দাম যাচাই করে দেখা যায়, হুডি ২৫০-৫০০ টাকা, মোটা গেঞ্জি ১৫০-২৫০ টাকা, মেয়েদের কার্ডিগান ৩০০-৮০০ টাকা, সুয়েটার ২০০-৩০০ টাকা, মোটা জ্যাকেট ৫০০-৭০০ টাকা, ডেনিম শার্ট ২০০-৩০০ টাকা, কানটুপি ৬০-২০০ টাকা, মাঙ্কি টুপি ৬০ টাকা, জ্যাকেট ৫০০-৬০০ টাকা, শর্ট কোর্ট ৪০০-৭০০ টাকা, ছোটদের শীতের পোশাক ১০০-৩০০ টাকা, মোজা ২০-৬০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে।

ফুটপাতে শীত বস্ত্র কেনার সময় ফাতেমা খাতুন নামে এক ক্রেতা বলেন, স্বল্পমূল্যে শীতকালীন পোশাক পাওয়া যায় এবং দরদাম করে পছন্দের পোশাক নিতে পারি তাই এখান থেকেই ক্রয় করি। তবে অনেক সময় ফুটপাতের দোকানিরাও অতিরিক্ত দাম চায় ।

কথা হয় আরেক ক্রেতা জয়নাল হকের সাথে। তিনি বলেন, ‘আমরা গরীব মানুষ। দিন আনি দিন খাই। অত টাকা দিয়া বড় দোকান থেকে কিনার ক্ষমতা আমাদের নাই। এখান থেকেই অনেক ভালো সোয়েটার কিনতে পারি। প্রতিবার আমি এখান থেকেই  শীতের পোশাক কিনি। আমাদের শীত কাটানোর ভরসাই এই দোকানগুলো।’ 

লক্ষ্মীবাজারের ফুটপাতের খুচরা বিক্রেতা মো. লিটন বলেন, ‘শীতের প্রকোপ বাড়ার সাথে সাথে বেচাকেনা ও বাড়বে। শীত তেমন না পড়লে ক্রেতা পাওয়া যায় না। আমরা সবধরনের শীতকালীন পোশাক বিক্রি করি। স্বল্প আয়ের মানুষেরাই বেশি এসব বস্ত্র ক্রয় করে। এছাড়াও কবি নজরুল, জগন্নাথের শিক্ষার্থীরাও এসব বস্ত্র ক্রয় করে’। 

ফুটপাতের আরেক খুচরা বিক্রেতা রমিজ মিয়া বলেন, ‘এখনো তেমন বেচাকেনা শুরু হয়নি। গত বছরের মতো লাভ এখনও হয় নাই। আশা করি শীত বাড়লে বিক্রিও বাড়বে। আমাদের তো এই শীত মৌসুমে বিক্রি করে লাভ। আমরা চেষ্টা করি কম দামে ভালো মানের শীত বস্ত্র বিক্রি করার’।


সর্বশেষ সংবাদ