নেকাব না খোলায় পরীক্ষা দিতে পারেননি ছাত্রী, সেই কলেজ অধ্যক্ষকে ওএসডি

  © সংগৃহীত

নেকাব না খোলায় ছাত্রীকে পরীক্ষা দিতে না দেওয়া খাগড়াছড়ির মাটিরাঙা সরকারি ডিগ্রি কলেজের সেই অধ্যক্ষ প্রফেসর মো. কামাল হোসেন মজুমদারকে মাধ্যমিক ও উচ্চশিক্ষা অধিদপ্তরের (মাউশি) বিশেষ ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওএসডি) করা হয়েছে। আজ বৃহস্পতিবার (১৯ ডিসেম্বর) শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের এক প্রজ্ঞাপনে এ তথ্য নিশ্চিত করা হয়।

এর আগে গত শুক্রবার (১৩ ডিসেম্বর) বিকেলে কলেজ কেন্দ্রে বাউবির সমাজতত্ত্ব পরীক্ষার দিন উম্মে আনজুমানয়া নামে এক ছাত্রী নেকাব না খোলায় পরীক্ষা দিতে পারেননি বলে জানায়। এ ঘটনায় মাটিরাঙা সরকারি ডিগ্রি কলেজের অধ্যক্ষ ও পরীক্ষার কেন্দ্র সচিব কামাল হোসেন মজুমদারকে দায়ী করেছেন ওই শিক্ষার্থী।

ফেসবুকের এক পোস্টে তিনি বলেন, শুক্রবার বেলা ২টার দিকে পরীক্ষা শুরুর কিছুক্ষণের মধ্যেই কলেজের শিক্ষকরা আমার নেকাব খুলে মুখ দেখানোর জন্য বলেন। একজন নারী শিক্ষক বা নারী শিক্ষার্থীর সামনে নেকাব খোলার ইচ্ছে পোষণ করে শিক্ষকদের অনুরোধ করি। কিন্তু শিক্ষকরা আমার অনুরোধে সায় দেয়নি। বরং আমাকে হেনস্তা করার চেষ্টা করছিল। এ সময় হলের অন্য শিক্ষার্থীরা আমার পরিচয় নিশ্চিত করে। তারপরও অধ্যক্ষ এসে আমাকে নেকাব খোলার জন্য বলেন। আমি রাজি না হওয়ায় আমার পরীক্ষার খাতা নিয়ে নেয় এবং বহিষ্কার করা হবে হুমকি দেন অধ্যক্ষ। পুলিশ ডেকে আমাকে পরীক্ষার হল থেকে বের করে দেয়। পরে আমি পুলিশের হেল্প লাইন ৯৯৯-এ ফোন করি। এর পর মাটিরাঙা থানা থেকে পুলিশ আসে।

তিনি আরও বলেন, পুলিশ ৩টা ৫৫ মিনিটের দিকে আমার পরীক্ষা কেন্দ্রে আসে। তখনো ১ ঘণ্টার বেশি পরীক্ষার সময় ছিল। এ সময় অধ্যক্ষ পুলিশ নিয়ে তার কক্ষে চলে যায়। পরীক্ষা শেষ হওয়ার ১০ থেকে ২০ মিনিট আগে অধ্যক্ষ তার রুম থেকে বের হয়ে মহিলা পুলিশ দিয়ে আমার পরিচয় নিশ্চিত করেন। ততক্ষণে আমার পরীক্ষার সময় শেষ।

ওই শিক্ষার্থী বলেন, আমি কোনো অসদুপায় অবলম্বন করি নাই, খারাপ ব্যবহারও করিনি। তারপরও আমার সাথে অন্যায় হয়েছে। আমি পরীক্ষা দিতে পারি নাই। আমি এর প্রতিকার চাই।

পরদিন শনিবার (১৪ ডিসেম্বর) এ ঘটনার প্রতিবাদ জানিয়ে পার্বত্য নারী সংহতির আহ্বায়ক শাহেনা আক্তার ও সদস্য সচিব তানজিলা সুলতানা রুমার সই করা বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়, শিক্ষার্থীর প্রতি অমানবিক ও বৈষম্যমূলক আচরণের জন্য দায়ী ব্যক্তির বিরুদ্ধে শাস্তিমূলক ব্যবস্থা নিতে হবে। ঘটনার সুষ্ঠু তদন্ত করতে হবে। ভুক্তভোগী শিক্ষার্থীর পুনরায় পরীক্ষার দেওয়ার সুযোগ নিশ্চিত করার পাশাপাশি সুবিচার করতে হবে।


সর্বশেষ সংবাদ