কুবির ক্যাফেটেরিয়ার খাবারের মান নিয়ে উপাচার্যের অসন্তোষ

কুবির ক্যাফেটেরিয়ায় খাবারের মান নিয়ে অসন্তোষ প্রকাশ করেন উপাচার্য অধ্যাপক
কুবির ক্যাফেটেরিয়ায় খাবারের মান নিয়ে অসন্তোষ প্রকাশ করেন উপাচার্য অধ্যাপক  © টিডিসি

কুমিল্লা বিশ্ববিদ্যালয়ের (কুবি) ক্যাফেটেরিয়ায় খাবারের মান নিয়ে অসন্তোষ প্রকাশ করেছেন উপাচার্য অধ্যাপক ড. মো. হায়দার আলী। বুধবার (৬ অক্টোবর) সকালে কোনো পূর্বঘোষণা ছাড়াই ক্যাফেটেরিয়ায় নাস্তা করতে এসে তিনি এ অসন্তোষ প্রকাশ করেন।

এ সময় ক্যাফেটেরিয়ার পরিচালক মান্নু মজুমদারের উদ্দেশে বলেন, ‘হুট করে আমি দুপুর বা রাতে খেতে আসব, এটাই স্বাভাবিক। এক মাস সময় দিয়েও খাবারের মানের কোনো উন্নতি নেই। এখন মনে হচ্ছে আপনার বিদায়ের ঘণ্টা বেজে গেছে।’

এ সময় উপাচার্যের সঙ্গে উপস্থিত ছিলেন বিশ্ববিদ্যালয়ের কোষাধ্যক্ষ অধ্যাপক ড. মোহাম্মদ সোলাইমান ও প্রক্টর অধ্যাপক ড. মো. আবদুল হাকিম। 

এদিকে দীর্ঘদিন ধরে বিশ্ববিদ্যালয়ের কেন্দ্রীয় ক্যাফেটেরিয়া পরিচালনার দায়িত্বে আছেন মান্নু মজুমদার। বিভিন্ন সময়ে শিক্ষক-শিক্ষার্থীরা ক্যাফেটেরিয়া পরিচালনায় নিয়ম-শৃঙ্খলার অভিযোগ করে আসছেন। এ ছাড়া পচাবাসি খাবার পরিবেশন, পোকা খাওয়া সবজি, খাবারে পোকামাকড়, খাবারের প্লেটের অপরিচ্ছন্নতা এবং নোংরা-পুরাতন বোতলে পানি সরবরাহ করার অভিযোগ রয়েছে তার বিরুদ্ধে৷ 

পরে শিক্ষার্থীদের অভিযোগের পরিপ্রেক্ষিতে খাবারের মান নিশ্চিত করতে কড়াকড়ি আরোপ করেন উপাচার্য। এ ছাড়া এক মাসের সময়সীমা বেঁধে দিয়েছিলেন তিনি।

আরও পড়ুন: কুবিতে মারধরের ঘটনায় দুই ছাত্রকে হল ছাড়ার নির্দেশ প্রক্টরের

তবে আকস্মিক ক্যাফেটেরিয়ায় খাবারের মান পরিদর্শন করতে উপাচার্য, কোষাধ্যক্ষ ও প্রক্টরের মধ্যে অসন্তুষ্টি দেখা দেয়। এ সময় উপাচার্য ক্যাফেটেরিয়া পরিচালককে উদ্দেশ্য করে সন্তোষজনক খাবার পরিবেশন করতে না পারলে বিদায়ের প্রস্তুতি নেওয়ার কথা বলেন।

এ বিষয়ে কোষাধ্যক্ষ অধ্যাপক ড. মোহাম্মদ সোলাইমান বলেন, ‘প্রশাসনের দায়িত্ব পাওয়ার পর উপাচার্যের নির্দেশে ক্যাফেটেরিয়ার দিকে নজর দিয়েছি। ক্যাফেটেরিয়া ম্যানেজারের সঙ্গে অফিসিয়ালি কথা বলেছি এবং খাবারের মান ও পরিষ্কার-পরিচ্ছন্নতার নির্দেশনা দিয়েছি। এ ছাড়া শিক্ষার্থীদের মতামত  সংগ্রহ করেছি এবং প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ গ্রহণের জন্য উপাচার্য নির্দেশনা প্রদান করেছেন।’

প্রক্টর অধ্যাপক ড. মো. আবদুল হাকিম বলেন, ‘ছাত্ররা যেটা চায় আমরা সেটাই মেনে নেব। আজকের পরিদর্শনে পর আমরা সিদ্ধান্ত নিয়েছি অন্যদিকে দেখবো এবং তাকে পরিবর্তনের জন্য আরো এক সপ্তাহ সময় দেওয়া হয়েছে।’

আরও পড়ুন: কুবিতে পাবলিক স্পিকিং প্রতিযোগিতার আয়োজন ইএলডিসি’র

খাবারের মানের পরিবর্তনের আশ্বাস দিয়ে মান্নু মজুমদার বলেন, ‘স্যারের নির্দেশনা অনুযায়ী আমি সব কিছু পরিচালন করার চেষ্টা করবো। খাবারের মানের ব্যাপারে আমি সর্বোচ্চ চেষ্টা করব এবং শিক্ষার্থীদের সহযোগিতা কামনা করছি। তারা যদি আমাকে সমস্যাগুলো চিহ্নিত করে দেয়, তাহলে আমি সেটা সমাধানের ব্যবস্থা নেব।’

নিম্নমানের খাবার পরিবেশ নিয়ে বাংলা বিভাগের ১৫তম আবর্তনের শিক্ষার্থী আতিক হাসান অন্তর বলেন, ‘বিশ্ববিদ্যালয়ের কেন্দ্রীয় ক্যাফেটেরিয়ায় দীর্ঘদিন ধরে অপরিচ্ছন্ন ও অস্বাস্থ্যকর খাবার পরিবেশন করা হচ্ছে, যা মোটেই কাম্য নয়। অনেক শিক্ষার্থী খাবার খেয়ে অসুস্থ হয়েছে এবং পরিষ্কার ও স্বাস্থ্যসম্মত পরিবেশের দাবি জানিয়ে আসছে। আমরা চাই ক্যাফেটেরিয়ার দায়িত্বে নতুন কাউকে আনা হোক এবং খাবারের মান উন্নত ও সুলভ মূল্য নিশ্চিত করা হোক।’


সর্বশেষ সংবাদ