জবি কোষাধ্যক্ষ পদে আলোচনায় তিন শিক্ষক

মার্কেটিং বিভাগের শিক্ষক অধ্যাপক ড. ইমরানুল হক, ড. শেখ রফিকুল ইসলাম ও ফিন্যান্স বিভাগের শিক্ষক অধ্যাপক ড. মুহাম্মদ মঞ্জুর মুর্শেদ ভূঁইয়া
মার্কেটিং বিভাগের শিক্ষক অধ্যাপক ড. ইমরানুল হক, ড. শেখ রফিকুল ইসলাম ও ফিন্যান্স বিভাগের শিক্ষক অধ্যাপক ড. মুহাম্মদ মঞ্জুর মুর্শেদ ভূঁইয়া  © সংগৃহীত

ছাত্র-জনতার অভ্যুত্থানে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার পদত্যাগের পর আওয়ামী লীগ সরকারের পতন হয়েছে। এরপরই সারাদেশে বিভিন্ন পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য, উপ-উপাচার্য ও প্রক্টর থেকে শুরু করে প্রশাসনের দায়িত্বে থাকা অনেকেই পদত্যাগ করছেন।

গত ১৩ আগস্ট  জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ের (জবি) উপাচার্য, প্রক্টর,সহকারী প্রক্টর ও হল প্রভোস্টসহ অনেকেই পদত্যাগ করেছেন। এরপর বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রশাসনের অনুপস্থিতিতে দীর্ঘ একমাস ধরে গুরুত্বপূর্ণ কাজসহ প্রশাসন নিয়ন্ত্রণ করেন বিশ্ববিদ্যালয়ের সদ্য সাবেক ট্রেজারার অধ্যাপক ড. হুমায়ুন কবির চৌধুরী।

১৮ সেপ্টেম্বর সমাজকর্ম বিভাগের অধ্যাপক রেজাউল করিমকে বিশ্ববিদ্যালয়ের সপ্তম উপাচার্য হিসেবে নিয়োগ দেয়া হয়। চারদিন পর ২২ সেপ্টেম্বর ব্যক্তিগত ও পারিবারিক কারণ দেখিয়ে স্বেচ্ছায় পদত্যাগ করেন ট্রেজারার অধ্যাপক ড. হুমায়ুন কবির চৌধুরী। পদত্যাগের কারণে বিশ্ববিদ্যালয়ের এই প্রশাসনিক পদটি শূন্য হয়ে পড়েছে। ট্রেজারার বিশ্ববিদ্যালয়ের সাথে সংশ্লিষ্ট আর্থিক খাতের দিকগুলোর দায়িত্ব পালন করেন। শূন্য পদে শিক্ষার্থীরা বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থী বান্ধব ও সৎ, নিরপেক্ষ এবং অভিজ্ঞতা সম্পন্ন শিক্ষককে প্রত্যাশা করছেন। 

সেক্ষেত্রে নিজ বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষকদেরই তাঁদের প্রথম পছন্দ। শিক্ষার্থীদের অধিকার আদায়ে কাজ করবে, জবাবদিহিতা, স্বচ্ছতা বজায় রাখবে এমন যোগ্য শিক্ষককে ট্রেজারার হিসেবে দেখতে চায় তারা। ট্রেজারারের পদে নিয়োগের আলোচনায় রয়েছেন জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ের বাণিজ্য অনুষদের তিনজন অধ্যাপক। 

আলোচিত অধ্যাপকেরা হলেন, মার্কেটিং বিভাগের শিক্ষক অধ্যাপক ড. ইমরানুল হক, ড. শেখ রফিকুল ইসলাম ও ফিন্যান্স বিভাগের শিক্ষক অধ্যাপক ড. মুহাম্মদ মঞ্জুর মুর্শেদ ভূঁইয়া।

ট্রেজারার পদে আলোচনার শীর্ষে রয়েছেন প্রফেসর ড. ইমরানুল হক। তিনি ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের মার্কেটিং বিভাগ থেকে প্রথম শ্রেণীতে স্নাতক ও স্নাতকোত্তর শেষ করেন। ২০০৭ সালে জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ে মার্কেটিং বিভাগে লেকচারার হিসেবে যোগদান করেন। তিনি জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ে প্রথম শিক্ষক হিসেবে নিয়োগ পান। 

এছাড়াও তিনি ডেনমার্কের অলবর্গ বিশ্ববিদ্যালয় থেকে ইনোভেশন ম্যানেজমেন্ট এন্ড এন্টারপ্রেনরশিপ-এ এম.এস ডিগ্রি সম্পন্ন করেন। পরবর্তীতে ডেনমার্কের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের অর্থায়নে ডানিডা স্কলারশিপ নিয়ে অলবর্গ বিশ্ববিদ্যালয় থেকে ২০২০ সালে ইন্টারন্যাশনাল বিজনেস ম্যানেজমেন্ট-এ পি.এইচ.ডি ডিগ্রি এবং একই বিশ্ববিদ্যালয়ের সিলেকশন বোর্ডের মেম্বারশিপ লাভ করেন।

আরও পড়ুন: কেমন উপাচার্য চায় খুবি শিক্ষার্থীরা

ড. ইমরানুল হক ওয়ার্ল্ড ব্যাংক ও ডেনমার্ক সরকারের অর্থায়নে ২ টি আন্তর্জাতিক গবেষণা প্রকল্পে রিসার্চ ফেলো হিসেবে কাজ করেছেন। এছাড়াও বিশ্ববিদ্যালয়ের দায়িত্বের পাশাপাশি তিনি অলবর্গ বিশ্ববিদ্যালয়ের সাস্টেইনেবিলিটি ল্যাবে গবেষক হিসেবেও কাজ করছেন। বিভিন্ন আন্তর্জাতিক গবেষণা জার্নালে তার ৫০ এর অধিক গবেষণা প্রকাশিত হয়েছে। এছাড়াও তিনি ইউরোপিয়ান ইন্টারন্যাশনাল বিজনেস একাডেমি কনফারেন্স সহ বিভিন্ন জাতীয় ও আন্তর্জাতিক কনফারেন্সে গবেষণা নিবন্ধ পরিবেশন করেন।

তিনি এমবিএ ও বিবিএ ভর্তি কমিটির চেয়ারম্যান হিসেবে দায়িত্ব পালনের পাশাপাশি  এবং মার্কেটিং বিভাগের এমবিএ (প্রফেশনাল কোর্স) ডিরেক্টর হিসেবে দায়িত্ব পালন করেছেন। ড. ইমরানুল হক বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক হিসেবে জুলাই বিপ্লব, ২০২৪-এ ছাত্র-জনতার অভ্যুত্থানে বলিষ্ঠ ভূমিকা রেখেছেন।

আলোচনায় থাকা আরেক শিক্ষক হলেন, মার্কেটিং বিভাগের অধ্যাপক ড. শেখ রফিকুল ইসলাম। তিনি ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় থেকে এম কম ও বি কম পাস করেন। ২০০৫ সালে ইউনিভার্সিটি অব সাউদার্ন কুইন্সল্যান্ড, অস্ট্রেলিয়া বিশ্ববিদ্যালয় থেকে এমবিএ ডিগ্রি লাভ করেন। তিনি ২০১৯ সালে ইউনিভার্সিটি অফ উতরা মালয়েশিয়া থেকে পিএইচডি ডিগ্রি সম্পন্ন করেন।.

২০০০ সালে কুইন্স ইউনিভার্সিটিতে লেকচারার পদে যোগদানের মধ্যে দিয়ে শিক্ষকতা জীবন শুরু হয়। জীবনে দেশি বিদেশি বিভিন্ন বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষকতার পাশাপাশি বিভিন্ন আন্তর্জাতিক জার্নালেও তার লেখা প্রকাশিত হয়। তার প্রকাশিত প্রবন্ধের সংখ্যা ২০টি।

জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ে ২০০৮ সালে সহযোগী অধ্যাপক হিসেবে যোগদানের পর বিভাগের বিভিন্ন দায়িত্ব পালন করেন। তিনি জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ের মার্কেটিং বিভাগের চেয়ারম্যান ছিলেন এবং এমবিএ (প্রফেশনাল কোর্স) ডিরেক্টর ছিলেন। ফাউন্ডিং ডিরেক্টর হিসেবে দায়িত্ব পালন করেন। বিশ্ববিদ্যালয়ের সাদা দলের সদস্য ও কোষাধ্যক্ষ পদে দায়িত্ব পালন করছেন।

ট্রেজারার পদে আলোচনায় থাকা আরেক শিক্ষক হলেন, ফিন্যান্স বিভাগের সিনিয়র অধ্যাপক ড. মুহাম্মদ মঞ্জুর মুর্শেদ ভূঁইয়া। তিনি ২০০১ সালে চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ে ফিন্যান্স এন্ড ব্যাংকিং বিভাগে লেকচারার পদে যোগদানের মধ্যে দিয়ে শিক্ষকতা জীবন শুরু করেন। তারপর ২০০৭ সালে জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ে ফিন্যান্স বিভাগে সহকারী অধ্যাপক হিসাবে যোগ দান করেন। ২০০৮-২০১০ সালে বিভাগে চেয়ারম্যান হিসেবে দায়িত্ব পালন করেন।

আরও পড়ুন: ভারতে নবীকে নিয়ে কটূক্তির প্রতিবাদে হাবিপ্রবিতে বিক্ষোভ মিছিল

২০১৩-২০১৯ সাল পর্যন্ত অস্ট্রেলিয়ার ইউনিভার্সিটি অব সাউদার্ন কুইন্সল্যান্ড, অস্ট্রেলিয়ার ক্যাথলিক ইউনিভার্সিটি ও অস্ট্রেলিয়ার ওলংগং বিশ্ববিদ্যালয়ে শিক্ষকতা করেছেন। তিনি ইন্টারন্যাশনাল ইউনিভার্সিটি অব জাপানে ই বিজনেস ম্যানেজমেন্টে মাস্টার্স করেন। দেশি বিদেশি কয়েকটি বিখ্যাত জার্নালেও তার লেখা প্রকাশিত হয়েছে।
অধ্যাপক ড. মুহাম্মদ মঞ্জুর মুর্শেদ ভূঁইয়ার দেশ ও আন্তর্জাতিক জার্নালে প্রকাশিত ৩০ টি প্রবন্ধ রয়েছে। এছাড়া 'Sustainable Banking and Sustainable Finance' নামে প্রকাশিত আন্তর্জাতিক মানের বই রচনা করেছেন।

২০১৭ সালে ফিন্যান্স বিভাগে প্রফেসর পদে পদোন্নতি পান। প্রফেসর হওয়ার পর ২য় মেয়াদে বিভাগের চেয়ারম্যানের দায়িত্ব পালন করেন। তিনি বর্তমানে বাণিজ্য অনুষদের ডিন ও জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ের সিন্ডিকেট সভার সদস্য। একই সাথে তিনি জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ের ফিন্যান্স কমিটির সদস্য এবং বিশ্ববিদ্যালয়ের পরিকল্পনা, উন্নয়ন ও ওয়ার্কাস অফিসে এক্সপার্ট হিসেবে হিসেবে কাজ করছেন। বিশ্ববিদ্যালয়ের সাদা দলের সহ-সভাপতি হিসেবে দায়িত্ব পালন করছেন।

অধ্যাপক মঞ্জুর মুর্শেদ তার শিক্ষা জীবন কৃতিত্বের সাথে সম্পন্ন করেন। ঢাকা বোর্ড থেকে মাধ্যমিক ও উচ্চ মাধ্যমিক শেষ করে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় থেকে স্নাতক ও স্নাতকোত্তর সম্পন্ন করেন।


সর্বশেষ সংবাদ

×
  • Application Deadline
  • December 17, 2025
  • Admission Test
  • December 19, 2025
APPLY
NOW!
GRADUATE ADMISSION
SPRING 2026!
NORTH SOUTH UNIVERSITY
Center of Excellence