এক মাস যাবত খালি উপাচার্য-প্রক্টরসহ ২২ পদ, অভিভাবকহীন ববি

বরিশাল বিশ্ববিদ্যালয় (ববি)
বরিশাল বিশ্ববিদ্যালয় (ববি)  © ফাইল ফটো

বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনে শেখ হাসিনা সরকারের পতনের পর শিক্ষার্থীদের তোপের মুখে গত ২০ আগস্ট পদত্যাগ করেন বরিশাল বিশ্ববিদ্যালয়ের (ববি) সাবেক উপাচার্য অধ্যাপক ড. মোহাম্মদ বদরুজ্জামান ভূঁইয়া। একই সময়ে পদত্যাগ করেন বিশ্ববিদ্যালয়টির প্রক্টর। 

এরপর হিড়িক লেগে যায় পদত্যাগের, একে একে পদত্যাগ করেন প্রক্টরিয়াল বডি, ছাত্র-শিক্ষক কেন্দ্রের পরিচালক, টিএসসি পরিচালক, চারটি হলের প্রাধ্যক্ষ এবং লাইব্রেরিয়ানসহ মোট ১৯জন। এর আগে থেকেই ফাঁকা ছিল উপ-উপাচার্য ও ট্রেজারার পদ। প্রশাসনের গুরুত্বপূর্ণ এ পদগুলো থেকে পদত্যাগের এক মাস পেরোলেও এখনও নিয়মিত বা পুর্নাঙ্গ কোনো উপাচার্য নিয়োগ করা হয়নি। 

এদিকে নিয়ম অনুযায়ী উপাচার্য ছাড়া শূন্য পদে নিয়োগও দিতে পারবেন না প্রশাসনিক ও আর্থিক দায়িত্বে থাকা অধ্যাপক। ফলে বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রশাসনিক ও একাডেমিক গুরুত্বপূর্ণ কাজে জটিলতা ও একটি বড় শূন্যতা তৈরি হয়েছে। এছাড়াও প্রশাসনিক বড় বড় সিদ্ধান্তে জটিলতা তৈরি হয়েছে বলে জানান সংশ্লিষ্টরা।

জরুরি ভিত্তিতে প্রশাসনিক এবং আর্থিক বিষয়ে দায়িত্বপ্রাপ্ত অধ্যাপক ড. মুহসিন উদ্দীন বলেন, উপাচার্য না থাকলে অনেক ক্ষেত্রেই সমস্যা হয়। অনেক দপ্তরের কাজ ধীরগতি হয়ে গেছে। গুরুত্বপূর্ণ একাডেমিক ও প্রশাসনিক বিষয়ে সিদ্ধান্ত নেওয়া যাচ্ছে না। ফলে স্বাভাবিকভাবেই বিশ্ববিদ্যালয় মন্থর গতিতে চলছে। 

উন্নয়ন প্রকল্পের বিষয়ে জানতে চাইলে তিনি জানান, উন্নয়নমূলক কাজের মধ্য কিছু বাজেটের কিছু ফাইল আসছে। আমরা সেগুলোর প্রশাসনিক অনুমোদন দিচ্ছি সেক্ষেত্রেও একটা বিষয় হচ্ছে যদি নির্দিষ্ট বড় অংকের হয়, তখন সিন্ডিকেট কমিটির মাধ্যমে প্রস্তাবটি পাস করতে হয়। আর এটি উপাচার্য ছাড়া সম্ভব না। এজন্য প্রস্তাবগুলো পাস করতে পারছি না। ফলে বড় কাজগুলো করার সুযোগ নেই। 

শিক্ষা কার্যক্রম বিষয়ে জানতে চাইলে তিনি বলেন, শিক্ষা কার্যক্রম মোটামুটি চলছে। সেখানে অনেক সমস্যা রয়েছে যেমন অনেকের একাডেমিক আবেদন ও পরীক্ষার বিষয় সংক্রান্ত জটিলতা আছে। সেগুলোর বিষয়ে সিদ্ধান্ত নেয়ার এখতিয়ার নেই। এসব বিষয়ে অনিশ্চয়তা থেকে যায়।

আরও পড়ুন: শূন্য পদে বদলি নিয়ে যা জানাল শিক্ষা মন্ত্রণালয়

বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষা কার্যক্রম মোটামুটি ঠিকভাবে চললেও ২২টি পদ শূন্য থাকায় নিয়মিত প্রশাসনিক কার্যক্রমে স্ব স্ব দপ্তরের কাজের গতিশীলতা বা ব্যাহত হচ্ছে। প্রশাসনিক যে শূন্যতা তৈরি হয়েছে, তা পুরোপুরি পূরণ না হওয়া পর্যন্ত বিশ্ববিদ্যালয় কচ্ছপ গতিতে চলছে। তবে শিক্ষার্থীরা বাহিরের বিশ্ববিদ্যালয় থেকে একজন দক্ষ ও ভালো একজন গবেষককে বরিশাল বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য চান বলে প্রত্যাশার কথা জানিয়েছেন সামাজিক যোগযোগ মাধ্যমে।

এ বিষয়ে বিশ্ববিদ্যালয়ের রেজিস্ট্রার মো. মনিরুল ইসলাম বলেন, যখনই একটি বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য থাকে না, তখন ওই বিশ্ববিদ্যালয়ের স্বাভাবিক কাজকর্ম ব্যাহত এবং গতিশীলতা সবসময়ই কমে যায়। আমাদের বিশ্ববিদ্যালয়েও তার ব্যতিক্রম কিছু নয়। তবে আমাদের আর্থিক ও প্রশাসনিক দায়িত্বপ্রাপ্ত অধ্যাপকের মাধ্যমে আমরা আর্থিক ও প্রশাসনিক ফাইলগুলো ব্যবস্থাপনা করছি। পাঠদান ও পরীক্ষা যথারীতি চলছে। তবে আমরা আশা করছি অচিরেই আমাদের বিশ্ববিদ্যালয় একজন অভিজ্ঞতা ও দক্ষ একজন উপাচার্য আসবেন। তখন আমরা আরও বেশি গতিশীলতা পাবো।

এদিকে দায়িত্ব বন্টন নিয়ে ইতিমধ্যে সমালোচনা ও নানান প্রশ্ন উঠেছে শিক্ষক-শিক্ষার্থীদের মাঝে। উপাচার্য নেই অথচ প্রশাসনিক ও আর্থিক দায়িত্বে থাকা অধ্যাপক ড. মুহসিন উদ্দীন বিভিন্ন শাখায় বা দপ্তরে দায়িত্ব দিয়েছেন। প্রক্টরিয়াল বডির অবর্তমানে তড়িঘড়ি করে শৃঙ্খলা কমিটি করা হয়। সমালোচনায় পরে সে পরিপত্রটি বাতিল করেন। এছাড়া চার হলের প্রশাসনিক দায়িত্ব দেওয়া হয়। এদিকে ডিনের দায়িত্ব নিয়েছেন তিনি নিজেই। এসবে ছাত্র-শিক্ষক প্রশ্ন তুলেছেন প্রশাসনিক ও আর্থিক দায়িত্ব থাকা এ অধ্যাপকের বিরুদ্ধে। দায়িত্ব দেওয়া সম্পর্কে সংশ্লিষ্টরা জানিয়েছেন, এটি শিক্ষামন্ত্রণালয়ের চিঠি অনুযায়ী জরুরি সিদ্ধান্ত যাতে শিক্ষার পরিবেশ নিশ্চিত থাকে।


সর্বশেষ সংবাদ

×
  • Application Deadline
  • December 17, 2025
  • Admission Test
  • December 19, 2025
APPLY
NOW!
GRADUATE ADMISSION
SPRING 2026!
NORTH SOUTH UNIVERSITY
Center of Excellence