কুবিতে সিনিয়র জুনিয়র দ্বন্দ্ব, সাংবাদিকের মোবাইল ছিনিয়ে নেওয়ার চেষ্টা

কুবিতে সিনিয়র জুনিয়র দ্বন্দ্ব
কুবিতে সিনিয়র জুনিয়র দ্বন্দ্ব  © টিডিসি ফটো

কুমিল্লা বিশ্ববিদ্যালয়ের বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান হলে সিনিয়র জুনিয়র দ্বন্দ্বের সংবাদ সংগ্রহকালে সাংবাদিকের মোবাইল ছিনিয়ে নেওয়ার চেষ্টার ঘটনা ঘটেছে। এসময় সাংবাদিকদের দৌড় কতটুকু তা দেখে নেওয়ার হুমকিও দেওয়া হয়েছে। শুক্রবার রাত ১১ টায় বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান হলের পুরাতন ব্লকের পাঁচতলায় এ ঘটনা ঘটে।

ভুক্তভোগী সংবাদকর্মী দৈনিক ভোরের ডাক ও ডেইলি বাংলাদেশ পত্রিকার কুমিল্লা বিশ্ববিদ্যালয় প্রতিনিধি রকিবুল হাসান। মোবাইল ছিনিয়ে নেওয়ার চেষ্টাকারীরা শিক্ষার্থীরা হলেন, বাংলা ১৬তম ব্যাচের হামিদুর রহমান, আইন বিভাগের ১৬তম ব্যাচের ওলি আহমেদ দয়াল শাহ, লোকপ্রশাসন বিভাগের ১৬তম ব্যাচের ওবায়দুল্লাহ ও মার্কেটিং বিভাগের ১৫তম মুনতাসীর। এছাড়াও এসময় সাংবাদিককে গালি দেন গণিত বিভাগের শিক্ষার্থী ফারহান।

খোঁজ নিয়ে জানা যায়, বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রত্নতত্ত্ব বিভাগের ১৫তম ব্যাচের শিক্ষার্থী সুদীপ চাকমার রুমের সামনে থেকে ফুলের টব নিয়ে আসেন বাংলা ১২তম ব্যাচের শিক্ষার্থী সাকুর। সুদীপ বিষয়টি জানতে পারলে সাকুরের রুমের সামনে বিবাদে জড়ায়। এসময় সুদীপকে পায়ে ধরে মাফ চাওয়ানো হলে সেটি নিয়ে ফের সাকুরের সাথে বাকবিতণ্ডায় জড়ান প্রত্নতত্ত্ব বিভাগের শিক্ষার্থীরা৷ এসময় মোবাইলে ভিডিও ধারণ করতে গেলে প্রতিবেদকের ফোন ছিনিয়ে নেওয়ার চেষ্টা করেন। এসময় একজন সংবাদকর্মীকে উদ্দেশ্য করে বলেন, ‘সাংবাদিকদের দৌড় কতটুকু তা দেখে নেব।’

প্রত্নতত্ত্ব বিভাগের শিক্ষার্থী সুদীপ চাকমা বলেন, আমার রুমের সামনে গাছগুলো আমার দাদা উপহার দিয়েছিল। হলে গিয়ে দেখি গাছগুলো নেই। খুঁজতে খুঁজতে ৫০৬ নম্বর রুমের সামনে গাছগুলো দেখে উত্তেজিত হয়ে যাই। পরবর্তীতে আমি উপলব্ধি করলাম, এটা করা উচিত হয়নি।

বাংলা বিভাগের শিক্ষার্থী আব্দুর সাকুর গাজী বলেন, প্রথমে সুদীপ আমার সাথে রাগারাগি ও গালিগালাজ করছিল। পরে আবার ক্ষমা চেয়েছে। কিন্তু সবাই মনে করেছে সুদীপ আমার পা ধরে ক্ষমা চেয়েছে। কিন্তু এটা সঠিক নয়। সে নিজেও স্বীকার করেছে। পরে আমার রুমের সামনে এটা নিয়ে সুদীপের ডিপার্টমেন্টের পোলাপান উচ্চবাচ্য করেছে। 

এদিকে ফোন ছিনিয়ে নেওয়ার চেষ্টার বিষয়ে ভুক্তভোগী সংবাদিক রকিবুল হাসান বলেন, হলের মধ্যে চিল্লাচিল্লির শব্দ পেলে আমি সেখানে সংবাদ সংগ্রহ করতে যাই। কিন্তু ভিডিও চালু করার সাথে সাথেই তারা আমার দিকে তেড়ে এসে ধাক্কা দেয় ও ফোন কেড়ে নেওয়ার চেষ্টা করে।

সংবাদকর্মীর ফোন ছিনিয়ে নেওয়া ও তাকে ধাক্কা দেওয়ার কারণ জানতে চাইলে অভিযুক্ত হামিদ বলেন, ওখানে একটা বিষয় নিয়ে ঝামেলা চলতেছিলো। হুট করে ঢুকে ভিডিও করা শুরু করে। উনি ওখানে ভিডিও করবে কেন? আর উনি সংবাদকর্মী হলেই সব জায়গায় সংবাদ সংগ্রহ করবে! তাছাড়া, ওখানে ধাক্কাধাক্কির মাঝে হয়তো ধাক্কা লাগতে পারে। আমি ইচ্ছা করে দেইনি।  

এ বিষয়ে জানতে মার্কেটিং বিভাগের মুনতাসীরকে কল দেওয়া হলে তিনি প্রতিবেদককে বলেন, আপনি আমাকে কল দেওয়ার কে? আমিতো সেখানে একা ছিলাম না। আরো অনেকেই ছিল। 

সংবাদকর্মীকে ধাক্কা দেওয়া ও ফোন ছিনিয়ে নেওয়ার ব্যাপারে আইন বিভাগের শিক্ষার্থী দয়াল বলেন, উনি সাংবাদিক বলে হুট করে ভিডিও ধারণ করতে পারেন না। এটা হলের ইন্টার্নাল বিষয়।

সংবাদ সংগ্রহে বাধা দেওয়া ও বিচারের বিষয়ে রেজিস্ট্রার মো. মুজিবুর রহমান মজুমদার বলেন, বঙ্গবন্ধু হলে যে অনাকাঙ্ক্ষিত ঘটনা ঘটেছে তা সাধারণত হল প্রভোস্ট হ্যান্ডেল করেন। কিন্তু হলে যেহেতু প্রভোস্ট নেই তাই জড়িত ডিপার্টমেন্টের সাথে আলোচনা করেছি। একজন সংবাদকর্মীকে সংবাদ সংগ্রহে কোনো ভাবেই বাধা দেওয়া যায় না। তিনি নিজের প্রফেশনাল কাজ করছেন। বরং তাকে সর্বোচ্চ সহযোগিতা করা উচিত ছিল। আমরা বিষয়টি নিয়ে বসবো এবং প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেব।


সর্বশেষ সংবাদ

×
  • Application Deadline
  • December 17, 2025
  • Admission Test
  • December 19, 2025
APPLY
NOW!
GRADUATE ADMISSION
SPRING 2026!
NORTH SOUTH UNIVERSITY
Center of Excellence