‘গুচ্ছে ফেরা’ নিয়ে ইউজিসির সভায় যাবেন না ইবি শিক্ষক নেতারা

ইউজিসি ও ইবি
ইউজিসি ও ইবি  © লোগো

ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয়কে (ইবি) গুচ্ছ ভর্তি পরীক্ষায় নিয়ে আসতে এক মতবিনিময় সভার আয়োজন করেছে বিশ্ববিদ্যালয় মঞ্জুরী কমিশন (ইউজিসি)। বৃহস্পতিবার (৮ ফেব্রুয়ারি) সকাল সাড়ে ১০টায় কমিশন ভবনের অডিটোরিয়ামে এ সভা হওয়ার কথা ছিল। বিষয়টি নিয়ে সংশ্লিষ্টদের চিঠির মাধ্যমে জানিয়ে দিয়েছিল ইউজিসি। তবে ইবির ৬ শিক্ষক সংগঠনের নেতারা ফিরতি চিঠির মাধ্যমে মতবিনিময় সভায় না যাওয়ার সিদ্ধান্ত নেয়, পরবর্তীতে সভাটি বাতিল করা হয়েছে বলে জানা গেছে।

বুধবার (৭ ফেব্রুয়ারি) বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য অধ্যাপক ড. শেখ আব্দুস সালাম তথ্য নিশ্চিত করে বলেন, বৃহস্পতিবার ইউজিসির সাথে একটি মতবিনিময় সভা হওয়ার কথা ছিল। এখানে ব্যক্তিগতভাবে আমাকে আমন্ত্রণ জানানো হয়েছে। পরে জানতে পারলাম সভাটি বাতিল হয়েছে। গুচ্ছের বিষয়ে বিশ্ববিদ্যালয় শিক্ষকরা যে সিদ্ধান্ত নিবে আমি সেটাকেই গ্রহণ করবো।

জানা গেছে, ইউজিসির পরিচালক (পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয় ম্যানেজমেন্ট বিভাগ) মোহাম্মদ জামিনুর রহমান স্বাক্ষরিত এক বিজ্ঞপ্তির মাধ্যমে এ মতবিনিময় সভায় যাওয়ার আমন্ত্রণ জানানো হয়েছিল। 

সেই বিজ্ঞপ্তি সূত্রে জানা যায়, গুচ্ছ পদ্ধতিতে ২০২৩-২৪ শিক্ষাবর্ষে জিএসটি গুচ্ছে স্নাতক ১ম বর্ষে ভর্তি পরীক্ষা আয়োজন বিষয়ে ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষসহ বিশ্ববিদ্যালয়ের মনোনীত প্রতিনিধি দলের সঙ্গে কমিশনের চেয়ারম্যান (অতিরিক্ত দায়িত্ব) প্রফেসর ড. মুহাম্মদ আলমগীরের সভাপতিত্বে ৮ ফেব্রুয়ারি সকাল সাড়ে ১০টায় কমিশন ভবনের অডিটোরিয়ামে (৬ষ্ঠ তলা) এক মতবিনিময় সভা অনুষ্ঠিত হবে।

গুচ্ছ না যাওয়ার বিষয়ে ইবি শিক্ষক নেতারা জানান, গুচ্ছ ভর্তি পরীক্ষায় উত্তীর্ণ হওয়ার পর পছন্দের বিশ্ববিদ্যালয়গুলোয় আবেদন, মেধাতালিকা প্রকাশের পর প্রাথমিক ভর্তি; পছন্দক্রমে থাকা অন্য বিশ্ববিদ্যালয়ে মাইগ্রেশনের সুযোগ; প্রাথমিক ভর্তি শেষে বিশ্ববিদ্যালয় পরিবর্তনের সুযোগ ও চূড়ান্ত ভর্তি। দীর্ঘ এ প্রক্রিয়ার প্রতিটি ধাপে শিক্ষার্থীর হার কম-বেশি হতে থাকে। নির্দিষ্ট সময়ের আগে আসন পূরণ সম্ভব হয় না। ফলে আসনগুলো ফাকা থেকে যাচ্ছে, বহু মেধাবী শিক্ষার্থীরা আসন থেকেও বঞ্চিত হচ্ছে।

তারা আরও বলেন, মিসম্যানেজমেন্টের কারলে যাদের একটু সামর্থ আছে তারা প্রাইভেট বিশ্ববিদ্যালয়ে চলে যাচ্ছে। এক জায়গায় ভর্তি হলে জোর করে সেখানেই থাকতে হয় কোথাও যাওয়ার সুযোগ থাকে না, মানে তাকে ফোর্স করা হচ্ছে। ভর্তিতে স্বাধীনতা থাকছে না। ফলে শিক্ষার্থীরা উচ্চশিক্ষার আগ্রহ হারাচ্ছে। এছাড়াও গুচ্ছের ফলে আঞ্চলিক বিশ্ববিদ্যালয়ের দিকে ধীরে ধীরে ধাবিত হচ্ছে। 

বাতিল হওয়া সভায় আমন্ত্রণ জানানো হয়েছিল ইউজিসির চেয়ারম্যান (অতিরিক্ত দায়িত্ব) প্রফেসর ড. মুহাম্মদ আলমগীর, সদস্য প্রফেসর ড. হাসিনা খান, ইবি উপাচার্য, উপ-উপাচার্য ও ট্রেজারার।

এছাড়া আরও আমন্ত্রণ জানানো হয়েছিল ইবি শিক্ষক সমিতির সভাপতি প্রফেসর আনোয়ার হোসেন ও সাধারণ সম্পাদক প্রফেসর এম মামুনুর রহমান, শাপলা ফোরামের সভাপতি প্রফেসর পরশ চন্দ্র বর্মন ও সাধারণ সম্পাদক প্রফেসর এম রবিউল হোসেন, শিক্ষক সমিতির সাবেক সভাপতি প্রফেসর এম জাহাঙ্গীর হোসেন ও সাবেক সাধারণ সম্পাদক প্রফেসর তপন কুমার জোদ্দার প্রমুখ।

ইবি শাপলা ফোরামের সভাপতি প্রফেসর পরেশ চন্দ্র বর্মন বলেন, ইউজিসির নোটিশে এটা স্পষ্ট ছিল যে তারা গুচ্ছ ভর্তি পরিক্ষা আয়োজনের জন্য ডেকেছে। আর যেহেতু পূর্বেই সর্বসম্মতিক্রমে গুচ্ছে না যাওয়ার বিষয়ে সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে। সেহেতু এখন আমরা ৬ জন সেই সিদ্ধান্ত লঙ্ঘন করে ইউজিসির সভায় যেতে পারি না।

ইবি শিক্ষক সমিতির সভাপতি প্রফেসর ড. আনোয়ার হোসেন বলেন, আমাদের ৬ শিক্ষক সংগঠনকে মতবিনিময় সভার চিঠি দিয়েছিল। পরবর্তীতে আমরা সম্মিলিত চিঠি দিয়ে সভায় না যাওয়ার সিদ্ধান্ত নিয়েছি।

এ বিষয়ে বাংলাদেশ বিশ্ববিদ্যালয় মঞ্জুরী কমিশনের চেয়ারম্যান (অতিরিক্ত দায়িত্ব) প্রফেসর ড. মুহাম্মদ আলমগীর হোসেনের সাথে বারবার যোগাযোগের চেষ্টা করা হলে তিনি ফোন রিসিভ করেননি।

উল্লেখ্য, গুচ্ছ থেকে বেরিয়ে স্বতন্ত্র পদ্ধতিতে ২০২৩-২৪ শিক্ষাবর্ষের ভর্তি পরীক্ষা নেওয়ার চুড়ান্ত সিদ্ধান্ত নিয়েছে ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয়। গত ২৯ জানুয়ারি বিশ্ববিদ্যালয়ের ১২৭তম একাডেমিক কাউন্সিলে এ সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়। এর আগে ২৩ জানুয়ারি সর্বসম্মতভাবে গুচ্ছ প্রক্রিয়া থেকে বেরিয়ে আসার সিদ্ধান্ত নেন ইবি শিক্ষক সমিতি। এরপরও যদি বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ গুচ্ছে অংশ নেয় তবে শিক্ষকরা ভর্তি কার্যক্রমে অংশ নেবেন না বলে জানান শিক্ষকরা।


সর্বশেষ সংবাদ

×
  • Application Deadline
  • December 17, 2025
  • Admission Test
  • December 19, 2025
APPLY
NOW!
GRADUATE ADMISSION
SPRING 2026!
NORTH SOUTH UNIVERSITY
Center of Excellence