জবি শিক্ষক সমিতির নির্বাচনে না থেকেও যে কারণে গুরুত্বপূর্ণ বিএনপিপন্থিরা

জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়
জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়  © সংগৃহীত

জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয় শিক্ষক সমিতির (জবিশিস) নির্বাচন অনুষ্ঠিত হচ্ছে আজ। নির্বাচনকে ঘিরে জমে উঠেছে ক্যাম্পাসের পরিবেশ। টানা প্রায় আট বছরের ন্যায় এবারও নির্বাচন থেকে বিরত রয়েছে বিশ্ববিদ্যালয়ের বিএনপিপন্থী শিক্ষকদের সংগঠন সাদা দল। তবে নির্বাচনে অংশ না নিলেও ভোট দিবেন সাদা দলের শিক্ষকরা। আর সেই ভোটই আওয়ামীপন্থী শিক্ষকদের দুই প্যানেলের জয়-পরাজয় নির্ধারণে ভূমিকা রাখবে বলে জানান একাধিক জ্যেষ্ঠ শিক্ষক। 

জানা যায়, বিশ্ববিদ্যালয়ে আওয়ামী পন্থী শিক্ষকদের সংগঠন হিসেবে দুইটি নীলদল, স্বাধীনতা শিক্ষক সমাজ এবং জয় বাংলা শিক্ষক সমাজ সহ মোট চারটি সংগঠন রয়েছে। তবে এবারের নির্বাচনে আওয়ামী পন্থী শিক্ষকদের তিনটি সংগঠন দুইটি প্যানেলে বিভক্ত হয়ে অংশ নিচ্ছে। 

যার মধ্যে নীলদল (ড. ছিদ্দিকুর-ড. মনিরুজ্জামান কমিটি) এবং স্বাধীনতা শিক্ষক সমাজ ঐক্যবদ্ধভাবে একটি প্যানেল এবং নীলদলের অপর অংশ (ড. নূরে আলম আব্দুল্লাহ-ড. মমিন উদ্দীন কমিটি) বিপরীত প্যানেল থেকে নির্বাচনে অংশ নেওয়ার সার্বিক প্রস্তুতি সম্পন্ন করেছে। 

নির্বাচনে মোট ভোটারের সংখ্যা ৬৬৭ জন। সাদা দলের ভোটারের প্রকৃত সংখ্যা জানা সম্ভব না হলেও এবার নির্বাচনে সাদা দলের ভোটার সংখ্যা প্রায় দেড় শত বলে বিশ্বস্ত সূত্রে জানা গেছে। আওয়ামী পন্থী শিক্ষকদের জয়-পরাজয় নির্ধারণে বড় ফ্যাক্টর হয়ে উঠবে এই ভোটগুলো। 

তাই ভোটগুলো আদায়ে সাংগঠনিক আদর্শের জায়গা থেকে বের হয়ে পারস্পরিক সম্পর্কের ভিত্তিকে কাজে লাগাচ্ছেন অধিকাংশ প্রার্থী। অনেকে আবার ভোট নিশ্চিত করতে সাদা দলের ভোটারদের নানারকম সুযোগ সুবিধা প্রদানের আশ্বাস দিচ্ছেন। 

নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক বিশ্ববিদ্যালয়ের একজন জ্যেষ্ঠ অধ্যাপক বলেন, সাদা দলের যারাই আছেন সবাই আওয়ামী লীগের প্রশাসন থেকে সুযোগ সুবিধা নেন। সরকার দীর্ঘদিন ধরে ক্ষমতায় থাকায় বিশ্ববিদ্যালয়ের গুরুত্বপূর্ণ পদধারীদের সাথে থাকার একটা প্রবণতা সাদা দলের শিক্ষকদের মধ্যে রয়েছে। তাই ভোটের বিনিময়ে তারা সেই সুযোগ নিয়ে থাকেন। 

এবার জবি নীলদল (একাংশ) ও স্বাধীনতা শিক্ষক সমাজের পক্ষ থেকে ঐক্যবদ্ধভাবে 'জাকির-হাফিজুল' প্যানেল ঘোষণা করা হয়েছে। এই প্যানেল থেকে সভাপতি পদে মার্কেটিং বিভাগের অধ্যাপক ড. মো. জাকির হোসেন এবং সাধারণ সম্পাদক পদে দর্শন বিভাগের অধ্যাপক ড. মোহাম্মদ হাফিজুল ইসলাম প্রতিদ্বন্দ্বীতা করছেন। এছাড়া সহ-সভাপতি পদে অধ্যাপক ড. শামছুল কবির, কোষাধ্যক্ষ পদে ড. মো. মিরাজ হোসেন,যুগ্ম-সাধারণ সম্পাদক পদে ড. মো. মহসীন রেজা এবং সাধারণ সদস্য পদে ১০ জন শিক্ষক প্রতিদ্বন্দ্বীতা করছেন। 

নীলদলের (অপর অংশ) পক্ষ থেকে 'আশরাফ-মাশরিক' প্যানেল ঘোষণা করা হয়েছে। এই প্যানেল থেকে সভাপতি পদে পরিসংখ্যান বিভাগের অধ্যাপক ড. মো. আশরাফ-উল-আলম এবং সাধারণ সম্পাদক পদে ফিন্যান্স বিভাগের ড. শেখ মাশরিক হাসান প্রতিদ্বন্দ্বীতা করছেন। পাশাপাশি সহ-সভাপতি পদে অধ্যাপক ড. মো. মমিন উদ্দীন, কোষাধ্যক্ষ পদে অধ্যাপক ড. আব্দুস সামাদ, যুগ্ম-সাধারণ সম্পাদক পদে ড. নাজমুন নাহার এবং সাধারণ সদস্য পদে ১০জন শিক্ষক প্রতিদ্বন্দ্বীতা করছেন। 

এবারও শিক্ষক সমিতির নেতৃত্ব নির্ধারণে পরোক্ষ ভূমিকা রাখবেন সাদা দলের শিক্ষকরা। তাদের ভোটগুলো নিয়ে আওয়ামী পন্থী দুই প্যানেলের মধ্যেই রয়েছে বিশেষ আকর্ষণ। 

এ বিষয়ে জয় বাংলা শিক্ষক সমাজের আহ্বায়ক ও বিশ্ববিদ্যালয়ের বাংলা বিভাগের চেয়ারম্যান অধ্যাপক ড. মিল্টন বিশ্বাস বলেন, সাদা দলের শিক্ষকরাও প্রশাসন থেকে সুযোগ সুবিধা নিতে চান। আবার সাদা দলের অনেক শিক্ষকের সাথে আওয়ামী পন্থী শিক্ষকদের ব্যক্তিগত সম্পর্ক ভালো থাকে। মূলত এই দুইটি ইস্যু ভোটের ক্ষেত্রে কাজ করে। এখানে আদর্শের জায়গা নয় বরং ব্যক্তিগত সম্পর্কের ওপর বিষয়টি নির্ভর করে। 

জবি সাদা দলের সাধারণ সম্পাদক অধ্যাপক ড. মো. রইছ উদ্দীন বলেন, আমরা প্যানেল না দেওয়া এবং নির্বাচন থেকে বিরত থাকার সিদ্ধান্ত নিয়েছি। তবে শিক্ষকরা ভোট দিবেন নির্বাচনে। কারণ ভোটদান সবার ব্যক্তিগত বিষয়।


সর্বশেষ সংবাদ

×
  • Application Deadline
  • December 17, 2025
  • Admission Test
  • December 19, 2025
APPLY
NOW!
GRADUATE ADMISSION
SPRING 2026!
NORTH SOUTH UNIVERSITY
Center of Excellence