এসএসসি, এইচএসসিসহ বিশ্ববিদ্যালয়ে ভর্তিতেও সফল যমজ দুই ভাই

মো: আবু শাহিন আলম এবং মো: আবু সাঈদ আলম
মো: আবু শাহিন আলম এবং মো: আবু সাঈদ আলম  © টিডিসি ফটো

কৃষক পরিবারের যমজ সন্তান শাহীন ও সাঈদ। পৃথিবীতে আগমন যেমন একই সময়ে তেমনই দুজনের শিক্ষাজীবনও শুরু হয়েছিল একইসাথে। কাকতালীয় ভাবে একই ফলাফল নিয়ে দুই ভাই উত্তীর্ণ হয়েছিলেন প্রথম পাবলিক পরীক্ষা প্রাথমিক সমাপনীতে। দুই ভাই-ই পেয়েছিলেন জিপিএ ৪. ৮৩। এরপর আর পেছনে ফিরে তাকাতে হয়নি। মাধ্যমিক ও উচ্চ মাধ্যমিক শেষে দুই ভাইই এখন পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থী।

মেধাবী এই দুই ভাই মো: আবু শাহিন আলম এবং মো: আবু সাঈদ আলম রংপুরের পীরগঞ্জ উপজেলার গুড়জিপাড়ার ডাসারপাড়া নামক গ্রামের কৃষক রুস্তম আলী এবং ব্রাক স্কুলের শিক্ষিকা আসমাউল হুসনার সন্তান।

প্রাথমিক সমাপনী পরীক্ষায় একই ফলাফলের পর ২০১৮ সালে অষ্টম শ্রেণীতে জেএসসি পরীক্ষায় জিপিএ ৫.০০ পেয়ে তাক লাগিয়ে দেন কৃষক পরিবারে জন্ম নেওয়া এই জমজ সন্তান। মাধ্যমিক পরীক্ষায়ও রাখেন কৃতিত্বের স্বাক্ষর। গুর্জিপাড়া কেপি দ্বি মুখী উচ্চ বিদ্যালয় থেকে ২০২০ সালে মাধ্যমিক পরীক্ষায় অংশ নিয়ে জিপিএ ৫.০০ পেয়ে আবারও মা-বাবার মুখে হাঁসি ফোটান তারা।

আরো পড়ুন: কৃষি গুচ্ছে ভর্তি পরীক্ষার আসন বিন্যাস প্রকাশ

সর্বশেষ হওয়া ২০২২ সেশনের এইচএসসি পরীক্ষায় অংশ নিয়েও সফলতার ধারাবাহিকতা বজায় রাখেন শাহীন এবং সাঈদ। রংপুরের পীরগঞ্জে গুর্জিপাড়া কলেজ থেকে উচ্চ মাধ্যমিকে জিপিএ ৫.০০ পেয়ে তারা কলেজ জীবন শেষ করেছেন।  

যমজ দুই ভাইয়ের সফলতার এ গল্প স্কুল, কলেজেই শেষ নয়। উচ্চ মাধ্যমিক শেষে দু'জনেই কৃতিত্বের সাথে পা রেখেছেন বিশ্ববিদ্যালয়ের গণ্ডিতেও। হাজী মোহাম্মদ দানেশ বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের কৃষি অনুষদে ২০২২-২৩ সেশনে ভর্তি হয়েছেন শাহিন আলম। আর অন্য ভাই সাঈদ আলম একই সেশনে ভর্তি হয়েছেন বাংলাদেশ টেক্সটাইল বিশ্ববিদ্যালয়ের অধিভুক্ত ডঃ মুহাম্মদ ওয়াজেদ মিয়া টেক্সটাইল ইঞ্জিনিয়ারিং কলেজের বিএসসি ইন টেক্সটাইল ইঞ্জিনিয়ারিংয়ে।

নিজের অনুভূতি প্রকাশ করে মোঃ আবু শাহিন আলম বলেন, সেই ছোটবেলা থেকেই আমরা যমজ দুই ভাই একসঙ্গেই আছি। গ্রামের স্কুলে আমাদের পড়ালেখা শুরু হয়। ক্লাস ফাইভে পরীক্ষায় কাকতালীয়ভাবে দুইজনেই ৪.৮৩ পেয়েছি। পরবর্তীতে নিজ গ্রামেই স্কুল, কলেজ আমরা একসাথে শেষ করেছি। এখন আমি হাজী মোহাম্মদ দানেশ বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ে আর আমার ভাই ডঃ মোঃ ওয়াজেদ মিয়া টেক্সটাইল ইঞ্জিনিয়ারিং কলেজে ভর্তির সুযোগ পেয়েছে। আমাদের বাবা-মায়ের আশা ভবিষ্যতে যেন দু'জনেই সমাজ, রাষ্ট্র এবং দেশের জন্য ভালো কিছু করতে পারি। তাদের মনের আশা পূর্ণ করতে সবার নিকট দোয়া কামনা করছি। 

মোঃ আবু সাঈদ আলম নিজের অনুভূতি প্রকাশ করে বলেন, কলেজ জীবন শেষ করে দুই ভাই একত্রে সরকারি বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থী হতে পেরে আমরা গর্বিত। আমরা মধ্যবিত্ত পরিবারের সন্তান। বাবা একজন কৃষক এবং মা সামান্য বেতনের ব্রাক  শিক্ষিকা। তারা এতদিন ধরে অতি কষ্টেই আমাদের দুজনের লেখাপড়া খরচ বহন করছেন। কয়েক জায়গায় স্কলারশিপের জন্য আবেদন করেছিলাম তবে গ্রান্টেড হয়নি। জানিনা কেন এমন হলো। আমরা কি স্কলারশিপের জন্য যোগ্য না? আশা করব, পরবর্তীতে আমাদের লেখাপড়ায় যাতে ব্যাঘাত না ঘটে  এজন্য ছাত্র-ছাত্রীদের জন্য যেসব ফান্ড রয়েছে সেখান থেকে আমাদের আর্থিক সহযোগিতার জন্য বিবেচনা করা হবে।


সর্বশেষ সংবাদ

×
  • Application Deadline
  • December 17, 2025
  • Admission Test
  • December 19, 2025
APPLY
NOW!
GRADUATE ADMISSION
SPRING 2026!
NORTH SOUTH UNIVERSITY
Center of Excellence