ভিসির কাছে বিচার চাইলেন মারধরের শিকার জবির সেই অধ্যাপক

জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়
জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়  © ফাইল ফটো

গুচ্ছ পরীক্ষার পক্ষে মত দেওয়ায় জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ের (জবি) মারধরের ঘটনায় বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য বরাবর অভিযোগ দিয়েছেন ভুক্তভোগী ভূগোল ও পরিবেশ বিজ্ঞান বিভাগের চেয়ারম্যান অধ্যাপক আব্দুল কাদের। শনিবার (৮ এপ্রিল) এই  অভিযোগ দেন তিনি। এর আগে গত বৃহস্পতিবার (৬ এপ্রিল) উপাচার্যের কনফারেন্স রুমে বিশ্ববিদ্যালয়ের ৬৫তম বিশেষ একাডেমিক কাউন্সিল সভায় তাকে মারধর করেন তারই সহকর্মীরা।

অভিযোগপত্র সম্পর্কে অধ্যাপক আব্দুল কাদের বলেন, ৬৪তম একাডেমিক কাউন্সিল সভায় সবার কাছে যেটা সার্কুলার করে দেওয়া হয় সেটা ঠিক ছিলো। গুচ্ছ থেকে আমরা কেন বের হয়ে যাচ্ছি সেটা ছিলো। গুচ্ছে যখন আমরা অন্তর্ভুক্ত হলাম তখন ৫১তম সভায় সবার সর্বস্মতিক্রমে জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয় অংশ নিয়েছিলো। ওই সবায় কেউ দ্বিমত করেনি। এখন যদি আমরা বের হতে চাই তার নিয়ম আছে। ৬৪তম সভায় সরাসরি গুচ্ছের পক্ষে আমিই মত দিয়েছি। আরো এক দুইজন দিয়েছে। কিন্তু জোরালো ভাবে আমিই দিইছি। আমার একার কথায় সব সম্ভব না। জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয় যখন গুচ্ছে গিয়েছিলো তখন গুচ্ছ শুরু হয়েছিলো। গুচ্ছ থেকে বের হতে চাইলে সভার বিবরনি থাকা উচিৎ যে আমরা কোন কোন কারনে বের হতে চাচ্ছি। গুচ্ছের প্রক্রিয়া শুরু হয়ে গিয়েছিলো তারপর দুই বছর চলে গেছে। এখন সরকার এটাকে প্রতিষ্টিত করতে চাচ্ছে। এখন যদি জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয় বের হতে চায় তবে অন্যান্য বিশ্ববিদ্যালয়ও বের হতে চাইবে। গুচ্ছ প্রক্রিয়া ভেঙে যাবে। এতে করে সরকারের অভিপ্রায় নষ্ট হয়ে যাবে।  

তিনি বলেন, এখন আমরা যদি গুচ্ছ থেকে বের হতে চাই তার সুনির্দিষ্ট বিবরণ থাকা উচিত যে আমরা কোন কোন কারনে বের হতে চাচ্ছি সেগুলো থাকা উচিত। সেটা ছিলোও। কিন্তু আমাদের সহকর্মীদের আন্দোলনের মুখে উপাচার্য সেসব কথা পরিবর্তন করে। লেখা হয় সরাসরি যে আমরা জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয় গুচ্ছ থেকে বের হয়ে গেলাম। এবং সবার কাছে চিঠি দেয়। এতে বলা হয় যে বিবরনিতে লিপিবদ্ধ জনিত কোন ত্রুটি থাকলে সাত দিনের মধ্যে যেনো বলা হয়। এতে আমি বলি যে আমার যে কথা ছিলো তা তুলে ধরা হয়নি। বিষয়টি আমি উপাচার্যকে জানাই। মিটিংয়ের শুরুতে আমাকে সুযোগ দেওয়া হয় আমার কথা বলার জন্য। আমি আমার বক্তব্য বলি।  

বলার পরে শিক্ষক সমিতির সাধারণ সম্পাদক আমার দিকে তাকিয়ে আমাকে উদ্দেশ্য করে বলে যে ভূগোল ও পরিবেশ বিজ্ঞান বিভাগের চেয়ারম্যান তার একাডেমিক কমিটিতে যে সিদ্ধান্ত হয়েছে তা বলেনি কেনো। একাডেমিক কাউন্সিলে এসে তিনি গুচ্ছের পক্ষে অবস্থান নিয়েছেন কেনো? আমাকে যেহেতু জিজ্ঞাসা করেছে আমি সংক্ষেপে বলতেও চেয়েছিলাম। তখন একাডেমিক কাউন্সিলের অন্যান্য সদস্যরা আমার বিরোধিতা করে। তখম আমি উত্তেজিত হয়ে আমার মত প্রকাশের স্বাধীনতার দাবি করি এবং টেবিল চাপড়াই।  এবং বলি আমার মত প্রকাশের স্বাধীনতা না থাকলে এই একাডেমিক কাউন্সিলের বৈধতা নেই। কারণ একাডেমি কাউন্সিলের সিদ্ধান্ত সিন্ডিকেটে যাবে সিন্ডিকেটে এন্ডিউস হবে এবং নিশ্চিত হবে যে আমরা গুচ্ছ থেকে বের হয়ে যাচ্ছি। তখন স্বতন্ত্র প্রক্রিয়ায় কেন্দ্রীয় ভর্তি কমিটি গঠন হবে।  

ঘটনার বিষয়ে এই অধ্যাপক বলেন, আমার বিপরীত পাশে বসা, বাম পাশে এবং ডান পাশে বসা ৮-১০ জন উঠে আসে। এবং কয়েকজন আমাকে শারিরীক নির্যাতন করে। কিন্তু এদের মধ্যে সবাই আমাকে ফিজিক্যালি এটাক করেনি। এখন কেউ কেউ দাবি করছে যে এমন ঘটনা ঘটেনি। তার কারণ হলো এরা সবাই আমাকে ফিজিক্যালি এ্যাসোল্ড করেনি। এবং আশেপাশে যারা দাড়িয়ে ছিলো তাদের কারণে দূর থেকে দেখা যায়নি এখানে কি ঘটছে। সবাই শারিরীক নির্যাতনে অংশ নেয়নি। কয়েকজন পাশে দাড়িয়ে ছিলো কিন্তু এর মধ্যে কেউ কেউ রোধ করেছে। এর মধ্যে ঘটনা ঘটে গেছে। এসময় ভিসি স্যার ট্রেজারার স্যারও এটা শান্ত করার চেষ্টা করছিলো কিন্তু শেষ পর্যন্ত আর হয় নি। যা ঘটার তা ঘটে গেছিলো।  

এ ঘটনায় দুঃখ প্রকাশ করেছে উল্লেখ করে তিনি বলেন, আমি টেবিল চাপড়ানো ঘটনায় দুঃখ প্রকাশ করি। সবাইকে বলেছি ক্ষমাসুন্দর দৃষ্টিতে দেকার জন্য। সাথে এটাও বলেছি যে আমি টেবিল চাপড়িয়েছি তারমানে আমাকে শারীরিকভাবে আঘাত করার অধিকার কারো নাই। এবং আমার মত প্রকাশের স্বাধীনতা আছে। আপনারা আমার সাথে যা করেছেন তা ঠিক হয়িনি। তারপর আমি বের হয়ে গিয়েছিলাম উপাচার্যের অনুমতি নিয়ে। পরবর্তীতে নিজে স্থির হবার চেষ্টা  করেছি। এবং প্রাথমিক চিকিৎসা নিয়েছি। এবং উপাচার্যের নিকট আবেদন দিয়েছি এই ঘটনার প্রকৃত পক্ষে যারা দোষী তাদেরকেই যেনো বিচারের আওতায় আনা হয়। সেই সাথে আমি ক্ষমা চেয়েছি একাডেমিক সভায়। এই শাস্তি যদি পর্যাপ্ত না হয় তাহলে বিধি মোতাবেক যে শাস্তি হবে তা মেনে নিতে প্রস্তুত আছি। সেই সাথে আমার ওপর যে শারীরিক নির্যাতিত হয়েছে, খুব বেশি তো জড়িত নেই কিন্তু যারা জড়িত আছে তাদের যেন বিচার হয় সুষ্ঠু তদন্ত সাপেক্ষে। যেনো পরবর্তীতে এ ঘটনা আর না ঘটে।

এ বিষয়ে উপাচার্য অধ্যাপক ড. ইমদাদুল হক বলেন, এ ঘটনায় অধ্যাপক আব্দুল কাদের একটি অভিযোগ দিয়েছে। রেজিস্ট্রারকে সেটা মার্ক করে দিয়েছি। তদন্ত সাপেক্ষে ব্যবস্থা নেওয়া হবে।


সর্বশেষ সংবাদ

×
  • Application Deadline
  • December 17, 2025
  • Admission Test
  • December 19, 2025
APPLY
NOW!
GRADUATE ADMISSION
SPRING 2026!
NORTH SOUTH UNIVERSITY
Center of Excellence