মানচিত্রসম প্রতিষ্ঠান জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয়: ভিসি
- টিডিসি রিপোর্ট
- প্রকাশ: ১৮ মার্চ ২০২৩, ০৬:৩০ PM , আপডেট: ১৮ মার্চ ২০২৩, ১১:৩১ PM
জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য প্রফেসর ড. মো. মশিউর রহমান বলেছেন, মানচিত্রসম প্রতিষ্ঠান জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয়। সারাদেশে বিস্তৃত ২ হাজার ২৫৭টি কলেজে ৩৫ লক্ষ শিক্ষার্থী। সেই শিক্ষার্থীরা বাংলাদেশের মধ্যবিত্ত শ্রেণির মানসকাঠামো গঠন করে। আমাদের শিক্ষার্থীরা অত্যন্ত চ্যালেঞ্জের মধ্য দিয়ে শুধু নিজেকে তৈরি করে না- বাবা-মা, ভাই-বোনকে দেখাশোনা করে। আমার শিক্ষার্থীরা ভীষণভাবে দেশপ্রেমী, সমাজপ্রেমী, মানবিক, সাংস্কৃতিবান ও ক্রীড়ামোদী। এসব লালন করে মুক্তিযুদ্ধ, বঙ্গবন্ধু ও বাংলাদেশকে বুকে ধারণ করে তারা। সে কারণে আমি মনে করি, মানচিত্রসম প্রতিষ্ঠানে আমাদের কাজ করার অনেক সুযোগ আছে।
গতকাল শুক্রবার (১৭ মার্চ) চট্টগ্রামের বাঁশখালী ডিগ্রি কলেজে জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের ১০৩তম জন্মবার্ষিকী ও জাতীয় শিশু দিবস-২০২৩ উপলক্ষে আয়োজিত আলোচনা সভা ও পুরস্কার বিতরণী অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির বক্তব্যে এসব কথা বলেন তিনি।
উপাচার্য বলেন, শুধু অবকাঠামোগত উন্নয়ন বা বেতন কাঠামো নয়, আমাদের শিক্ষার মূল উদ্দেশ্য শিক্ষার্থীদের মান বৃদ্ধি এবং যুক্তিবাদী ও দেশপ্রেমিক নাগরিক তৈরি করা। আমাদের দৃষ্টিভঙ্গিগত পরিবর্তন দরকার। আমাদের ঘরে ঘরে আধুনিক, যুক্তিবাদী, বিজ্ঞানমনস্ক, স্মার্ট এবং দেশপ্রেমিক সন্তান গড়ে তুলতে হবে। আমাদের লক্ষ্য ভবন বা অন্য সুবিধাপ্রাপ্তি নয়। বরং আমাদের প্রতিটি সন্তান আদর্শিক, দেশপ্রেমী, অসাম্প্রদায়িক নাগরিক হয়ে গড়ে উঠুক।
উপাচার্য আরও বলেন, বঙ্গবন্ধুর জন্মদিনে তার হত্যাকারীদের প্রতি আমাদের ঘৃণা, বিদ্বেষ ও ক্ষোভ প্রকাশ করছি। ঘাতকরা সারাজীবনের অপরাধী। জাতির পিতা বঙ্গবন্ধুকে সপরিবারে হত্যার মধ্য দিয়ে বাংলাদেশকে হত্যার প্রচেষ্টা করা হয়েছিল। কিন্তু আমাদের সৌভাগ্য- বঙ্গবন্ধু কন্যা জননেত্রী শেখ হাসিনা গণতন্ত্রের পুনরুত্থান ঘটিয়ে বাংলাদেশকে উন্নয়নের দিকে ধাবিত করছে। আমরা সেই অভিযাত্রাকে এগিয়ে নিতে চাই। জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয় আধুনিক-প্রযুক্তিমুখী শিক্ষার পাশাপাশি আপনাদের প্রতিটি সন্তানকে আইসিটি, সফ্ট স্কিল, অন্ট্রাপ্রেনারশিপ, ল্যাংগুইজসহ আধুনিক সব কোর্সে দক্ষ করে গড়ে তুলতে চায়। সেজন্য আমরা ইতোমধ্যে কার্যকর পদক্ষেপ গ্র্রহণ করেছি।’
বঙ্গবন্ধুর নেতৃত্বের বিভিন্ন দিক তুলে ধরে উপাচার্য ড. মশিউর রহমান বলেন, বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান একমাত্র নেতা যিনি কখনো শাসক হতে চাননি বরং সকল সময়ে বাঙালি জাতির মুক্তি চেয়েছিলেন। এই ভূখণ্ডে প্রাগৈতিহাসিক আমল থেকেই নেতৃত্ব ছিল। গোত্র প্রধান ছিল। এরই ধারাবাহিকতায় বিভিন্ন পর্যায়ে অনেক নেতা ও গোত্র প্রধানেরা নেতৃত্ব দিয়েছেন। তারা সকলেই কোন না কোন সময়ে শাসক হতে চেয়েছেন। কিন্তু একমাত্র বঙ্গবন্ধুই এদেশের হাজার বছরের গ্লানি, নির্যাতন, নিপীড়ন, নিগ্রহের মধ্যে থেকে মুক্তির গান গেয়েছেন। বঙ্গবন্ধু ছিলেন শোষিতের গণতন্ত্রের প্রবক্তা। একমাত্র বঙ্গবন্ধুই এদেশের মানুষকে ঐক্যের সূতায় গেঁথেছেন।
জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয় উপাচার্য আরও বলেন, বঙ্গবন্ধু বলেছেন পৃথিবী আজ দু’ভাগে বিভক্ত-শোষক আর শোষিত। আমি শোষিতের পক্ষে। তিনি পৃথিবীকে বদলে দিতে দ্বিতীয় বিপ্লবের কর্মসূচি ঘোষণা করলেন। এটি ছিল পুঁজিবাদী সমাজ ব্যবস্থার বিরুদ্ধে এক নতুন অর্থনৈতিক মডেল। এ কারণেই বঙ্গবন্ধু হাজার বছরের শ্রেষ্ঠ সন্তানে পরিণত হয়েছেন। এ কারণেই আজও মানুষ পোশাকে মুজিব কোট পরতে চায়। আমরা বঙ্গবন্ধুর মতো প্রবল ব্যক্তিত্বের মানুষ হতে চাই। সাহসী মানুষ হতে চাই। অকুতোভয়, বিপ্লবী মানুষ হওয়ার জন্য আমরা বারংবার বঙ্গবন্ধুর কাছে ফিরে যাই।
চট্টগ্রামের বাঁশখালীর স্থানীয় সংসদ সদস্য মোস্তাফিজুর রহমান চৌধুরীর সভাপতিত্বে আলোচনা সভায় বিশেষ অতিথি ছিলেন বাঁশখালী উপজেলা নির্বাহী অফিসার সাইদুজ্জামান চৌধুরী, বাঁশখালী থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা মো. কামাল উদ্দিন। সভায় প্রধান বক্তা ছিলেন বাঁশখালী ডিগ্রি কলেজের গভর্নিং বডির সভাপতি ড. মো. জমির উদ্দিন সিকদার। শুভেচ্ছা বক্তব্য প্রদান করেন বাঁশখালী ডিগ্রি কলেজের অধ্যক্ষ মোহাম্মদ ফারুক প্রমুখ।