এক যুগে বিসিএসের ক্যাডার ও নন-ক্যাডার পরীক্ষা সুষ্ঠুভাবে অনুষ্ঠিত হয়েছে: পিএসসি

  © টিডিসি ফটো

সরকারী কর্মকমিশনের (পিএসসি) অধীনে নেওয়া বিসিএসসহ বিভিন্ন চাকরির ৩০টি পরীক্ষার প্রশ্নফাঁসের অভিযোগ উঠেছে। এ ঘটনায় আজ সোমবার পর্যন্ত প্রতিষ্ঠানটির একাধিক কর্মকর্তাসহ ১৭ জনকে গ্রেপ্তার করেছে পুলিশের অপরাধ তদন্ত বিভাগ (সিআইডি)। এর আগে গতকাল রবিবার একটি বেসরকারি টেলিভিশন চ্যানেলে এ সংক্রান্ত একটি প্রতিবেদন প্রকাশিত হয়।

তবে সাংবিধানিক সংস্থাটি বলছে, গত ১২ বছরে বিসিএসের ক্যাডার ও নন-ক্যাডার পরীক্ষা সুষ্ঠুভাবে অনুষ্ঠিত হয়েছে। আজ এক প্রেস বিজ্ঞপ্তিতে এ কথা বলেছে পিএসসি। বেসরকারি ওই টেলিভিশন চ্যানেলের প্রতিবেদন নিয়ে এই বক্তব্যে দিয়েছে সাংবিধানিক এই সংস্থাটি।

এতে বলা হয়, সম্প্রতি অনুষ্ঠিত কমিশনের অধীনে রেলপথ মন্ত্রণালয়ের নন-ক্যাডার “উপসহকারী প্রকৌশলী” পদের নিয়োগ পরীক্ষাসহ গত ১২ বছরে বাংলাদেশ সিভিল সার্ভিস (বিসিএস) এবং অন্যান্য নন-ক্যাডার পরীক্ষার প্রশ্নপত্র ফাঁস নিয়ে যে প্রতিবেদন প্রচার করেছে সে বিষয়ে পিএসসির দৃষ্টি আকৃষ্ট হয়েছে। গত এক যুগে বিসিএসসহ ৩০টি নিয়োগ পরীক্ষার প্রশ্নপত্র ফাঁস হয়েছে বলে প্রতিবেদনে উল্লেখ করা হয়েছে। 

“বাস্তবতা হলো, গত ১২ বছরে পিএসসিতে অনুষ্ঠিত বিসিএস ক্যাডার ও নন-ক্যাডার পরীক্ষা সম্পর্কে কোনো মহল থেকে কখনোই কোনো ধরনের অভিযোগ বা অনুযোগ ছিল না বিধায় এটি প্রমাণিত যে, ঐ সকল পরীক্ষা সুষ্ঠুভাবে অনুষ্ঠিত হয়েছে। এ সময়ে অনুষ্ঠিত বিসিএস ক্যাডার ও নন-ক্যাডার পরীক্ষার প্রশ্নপত্র ফাঁসের বিষয়ে নতুন করে কোনোরূপ অভিযোগ উত্থাপনের অবকাশ নেই।”

প্রেস বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়, প্রতিবেদনে গত ১২ বছরে সুষ্ঠুভাবে অনুষ্ঠিত এ সব পরীক্ষার বিষয়ে বিরূপ প্রচার সাংবিধানিক প্রতিষ্ঠান হিসাবে পিএসসির ভাবমূর্তি ও মর্যাদা ক্ষুণ্ন করেছে। গত ৫ জুলাই অনুষ্ঠিত রেলপথ মন্ত্রণালয়ের অধীন বাংলাদেশ রেলওয়ের নন-ক্যাডার উপসহকারী প্রকৌশলী পদের নিয়োগ পরীক্ষার প্রশ্নপত্র ওদিন পরীক্ষা শুরুর এক ঘণ্টা আগে প্রতিবেদকের হোয়াটসঅ্যাপে আসে বলে প্রতিবেদনে উল্লেখ করা হয়েছে। 

“স্বচ্ছতা নিশ্চিতকরণ ও প্রশ্নপত্র ফাঁস রোধে প্রতিটি বিসিএস ক্যাডার পরীক্ষায় ন্যূনতম ৬ সেট প্রশ্নপত্র এবং নন-ক্যাডার পরীক্ষায় ন্যূনতম ৪ সেট প্রশ্নপত্র প্রণয়ন করা হয়। কোন সেটে পরীক্ষা অনুষ্ঠিত হবে তা নির্ধারণ করতে পরীক্ষা শুরুর ৩০ থেকে ৩৫ মিনিট পূর্বে লটারি করা হয়। বিসিএস ক্যাডার পরীক্ষার ক্ষেত্রে লটারির সময় দেশের প্রথিতযশা দুইজন নাগরিক, কমিশনের চেয়ারম্যান, দায়িত্বপ্রাপ্ত সদস্য ও পরীক্ষা সংশ্লিষ্ট সদস্যসহ কর্মকর্তা/কর্মচারীগণ উপস্থিত থাকেন। একইভাবে, নন-ক্যাডার পরীক্ষার ক্ষেত্রে কমিশনের চেয়ারম্যান, দায়িত্বপ্রাপ্ত সদস্য ও পরীক্ষা সংশ্লিষ্ট সদস্যসহ কর্মকর্তা/কর্মচারীগণ উপস্থিত থাকেন।”

এতে আরও বলা হয়, গত ৫ জুলাই বাংলাদেশ রেলওয়ের নন-ক্যাডার “উপসহকারী প্রকৌশলী” পদের নিয়োগ পরীক্ষার ক্ষেত্রে একই নিয়ম অনুসরণ করে সকাল ৯টা ২৫ মিনিটে লটারি করে কোন্ সেটের প্রশ্নপত্রে পরীক্ষা হবে সে বিষয়টি সকাল ৯টা ৩০ মিনিটে সংশ্লিষ্টদের এসএমএস-এর মাধ্যমে জানিয়ে দেয়া হয়। এ কারণে কোন সেট প্রশ্নপত্রে পরীক্ষা হবে তা পরীক্ষা শুরুর এক ঘণ্টা আগে কারোরই জানার সুযোগ নেই। 

“কমিশনের আওতাভুক্ত পরীক্ষার প্রশ্নপত্র প্রণয়ন, প্রশ্নপত্র সমীক্ষণ ও মুদ্রণ সর্বোচ্চ সতর্কতার সাথে করা হয় এবং তা যথাযথভাবে সংরক্ষণ করা হয়। এ সব কারণে পরীক্ষা শুরুর পূর্বে প্রশ্নপত্র ফাঁস হওয়ার সম্ভাবনা থাকে না বললেই চলে।”

প্রেস বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়, প্রশ্নপত্র ফাঁসের বিষয়টি যে কোনো ব্যক্তির নজরে আসার সাথে সাথে যথাযথ কর্তৃপক্ষকে অবহিত করলে সে বিষয়ে কর্তৃপক্ষের তাৎক্ষণিক ব্যবস্থা গ্রহণের সুযোগ থাকে। কিন্তু পরীক্ষা অনুষ্ঠানের দুইদিন পরেওই চ্যানেল কর্তৃক প্রশ্নপত্র ফাঁসের অভিযোগের বিষয়টি যথাযথ কিনা তা নিশ্চিত হওয়ার কোনো সুযোগ নেই। 

“পিএসসির কার্যক্রম ও নিয়োগ প্রক্রিয়া সম্পর্কে বাংলাদেশের শিক্ষিত তরুণ সমাজসহ জনমনে সুদৃঢ় আস্থা ও বিশ্বাস রয়েছে। পিএসসির নিয়োগ সংক্রান্ত কার্যক্রম সকল মহলে প্রশংসিত হচ্ছে। সেই আস্থা ও বিশ্বাস সমুন্নত রাখার লক্ষ্যে যথাসময়ে অভিযোগ না হওয়া সত্ত্বেও যদি কোনো ব্যক্তি বা ব্যক্তিবর্গ গত ৫ জুলাই অনুষ্ঠিত পরীক্ষার প্রশ্নপত্র ফাঁস বা প্রতারণা বা অন্য কোনো অবৈধ কার্যক্রমের সাথে জড়িত প্রমাণ হয়, তাহলে কমিশন সংশ্লিষ্টের বিষয়ে আইনানুগ ব্যবস্থা গ্রহণে দৃঢ় প্রতিজ্ঞ।”


সর্বশেষ সংবাদ