পিএসসির বার্ষিক প্রতিবেদন

বিসিএস ক্যাডারে অবিবাহিতদের দাপট বাড়ছেই

  © টিডিসি ফটো

বর্তমানে বিসিএস পরীক্ষার মাধ্যমে সরকারি চাকরি পাওয়াকে অনেকে ‘সোনার হরিণ’ বলে থাকেন। এই চাকরিতে কারা বেশি প্রবেশ করছেন— বিবাহিত নাকি অবিবাহিতরা? প্রতিবার বিসিএসের চূড়ান্ত ফলাফল প্রকাশের পর ‘সাফল্যের কারণ’ হিসেবে সবচেয়ে বড় আকারে এই প্রশ্নটি সামনে আসে। স্বামী-স্ত্রী দুজনেই একসঙ্গে বিসিএস ক্যাডার, স্ত্রীর অনুপ্রেরণায় স্বামী বিসিএস ক্যাডার— সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে এমন আলোচনায় মেতে উঠেন নেটিজেনরা। এ কারণে বিসিএস নামক এই ‘সোনার হরিণ’ ধরতে বিয়ে করার পরামর্শও দেন অনেকেই।

তবে বাংলাদেশ সরকারি কর্মকমিশনের (পিএসসি) বার্ষিক প্রতিবেদনে এই তথ্যটি পুরোটাই উল্টো। কমিশনের সর্বশেষ প্রতিবেদনের তথ্য বলছে, বিসিএস ক্যাডারে অবিবাহিতদের দাপট বাড়ছেই। সর্বশেষ ৫টি বিসিএসের ফলের পরিসংখ্যান থেকে অবিবাহিতদের এগিয়ে থাকার এই তথ্য পাওয়া গেছে।

আরও পড়ুন: বিশেষ বিসিএসে প্রায় অর্ধেকই নারী, সাধারণে এগিয়ে পুরুষ প্রার্থীরা

সর্বশেষ ৫টি বিসিএসের মধ্যে ২টি বিশেষ এবং বাকি ৩টি সাধারণ। পিএসসির বার্ষিক প্রতিবেদন তথ্য বলছে, সাধারণ বিসিএসগুলোতে যেখানে চাকরি পাওয়া প্রার্থীদের ৮৫ শতাংশ পর্যন্ত অবিবাহিত, সেখানে বিশেষ বিসিএসে চাকরি পাওয়া প্রার্থীদের প্রায় ৫৬ শতাংশ অবিবাহিত। যদিও বিসিএস পরীক্ষার যোগ্য আবেদনকারীর মধ্যে অবিবাহিত প্রার্থী তুলনামূলক বেশি।

সূত্র: পিএসসির বার্ষিক প্রতিবেদন-২০২২

পিএসসির সর্বশেষ বার্ষিক প্রতিবেদনে দেখা গেছে, সুপারিশকৃত প্রার্থীদের মধ্যে ৩৭তম বিসিএস, ৩৮তম বিসিএস, ৩৯তম (বিশেষ) বিসিএস ৪০তম বিসিএস ও ৪২তম (বিশেষ) বিসিএস থেকে বিবাহিত প্রার্থী যথাক্রমে ২০২ (১৫.৩৮%) জন, ৩৫২ (১৫.৯৭%) জন, ২ হাজার ৯৮০ (৪৩.৮৮%) জন, ২৮৬ (১৪.৫৭%) জন, ১ হাজার ৮২৬ (৪৫.৬৫% ) জন।

অন্যদিকে অবিবাহিত প্রার্থী যথাক্রমে ১১১১ (৮৪.৬২%) জন, ১৮৫২ (৮৪.০৩%) জন, ৩ হাজার  ৮১২ (৫৬.১২%) জন, ১ হাজার ৬৭৭ (৮৫.৪৩%) জন এবং ২ হাজার  ১৭৪ (৫৪.৩৫%) জন।

প্রতিবেদন বিশ্লেষণ করলে দেখা যায় যে, ৪২তম (বিশেষ) বিসিএস থেকে বিবাহিত প্রার্থী তুলনামূলক বেশি অর্থাৎ ৪৫.৬৫% এবং ৪০তম বিসিএস থেকে বিবাহিত প্রার্থী তুলনামূলক কম অর্থাৎ ১৪.৫৭% সুপারিশ পেয়েছেন।

অন্যদিকে, ৪০তম বিসিএস থেকে অবিবাহিত প্রার্থী তুলনামূলক বেশি অর্থাৎ ৮৫.৪৩% এবং ৪২তম (বিশেষ) বিসিএস থেকে অবিবাহিত প্রার্থী তুলনামূলক কম অর্থাৎ ৫৪.৩৫% সুপারিশ পেয়েছেন।

অন্যদিকে প্রতিবেদন বিশ্লেষণ করলে দেখা যায়, বিসিএস পরীক্ষায় যোগ্য আবেদনকারীর মধ্যে ৩৭তম বিসিএস, ৩৮তম বিসিএস, ৩৯তম (বিশেষ) বিসিএস, ৪০তম বিসিএস ও ৪২তম (বিশেষ) বিসিএসে বিবাহিত প্রার্থী যথাক্রমে ৫১ হাজার ৬৭৯ (২১.৩৫%) জন, ৮১ হাজার ১১৬ (২৩.৪১%) জন, ১৬ হাজার ৪১৬ (৪৩.৬৯%) জন, ৯৬ হাজার ৫২ (২৩.৩০%) জন ও ১৪ হাজার ৯১8 (৪৮.০৭%) জন।

অবিবাহিত প্রার্থী যথাক্রমে ১ লাখ ৯১ হাজার ৪৩৬ (৭৮.৬৫%) জন, ২ লাখ ৬৫ হাজার ৩২৪ (৭৬.৫৯%) জন, ২ লাখ ১১ হাজার ৬৬০ (৫৬.৩১%) জন, ৩ লাখ ১৬ হাজার ১৬৩ (৭৬.৭০%) ও ১৬ হাজার ১১২ (৫১.৯৩%) জন।

বিশ্লেণে আরও দেখা যায়, ৪২তম (বিশেষ) বিসিএসে বিবাহিত প্রার্থী তুলনামূলক বেশি অর্থাৎ ৪৮.০৭% এবং ৩৭তম বিসিএসে বিবাহিত প্রার্থী তুলনামূলক কম অর্থাৎ ২১.৩৫% আবেদন করেছেন।

অন্যদিকে ৩৭তম বিসিএসে অবিবাহিত প্রার্থী তুলনামূলক বেশি অর্থাৎ ৭৮.৬৫% এবং ৪২তম (বিশেষ) বিসিএসে অবিবাহিত প্রার্থী। তুলনামূলক কম অর্থাৎ ৫১.৯৩% আবেদন করেছেন।

গত ফেব্রুয়ারির শেষের দিকে কমিশনের চেয়ারম্যান মো. সোহরাব হোসাইনের নেতৃত্বে একটি প্রতিনিধি দল বঙ্গভবনে সদ্য বিদায়ী রাষ্ট্রপতি মো. আবদুল হামিদের কাছে কমিশনের বার্ষিক প্রতিবেদন-২০২২ পেশ করেছিলেন। সাক্ষাৎকালে পিএসসির সদস্যরা এবং রাষ্ট্রপতির কার্যালয়ের সচিবরা উপস্থিত ছিলেন।


সর্বশেষ সংবাদ