নর্দান বিশ্ববিদ্যালয় ছাত্রের আত্মহত্যা, প্রেমিকাকে খুঁজছে পুলিশ
- টিডিসি রিপোর্ট
- প্রকাশ: ২৪ জুন ২০২২, ১২:১৮ AM , আপডেট: ২৪ জুন ২০২২, ০১:০১ AM
খুলনায় বেসরকারি নর্দান বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থী প্রমিজ নাগের (২২) ঝুলন্ত লাশ উদ্ধারের একদিন পর আত্মহত্যার প্ররোচনার মামলা দায়ের হয়েছে। নিহতের চাচাতো ভাই প্রীতিশ কুমার নাগ বাদী হয়ে বৃহস্পতিবার (২৩ জুন) সোনাডাঙ্গা মডেল থানায় এ মামলা দায়ের করেন।
বুধবার (২২ জুন) নগরীর সোনাডাঙ্গা মডেল থানার গোবরচাকা প্রধান সড়কের গোল্ডেন গলির একটি বাড়ি থেকে প্রমিজের ঝুলন্ত লাশ উদ্ধার করা হয়। ঘটনার পর প্রেম নিয়ে বিরোধের জেরে সে প্রাণ দেয় বলে অভিযোগ উঠেছে। এ ঘটনায় প্রমিজের প্রেমিকাকে খুঁজছে পুলিশ। প্রমিজ নাগ পিরোজপুর জেলার নাজিরপুর উপজেলার সাচিয়া গ্রামের জোতিন্ময় নাগের ছেলে।
সোনাডাঙ্গা মডেল থানার পরিদর্শক (তদন্ত) মো. নাহিদ হাসান মৃধা বলেন, বুধবার পুলিশ লাশ উদ্ধার ও সুরতহাল প্রতিবেদন তৈরি করে। একইসঙ্গে ময়নাতদন্তের জন্য লাশ খুলনা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের মর্গে পাঠায়। বৃহস্পতিবার ময়নাতদন্ত শেষে লাশ তার পরিবারের সদস্যদের কাছে হস্তান্তর করা হয়। এদিকে ঘটনার পর থেকেই পুলিশ এ মৃত্যুর রহস্য উদঘাটনে তৎপর রয়েছে।
তিনি আরও বলেন, প্রমিজ নাগের মৃত্যুর ঘটনায় তার চাচাতো ভাই প্রীতিশ নাগ বাদী হয়ে আত্মহত্যা প্ররোচনার মামলা দায়ের করেছেন। পুলিশ এ ঘটনা গুরুত্বের সঙ্গে নিয়ে তদন্ত করছে।
আরও পড়ুন: ভাড়া বাসায় নর্দান বিশ্ববিদ্যালয় ছাত্রের আত্মহত্যা
নর্দান বিশ্ববিদ্যালয় খুলনার রেজিস্ট্রার ড. মোহাম্মদ শাহ আলম বলেন, প্রমিজ নাগ নর্দান ইউনিভার্সিটির সাংবাদিকতা ও গণযোগাযোগ বিভাগের পঞ্চম সেমিস্টারের ছাত্র ছিলেন। তিনি গোবরচাকার সালাম হাওলাদারের বাড়ির চতুর্থ তলার ভাড়াটিয়া হিসেবে বসবাস করতেন। বুধবার বিকাল সাড়ে ৪টার দিকে পাশের ফ্লাটে অবস্থানরত সহপাঠীরা তাকে ফ্যানের হুকের সঙ্গে ঝুলে থাকতে দেখেন। এ অবস্থা দেখে তারা ঘরের দরজা ভেঙে উদ্ধার করে তাকে দ্রুত খুলনা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে নিয়ে যান। পরে হাসপাতারের কর্তব্যরত চিকিৎসক তাকে মৃত ঘোষণা করেন।
রেজিস্ট্রার আরও বলেন, আমরা ক্যাম্পাসে সর্বোচ্চ শৃঙ্খলা বজায় রাখতে সবসময়ই চেষ্টা করি। প্রেমঘটিত সমস্যায় ক্যাম্পাসের কোনও শিক্ষার্থীর এ ধরনের মৃত্যু এটাই প্রথম। আগামীতে যাতে এ ধরনের ঘটনা আর না ঘটে, সে জন্য আমরা প্রতিটি ক্লাসে সচেতনতামূলক কার্যক্রম জোরদার করেছি। নিয়মিত পাঠদানের পাশাপাশি এ বিষয়টি গুরুত্বের সঙ্গেই দেখা হবে।
এদিকে বিশ্ববিদ্যালয়ের খুলনার ক্যাম্পাসের সাংবাদিকতা ও গণযোগাযোগ বিভাগের প্রভাষক মতিউর রহমান বলেন, প্রমিজ নাগের মৃত্যুর খবর পেয়ে তাৎক্ষণিক সেখানে ছুটে যাই। হাসপাতালে গিয়ে তার মরদেহ পর্যবেক্ষণ করি। পরে জানতে পারি, বিশ্ববিদ্যালয়ের এক শিক্ষার্থীর সঙ্গে তার প্রেমের সম্পর্ক ছিল। এর জের ধরে দুইজনের মধ্যে মতভেদ হয়। প্রমিজের লাশ উদ্ধারের সময় ওই ছাত্রীও ঘটনাস্থলে ছিল বলে জানান তিনি।
এ বিষয়ে সোনাডাঙ্গা থানার এসআই হরষিৎ মণ্ডল বলেন, ওই বাড়ির সিসিটিভি ফুটেজ পর্যালোচনা করা হচ্ছে। সিসিটিভি ফুটেজে দেখা গেছে ওই সময় ঘটনাস্থল থেকে এক তরুণী ছুটে বেরিয়ে যায়। তাকে শনাক্ত করা হয়েছে। কিন্তু এখনও তার সন্ধান মেলেনি।