পূর্ণ উপাচার্য নিয়োগ ছাড়াই চলছে গণ বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষা কার্যক্রম

গণ বিশ্ববিদ্যালয়ের লোগো এবং উপাচার্য অধ্যাপক ডা. লায়লা পারভীন বানু
গণ বিশ্ববিদ্যালয়ের লোগো এবং উপাচার্য অধ্যাপক ডা. লায়লা পারভীন বানু  © ফাইল ফটো

উপাচার্য হিসেবে নিয়োগ প্রাপ্তির যোগ্যতা নিয়ে আপত্তি থাকায় বিশ্ববিদ্যালয় মঞ্জুরী কমিশন (ইউজিসি) ও রাষ্ট্রপতি কর্তৃক পূর্ণ উপাচার্য হিসেবে নিয়োগ না পেয়ে কখনো ভারপ্রাপ্ত, কখনো চলতি দায়িত্ব পদে বহাল থেকেই মেয়াদের পুরো চার বছর পার হয়েছে সাভারের গণ বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য (চলতি দায়িত্ব) অধ্যাপক ডা. লায়লা পারভীন বানুর।

বিশ্ববিদ্যালয়ের ট্রাস্টি বোর্ড ২০১৭ সালের ১৫ মার্চ ডা. লায়লা পারভীনকে ভারপ্রাপ্ত উপাচার্য হিসেবে নিয়োগ দেয়। একই বছর ৯ আগস্ট ইউজিসি এক চিঠিতে তাঁকে ওই পদে মেনে নিতে অস্বীকৃতি জানায়।

বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ ইউজিসির ওই চিঠির বৈধতা চ্যালেঞ্জ করে তখন হাইকোর্টে রিট করে। ২০১৯ সালের ৪ এপ্রিল বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয় আইন-২০১০-এর ৩১ ধারা অনুযায়ী ৬০ দিনের মধ্যে গণ বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য পদে অধ্যাপক ডা. লায়লা পারভীন বানুকে নিয়োগে সহায়তা দানের নির্দেশ দিয়েছিলেন হাইকোর্ট। তবে ইউজিসির ফের আপিল করায় তা আবার আটকে যায়, যা এখনো চলমান রয়েছে।

চার বছরে কোনো সমাবর্তন হয়নি। ইউজিসির ওয়েবসাইটে উপচার্যের পদ শূন্য থাকায় শিক্ষার্থীদের নানা বিড়ম্বনায় পড়তে হয়, যা একপর্যায়ে শিক্ষার্থীদের আন্দোলনের মুখে ঠেলে দেয়। ক্লাস-পরীক্ষা বর্জন করে বৈধ উপাচার্যের দাবিতে ২০১৯ সালের এপ্রিল মাস থেকে লাগাতার ৬৮ দিন আন্দোলন করেন শিক্ষার্থীরা। বিশ্ববিদ্যালয়ের পক্ষ থেকে খুব দ্রুত সমস্যা সমাধানের আশ্বাসে আন্দোলন বন্ধ করলেও মেয়াদকালের শেষ দিনেও কোনো সমাধান আসেনি।

পূর্ণ উপাচার্যের দাবিতে আন্দোলনকারী শিক্ষার্থীদের নিয়ে গড়ে ওঠা সংগঠন গণ বিশ্ববিদ্যালয় সাধারণ ছাত্র পরিষদের সভাপতি মো. রনি আহম্মেদ। তিনি বলেন, ‘ম্যাম চলতি বা ভারপ্রাপ্ত দায়িত্ব পালনকালে শিক্ষার্থীদের অনেক সমস্যায় পড়তে হয়েছে। বৈধতা না থাকায় শিক্ষার্থীরা মূল সনদ পায়নি, বিদেশে পড়াশোনার ক্ষেত্রে বাধাগ্রস্ত হয়েছে, সমাবর্তন পায়নি।’

গণ বিশ্ববিদ্যালয় কেন্দ্রীয় ছাত্র সংসদের বিদায়ী সাধারণ সম্পাদক (জিএস) মো. নজরুল ইসলাম রলিফ বলেন, ‘ভিসি হিসেবে ম্যাম অনেক ক্ষেত্রেই অনেক বাঁধার মুখোমুখি হয়েছেন। সাধারণ শিক্ষার্থীরা বৈধ উপাচার্যের দাবিতে টানা ৬৮ দিন আন্দোলন করল। উনার পদত্যাগ চাইল। দীর্ঘদিন ক্যাম্পাস বন্ধ থাকায় শিক্ষার্থীদের ব্যাপক ক্ষতি হয়। কিন্তু স্থায়ী কোনো সমাধান হয়নি। উনি একজন মুক্তিযোদ্ধা, ব্যক্তি হিসেবেও তাঁর কোনো সমস্যা নেই। তবে আমরা চাই একজন পূর্ণাঙ্গ উপাচার্য। উনি পূর্ণাঙ্গ উপাচার্য হিসেবে আসলে শিক্ষার্থীরা উনাকেও খুব ভালোভাবে গ্রহণ করবে।’

গণ বিশ্ববিদ্যালয় কেন্দ্রীয় ছাত্র সংসদের বিদায়ী সহ-সভাপতি (ভিপি) মো. জুয়েল রানা বলেন, ‘ম্যাম মানুষ হিসেবে সৎ। ছলচাতুরি বুঝেন না, করেনও না। তবে ক্যাম্পাসের সব কিছুতেই তার ভূমিকা ছিল খুবই ক্ষীণ! তাই উনার মেয়াদকালে শিক্ষার্থীরা পূর্ণ উপাচার্যের দাবিতে আন্দোলন করলো। দীর্ঘ সময় শিক্ষার্থীদের ক্লাস, প্রশাসনিক কাজসহ প্রায় সব কিছুই বন্ধ হয়ে গিয়েছিল। এমনকি শিক্ষার্থীদের একটা সেমিস্টারের প্রায় অর্ধেক সময় গ্যাপ হয়ে গেল! এতে কিন্তু ক্ষতিটা শিক্ষার্থীদেরই হল। আগে অস্বচ্ছল শিক্ষার্থীরা বিভিন্নভাবে যে আর্থিক সহযোগিতা পেত, তার সবই এই সময়ে প্রায় বাতিল হয়ে গেছে।’

জানতে চাইলে বিশ্ববিদ্যালয়ের ট্রাস্টি বোর্ডের সভাপতি অধ্যাপক সিরাজুল ইসলাম চৌধুরী বলেন, ‘এ বিষয়ে আমি কিছু বলতে পারবো না।’

তবে অধ্যাপক ডা. লায়লা পারভীন বানু বলেন, ‘উপাচার্য হিসেবে আমাকে অ্যাপয়েন্ট করেছে ট্রাস্টি বোর্ড। ট্রাস্টি ছাড়া উপাচার্য আসতে পারে না। আমার নিয়োগ কিভাবে হলো, মেয়াদ শেষ কবে হবে, এটা তারা বলবে।’


সর্বশেষ সংবাদ

×
  • Application Deadline
  • December 17, 2025
  • Admission Test
  • December 19, 2025
APPLY
NOW!
GRADUATE ADMISSION
SPRING 2026!
NORTH SOUTH UNIVERSITY
Center of Excellence