গোল্ড মেডিলিস্ট ব্র্যাক ছাত্রী

‘হ্যাঁ!, আজ বলতে পারি—আমি শ্রেয়সি কর্মকার, তাপস কর্মকারের মেয়ে’

শ্রেয়সী কর্মকার
শ্রেয়সী কর্মকার  © টিডিসি ফটো

ব্র্যাক ইউনিভার্সিটির ১৭তম সমাবর্তনে আবেগঘন মুহূর্তে নিজের অর্জন ও অনুপ্রেরণার কথা জানালেন স্কুল অব ল-এর শিক্ষার্থী শ্রেয়সী কর্মকার। বৃহস্পতিবার (২৭ নভেম্বর) মেরুল বাড্ডায় অবস্থিত বিশ্ববিদ্যালয়ের পরিবেশবান্ধব ও অত্যাধুনিক ইনার সিটি ক্যাম্পাসে অনুষ্ঠিত এই বর্ণাঢ্য সমাবর্তনে অংশ নেন তিনি।

করোনাকালীন সময়ে অনলাইনে বিশ্ববিদ্যালয় জীবন শুরু করলেও দৃঢ় অধ্যবসায়, নিয়মিত ক্লাস ও অকুণ্ঠ পরিশ্রম শ্রেয়সীকে গোল্ড মেডেল অর্জনের পথে এগিয়ে নিয়ে আসে। বাবাকে হারানোর ব্যক্তিগত বেদনা নিয়েও এগিয়ে চলা মেধাবী শিক্ষার্থী বলেন, ‘হ্যাঁ, আজ বলতে পারি—আমি শ্রেয়সী কর্মকার, তাপস কর্মকারের মেয়ে।’

এবারের সমাবর্তনের প্রতিপাদ্য ছিল ‘Make the Difference’। এটি ব্র্যাক ইউনিভার্সিটির ইনার সিটি ক্যাম্পাসে প্রথম সমাবর্তন। উৎসবমুখর ও জমকালো এ সমাবর্তনে ৩৪টি প্রোগ্রামের মোট ২ হাজার ৫৫ জন শিক্ষার্থী অংশগ্রহণ করেন।

শ্রেয়সী কর্মকার বলেন, ‘আমার যাত্রা শুরু হয়েছিল স্প্রিং ২০২১-এ। তখন করোনার কারণে সবাই ঘরবন্দী। আমার বিশ্ববিদ্যালয় জীবনও অনলাইনে শুরু হয়েছিল। অনেকে অনলাইনে পড়েই গ্র্যাজুয়েশন সম্পন্ন করেছেন, কিন্তু আমি সুযোগ পেয়েছি মূল ক্যাম্পাসে এসে নিজের স্বপ্ন পূরণের। এটি আমার জন্য বিশেষ একটি মুহূর্ত।’

ভবিষ্যতের শিক্ষার্থীদের উদ্দেশ্যে তিনি আরও বলেন, ‘অধ্যবসায় থাকা খুবই গুরুত্বপূর্ণ। কোনো কিছুই ছোট করে দেখা যাবে না। যদি কোনো সুযোগ পাওয়া যায়, সেটা ধরে রাখতে হবে। আমি সবসময় ক্লাস করেছি, বিভিন্ন বিষয়ে প্রশ্ন করেছি। আমার শিক্ষকরা আমাকে সেই কারণে চেনেন। তাই বলব লেগে থাকতে হবে। খারাপ কোনো দিন বা মুহূর্তে মন ভেঙে পড়লে চলবে না। সবসময় নিজেকে অনুপ্রাণিত করতে হবে এবং বলুন হ্যাঁ, আমাকে এটা করতেই হবে।’

শ্রেয়সী আরও ব্যক্তিগত অভিজ্ঞতা শেয়ার করেন, ‘আমি ২০২০ সালে আমার বাবাকে হারিয়েছি, তখনই গ্র্যাজুয়েশন প্রোগ্রামে ভর্তি হয়েছিলাম। বাবা ছিলেন না, মা ছিলেন। তাই সবসময় চেষ্টা করেছি যেন বাবা-মায়ের জন্য কিছু গর্বের কাজ করতে পারি। যদিও বাবা এটি দেখতে পারেননি, আমি জানি তিনি আমার কৃতিত্বে খুব খুশি হতেন। আমার শৈশব থেকেই তিনি আমার অনুপ্রেরণা। বাবা সবসময় বলতেন, ‘মানুষ যেন তোকে আমার তাপস কর্মকারের নাম দিয়ে চেনে।’ আজ আমি বলতে পারি—আমি শ্রেয়সী কর্মকার, তাপস কর্মকারের মেয়ে। এটিই আমার সবচেয়ে বড় অর্জন।’

সমাবর্তন অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত হয়ে চ্যান্সেলর গোল্ড মেডেল প্রদান করেন বাংলাদেশ সরকারের বিদ্যুৎ, জ্বালানি ও খনিজ সম্পদ মন্ত্রণালয়ের উপদেষ্টা মুহাম্মদ ফাওজুল কবির খান। এছাড়াও শিক্ষার্থীদের ভাইস-চ্যান্সেলর গোল্ড মেডেল তুলে দেন ব্র্যাক ইউনিভার্সিটির ভাইস-চ্যান্সেলর প্রফেসর সৈয়দ ফারহাত আনোয়ার।

অনুষ্ঠানে সমাবর্তন বক্তা হিসেবে উপস্থিত ছিলেন সোয়াস ইউনিভার্সিটি অফ লন্ডনের ভাইস-চ্যান্সেলর এবং দক্ষিণ বর্ণবাদবিরোধী আন্দোলনের নেতা অ্যাডাম হাবিব।

আরও উপস্থিত ছিলেন ব্র্যাক ইউনিভার্সিটির বোর্ড অফ ট্রাস্টিজের চেয়ারপারসন তামারা হাসান আবেদ এবং বাংলাদেশ বিশ্ববিদ্যালয় মঞ্জুরি কমিশনের (ইউজিসি) সদস্য প্রফেসর এম আনোয়ার হোসেন। এছাড়াও অনুষ্ঠানে ভ্যালেডিক্টোরিয়ানের বক্তব্য দেন চ্যান্সেলরের গোল্ড মেডেলপ্রাপ্ত রানা তাবাসসুম।

অনুষ্ঠানের শেষে ধন্যবাদ জ্ঞাপন করে বক্তব্য দেন সমাবর্তন কমিটির চেয়ার ও বিশ্ববিদ্যালয়ের কম্পিউটার সায়েন্স অ্যান্ড ইঞ্জিনিয়ারিং বিভাগের চেয়ারপারসন ড. সাদিয়া হামিদ কাজী।


সর্বশেষ সংবাদ

×
  • Application Deadline
  • December 17, 2025
  • Admission Test
  • December 19, 2025
APPLY
NOW!
GRADUATE ADMISSION
SPRING 2026!
NORTH SOUTH UNIVERSITY
Center of Excellence