নর্থ সাউথ ইউনিভার্সিটিতে ‘মানবাধিকার এবং জাতীয় নিরাপত্তা’ শীর্ষক আলোচনা সভা

‘মানবাধিকার এবং জাতীয় নিরাপত্তা: উন্মুক্ত সমাজে উন্মুক্ত কণ্ঠস্বর কেন প্রয়োজন’ শীর্ষক আলোচনাসভায়
‘মানবাধিকার এবং জাতীয় নিরাপত্তা: উন্মুক্ত সমাজে উন্মুক্ত কণ্ঠস্বর কেন প্রয়োজন’ শীর্ষক আলোচনাসভায়  © সংগৃহীত

নর্থ সাউথ ইউনিভার্সিটির (এনএসইউ) মানবিক এবং সামাজিক বিজ্ঞান অনুষদ ১৩ নভেম্বর ২০২৫ ‘মানবাধিকার এবং জাতীয় নিরাপত্তা: উন্মুক্ত সমাজে উন্মুক্ত কণ্ঠস্বর কেন প্রয়োজন’ শীর্ষক আলোচনা সভার আয়োজন করে।

অনুষদের লেকচার সিরিজের অংশ হিসেবে অনুষ্ঠিত এই আলোচনা সভাটি বিশ্ববিদ্যালয়ের মুট কোর্টে অনুষ্ঠিত হয়। আলোচনায় মূল বক্তা ছিলেন সুইডেনের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের মানবাধিকার, গণতন্ত্র এবং আইনের শাসন বিষয়ক রাষ্ট্রদূত ইরিনা শোলগিন নিওনি। বিশ্ববিদ্যালয়ের মাননীয় কোষাধ্যক্ষ ও উপ-উপাচার্য (ভারপ্রাপ্ত) অধ্যাপক আবদুর রব খানের সঞ্চালনা ও সভাপতিত্বে  আলোচনা সভাটি অনুষ্ঠিত হয়। 

বিশ্ববিদ্যালয়ের মানবিক এবং সামাজিক বিজ্ঞান অনুষদের ডিন অধ্যাপক রিজওয়ানুল ইসলাম তাঁর উদ্বোধনী বক্তব্যে অতিথিদের তাঁদের উপস্থিতির মাধ্যমে অনুষ্ঠানকে অর্থবহ করার জন্য কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করেন। এছাড়াও তিনি জাতীয় স্থিতিশীলতা নিশ্চিত করার জন্য গণতান্ত্রিক প্রতিষ্ঠানগুলোর শক্তিশালীকরণ এবং উন্মুক্ত আলোচনার প্রয়োজনীয়তার কথা তুলে ধরেন।

গণতন্ত্র, মানবাধিকার এবং আইনের শাসন সম্পর্কিত সুইডেনের বৈদেশিক নীতির অগ্রাধিকারের একটি সারসংক্ষেপ প্রদান করে সন্মানিত রাষ্ট্রদূত তার উপস্থাপনা শুরু করেন। তাঁর বক্তব্যে তিনি জাতীয় এবং রাষ্ট্রীয় নিরাপত্তার জন্য  নাগরিক সমাজে ঐক্যবদ্ধতা, মতপ্রকাশের স্বাধীনতা এবং জেন্ডার সমতার গুরুত্ব এবং উন্নয়ন কর্মকাণ্ডে সহযোগিতা এবং রাজনৈতিক সংলাপের মাধ্যমে মানবাধিকার নিশ্চিতকরণের জন্য সুইডেনের প্রতিশ্রুতি তুলে ধরেন। বিশেষতঃ তিনি নারী অধিকার, গণমাধ্যমের স্বাধীনতা এবং আইনের শাসন ব্যবস্থা শক্তিশালীকরণের উপর দৃষ্টি নিবদ্ধ করেন। তিনি মতপ্রকাশ করেন, কণ্ঠস্বর সীমাবদ্ধ করে নয়, বরং সকল নাগরিকের, বিশেষ করে নারী এবং সংখ্যালঘুদের, জনজীবনে অংশগ্রহণের অধিকার এবং সামর্থ্য নিশ্চিত করার মাধ্যমে জাতীয় নিরাপত্তা নিশ্চিত করা সম্ভব। 

রাষ্ট্রদূত ইরিনা শোলগিন নিওনি বলেন, “উন্মুক্ত সমাজ উন্মুক্ত কণ্ঠস্বরের উপর নির্ভর করে। মতপ্রকাশের স্বাধীনতা কোনও বিলাসিতা নয় - এটি গণতন্ত্রের ভিত্তি এবং জাতীয় স্থিতিশীলতার মূল চাবিকাঠি। মানবাধিকারকে সম্মান করা হলে সমাজ আরও শক্তিশালী, নিরাপদ এবং ঐক্যবদ্ধ হয়। আমরা দেখেছি বাংলাদেশে কিভাবে তরুণদের সাহস এবং সম্পৃক্ততা এই উন্মুক্ততাকে সমুন্নত রাখতে পারে এবং গণতন্ত্রের প্রতি আস্থা সৃষ্টি করতে পারে।”

প্রশ্নোত্তর পর্বে শিক্ষকমণ্ডলী, শিক্ষার্থীবৃন্দ ও শ্রোতাগণ পরিবর্তনশীল বিশ্বে মানবাধিকার সমুন্নত রাখার বাস্তব চ্যালেঞ্জ, গণতন্ত্রের স্তম্ভ হিসেবে লিঙ্গ সমতা প্রচারে শিক্ষার ভূমিকা এবং আইনের শাসনের সর্বোত্তম অনুশীলন নিয়ে অতিথি বক্তার সাথে আলোচনা করেন।  

অধ্যাপক আবদুর রব খান আলোচনার সমাপ্তি টেনে বলেন, এই আলোচনা একটি সুস্থ, অংশগ্রহণমূলক গণতন্ত্র এবং দীর্ঘমেয়াদী জাতীয় স্থিতিশীলতার মধ্যে গুরুত্বপূর্ণ যোগসূত্র স্পষ্ট করতে সাহায্য করেছে। উন্নত রাষ্ট্র গঠনের জন্য তিনি শিক্ষা ও 'উন্মুক্ত কণ্ঠস্বর' সহজতর করার উপর জোর দেন।  অনুষ্ঠান শেষে রাষ্ট্রদূত ইরিনা শোলগিন নর্থ সাউথ ইউনিভার্সিটির ক্যাম্পাস পরিদর্শন করেন এবং শিক্ষার্থীদের সাথে বিভিন্ন বিষয়ে মতবিনিময় করেন। 


সর্বশেষ সংবাদ