স্ত্রীকে তালাক দেওয়ার দুদিন পর ড্যাফোডিল শিক্ষার্থীর ঝুলন্ত মরদেহ উদ্ধার
- ড্যাফোডিল প্রতিনিধি
- প্রকাশ: ১১ জুলাই ২০২৫, ১১:৫৫ PM , আপডেট: ১৫ জুলাই ২০২৫, ১০:০০ PM
স্ত্রীকে তালাক দেওয়ার দুই দিন পর ‘আত্মহত্যা’ করেছেন ড্যাফোডিল ইন্টারন্যাশনাল ইউনিভার্সিটির শিক্ষার্থী মোহাম্মদ তারেক ওয়াদুদ নাহিদ। শুক্রবার (১১ জুলাই) দুপুর আড়াইটার দিকে রাজধানীর মিরপুর-১ এলাকার ভাড়া বাসায় নিজ কক্ষে ঝুলন্ত অবস্থায় তার মরদেহ পাওয়া যায়। তিনি বিশ্ববিদ্যালয়ের ৫১তম ব্যাচের টেক্সটাইল বিভাগের তৃতীয় বর্ষের শিক্ষার্থী ছিলেন। নিহতের একাধিক সহপাঠী দ্য ডেইলি ক্যাম্পাসকে বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন। নিহত নাহিদের বাড়ি রাজশাহী জেলার বাগমারা উপজেলার রক্ষিতপাড়ায়। তিনি এ কে এম আব্দুল ওয়াহেদের ছেলে।
প্রত্যক্ষদর্শীরা জানান, বৃহস্পতিবার (১০ জুলাই) বিকেল থেকেই নাহিদ নিজ কক্ষে একা ছিল। রাতে খাবারের সময় ডাকাডাকি করলেও কোনো সাড়া না পেয়ে সবাই ধারণা করে নাহিদ ঘুমাচ্ছে হয়তো। পরদিন সকাল থেকে নাহিদের পরিবারের লোকজন তার ফ্লোরমেটদের ফোন করে জানান, নাহিদ বাসার সঙ্গে যোগাযোগ করছে না। রুম ভেতর থেকে বন্ধ থাকায় পরে দারুস সালাম থানায় যোগাযোগ করা হয়। একজন এসআই উপস্থিত হয় এবং ফায়ার সার্ভিসকে খবর দেওয়া হয়। ফায়ার সার্ভিসের সদস্যরা দরজা ভেঙে ভেতরে ঢুকে নাহিদকে ঝুলন্ত অবস্থায় উদ্ধার করেন। এরপর তাকে সোহরাওয়ার্দী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে নেওয়া হলে চিকিৎসকরা মৃত ঘোষণা করে। শনিবার (১২ জুলাই) সকালে তার ময়নাতদন্ত হওয়ার কথা রয়েছে।
খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, নাহিদ ২০২২ সালের সেপ্টেম্বরে রাজধানীর একটি নার্সিং কলেজের এক শিক্ষার্থীকে প্রেম করে বিয়ে করেন যা বাড়িতে না জানিয়ে। এ বিয়ে পরিবার মেনে নিতে চায়নি। এদিকে সম্প্রতি স্ত্রী অন্য এক ছেলের সঙ্গে সম্পর্কে জড়িয়েছেন, এমন তথ্য জানার পর থেকেই তাদের সম্পর্কে টানাপোড়েন শুরু হয়। তবে নাহিদ সবকিছু মিটিয়ে সম্পর্ক টিকিয়ে রাখতে চাইছিলেন। কিন্তু গত ১৯ জুন মেয়ের পক্ষ থেকে তালাকনামা পাঠানো হয়। ফলে মানসিকভাবে ভেঙে পড়েন নাহিদ। পরবর্তীতে দুদিন আগে নাহিদ তার সাবেক স্ত্রীর সামনে গিয়ে তালাকনামায় স্বাক্ষর করেন।
নাহিদের মৃত্যুতে তার সহপাঠী ও সাধারণ শিক্ষার্থীদের মাঝে শোকের ছায়া নেমে এসেছে। বন্ধু ও সহপাঠীরা তার আচরণ, ব্যবহার ও আন্তরিকতার কথা স্মরণ করে শোক প্রকাশ করছে। সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে অনেকেই তার মৃত্যুতে গভীর দুঃখ প্রকাশ করে মানসিক স্বাস্থ্য বিষয়ে সচেতনতার আহ্বান জানিয়েছেন।
এ বিষয়ে দারুস সালাম থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) ও সংশ্লিষ্ট কারও বক্তব্য পাওয়া যায়নি। মুঠোফোনে কল দেওয়া হলে তারা ফোন রিসিভ করেননি।