বিইউবিটিতে জাতীয় এআই অলিম্পিয়াড সফলভাবে সম্পন্ন

প্রতিযোগিতার সমাপনী অনুষ্ঠান
প্রতিযোগিতার সমাপনী অনুষ্ঠান  © জনসংযোগ

‘বাংলাদেশ আর্টিফিশিয়াল ইন্টেলিজেন্স (এআই) অলিম্পিয়াড ২০২৫’-এর জাতীয় পর্ব বাংলাদেশ ইউনিভার্সিটি অব বিজনেস এন্ড টেকনোলজিতে (বিইউবিটি) সফলভাবে অনুষ্ঠিত হয়েছে। বিইউবিটি ক্যাম্পাসে আজ শনিবার (১৭ মে) দিনব্যাপী এই প্রতিযোগিতাটি যৌথভাবে আয়োজন করেছে বাংলাদেশ ওপেন সোর্স নেটওয়ার্ক (বিডিওএসএন) এবং বাংলাদেশ ইউনিভার্সিটি অব বিজনেস এন্ড টেকনোলজি (বিইউবিটি)।

এর আগে গত ৩ ও ১০ মে অনুষ্ঠিত প্রাথমিক বাছাই পর্বে উত্তীর্ণ হয়ে ১৭১ জন শিক্ষার্থী জাতীয় পর্বে অংশগ্রহণের সুযোগ পান। অংশগ্রহণকারীরা দেশের বিভিন্ন স্কুল, কলেজ, টেকনিক্যাল শিক্ষা বোর্ড এবং ব্রিটিশ কারিকুলামভুক্ত শিক্ষা প্রতিষ্ঠান থেকে নির্বাচিত হন। আজ সকাল ৮টায় অংশগ্রহণকারীদের নিবন্ধন এবং উপহার সামগ্রী বিতরণের মাধ্যমে অনুষ্ঠানের সূচনা হয়।

সংক্ষিপ্ত উদ্বোধনী পর্ব শেষে নির্ধারিত কক্ষে আয়োজিত হয় ৫ ঘণ্টাব্যাপী ‘মেশিন লার্নিং ও প্রোগ্রামিং কনটেস্ট’। উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে অতিথি হিসেবে বক্তব্য প্রদান করেন বিডিএআইওর দলনেতা এবং ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের তথ্যপ্রযুক্তি ইনস্টিটিউটের পরিচালক অধ্যাপক ড. বি এম মইনুল হোসেন। তিনি তার বক্তব্যে কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তা (এআই) প্রযুক্তির ভবিষ্যৎ সম্ভাবনা এবং শিক্ষার্থীদের দক্ষতা অর্জনের গুরুত্ব তুলে ধরেন। 

অনুষ্ঠানের উদ্বোধন ঘোষণা করেন বিইউবিটির উপাচার্য অধ্যাপক ড. এ বি এম শওকত আলী।  তিনি উদ্বোধনী বক্তব্যে বলেন, জাতীয় পর্যায়ে এমন একটি গুরুত্বপূর্ণ ও যুগোপযোগী আয়োজনের অংশ হতে পেরে আমি অত্যন্ত আনন্দিত। আমাদের শিক্ষার্থীদের এআই প্রযুক্তিতে দক্ষ করে গড়ে তোলা সময়ের দাবিতে পরিণত হয়েছে।

আরও পড়ুন: ইস্টার্ন ইউনিভার্সিটির নতুন ভিসি ইউআইইউ অধ্যাপক ড. ফরিদ আহমদ সোবহানী

চলতি বছরের প্রতিযোগিতায় নতুন সংযোজন হিসেবে কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তা ও পাইথন প্রোগ্রামিং বিষয়ক বহুনির্বাচনি প্রশ্ন এবং শূন্যস্থান পূরণ নিয়ে ৩০ মিনিটের একটি কুইজ পর্ব অনুষ্ঠিত হয়। উক্ত কুইজে জুনিয়র ও সিনিয়র—এই দুই বিভাগে মোট ২৩৫ জন শিক্ষার্থী অংশগ্রহণ করেন। প্রতিযোগিতার পাশাপাশি ‘লিভিং ইন এআই ইরা’ শীর্ষক একটি প্রশ্নোত্তর পর্ব অনুষ্ঠিত হয়। এরপর ক্যাগল প্ল্যাটফর্ম নিয়ে একটি কর্মশালার আয়োজন করা হয়। আয়োজনের শেষ অংশে প্রাণবন্ত সাংস্কৃতিক পরিবেশনা, পুরস্কার বিতরণী ও সমাপনী অনুষ্ঠান অনুষ্ঠিত হয়। সমাপনী পর্বের শুরুতে আন্তর্জাতিক গণিত অলিম্পিয়াডে বাংলাদেশের প্রথম রৌপ্য পদক বিজয়ী ধনঞ্জয় বিশ্বাসের সঙ্গে অংশগ্রহণকারী শিক্ষার্থীদের একটি আলোচনা পর্ব অনুষ্ঠিত হয়।

এই সমাপনী অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তি বিভাগের যুগ্মসচিব (আইসিটি প্রমোশন ও গবেষণা অনুবিভাগের অতিরিক্ত দায়িত্বপ্রাপ্ত) ড. মো. তৈয়বুর রহমান। তিনি তার বক্তব্যে শিক্ষার্থীদের উদ্ভাবনী চিন্তাভাবনা ও প্রযুক্তিনির্ভর দক্ষতা বিকাশে আরও এগিয়ে আসার আহ্বান জানান। 

অনুষ্ঠানে বিশেষ অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন বিইউবিটি উপাচার্য অধ্যাপক ড. এ বি এম শওকত আলী। তিনি বলেন, এ ধরনের আয়োজন শিক্ষার্থীদের মধ্যে প্রযুক্তি বিষয়ক আগ্রহ সৃষ্টি করে এবং তাদের মেধা বিকাশে সহায়ক ভূমিকা রাখে।

অন্যান্য অতিথিদের মধ্যে উপস্থিত ছিলেন ব্র্যাক বিশ্ববিদ্যালয়ের সিএসই বিভাগের অধ্যাপক ড.  মোহাম্মদ কায়কোবাদ, বিডিএআইও-এর দলনেতা ও ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের তথ্যপ্রযুক্তি ইনস্টিটিউটের পরিচালক অধ্যাপক ড. বি. এম. মইনুল হোসেন, বাংলাদেশ ওপেন সোর্স নেটওয়ার্ক (বিডিওএসএন)-এর সভাপতি মুনির হাসান, বিইউবিটির আইকিউএসি ও বিআরআইসি-এর পরিচালক অধ্যাপক শান্তি নারায়ণ ঘোষ, কম্পিউটার সায়েন্স অ্যান্ড ইঞ্জিনিয়ারিং (সিএসই) বিভাগের চেয়ারম্যান সহকারী অধ্যাপক মো. সাইফুর রহমান এবং আয়োজনের প্রধান পৃষ্ঠপোষক প্রতিষ্ঠান রিভ চ্যাটের ব্যবস্থাপনা পরিচালক এম. রেজাউল হাসান। এছাড়াও অনুষ্ঠানে বিইউবিটি ও বিডিওএসএন-এর শিক্ষক, কর্মকর্তা এবং প্রতিযোগী শিক্ষার্থীরা উপস্থিত ছিলেন।

আরও পড়ুন: পাঁচ পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয়ের মেধাতালিকায় মোস্তাফিজ, অর্থাভাবে ভর্তি অনিশ্চিত

এআই অলিম্পিয়াডে প্রথম স্থান অর্জন করেছে লাবিব শাহরিয়ার, দ্বিতীয় স্থান অর্জন করে আবদুল্লাহ জোবায়ের, এবং তৃতীয় স্থান অর্জন করেছ মো. রিসাত ইসলাম। এখান থেকে নির্বাচিত বিজয়ীরা চীনের বেইজিং শহরে অনুষ্ঠেয় আন্তর্জাতিক এআই অলিম্পিয়াডে বাংলাদেশের প্রতিনিধিত্ব করার সুযোগ পাবে। এছাড়াও বিজয়ীদের সনদপত্র, আকর্ষণীয় পুরস্কার প্রদান করা হয় এবং তারা অনলাইন ও অফলাইন প্রশিক্ষণের সুযোগ পাবে।

আয়োজিত কুইজ প্রতিযোগিতায় জুনিয়র ও সিনিয়র—এই দুইটি বিভাগে অংশগ্রহণকারী শিক্ষার্থীদের মধ্য থেকে বিজয়ীদের নির্বাচিত করা হয়। জুনিয়র শাখায় প্রথম স্থান অর্জন করেন আকদ ইকবাল হক এবং সিনিয়র শাখায় প্রথম স্থান অর্জন করেন সাখাওয়াত হোসেন সৈকত। বিইউবিটির কম্পিউটার সায়েন্স অ্যান্ড ইঞ্জিনিয়ারিং বিভাগ আয়োজনটির সার্বিক পৃষ্ঠপোষকতা করছে।


সর্বশেষ সংবাদ