পারভেজ হত্যার নেপথ্যে ছাত্রদের আধিপত্য বিস্তার, সহযোগিতায় কিশোর গ্যাং

ব্যাকগ্রাউন্ডে সিসিটিভি ফুটেজ ও নিহত পারভেজ এবং প্রাইমএশিয়া লোগো
ব্যাকগ্রাউন্ডে সিসিটিভি ফুটেজ ও নিহত পারভেজ এবং প্রাইমএশিয়া লোগো  © টিডিসি সম্পাদিত

প্রাইমএশিয়া বিশ্ববিদ্যালয়ের টেক্সটাইল বিভাগের তৃতীয় বর্ষের ছাত্র জাহিদুল ইসলাম পারভেজ হত্যাকাণ্ডকে কেন্দ্র করে দেশের ছাত্ররাজনীতির মাঠ বর্তমানে উত্তপ্ত। ক্যাম্পাসে ক্যাম্পাসে চলছে সমাবেশ-বিক্ষোভ। সংবাদ সম্মেলনে আয়োজন করে একপক্ষ অপর পক্ষকে দোষারোপ করছে। শিক্ষার্থীরা একদিকে সুষ্ঠু বিচার দাবি করছে, অন্যদিকে ঘটনার পেছনে রাজনৈতিক সংশ্লিষ্টতার অভিযোগও তুলছে ছাত্রসংগঠনগুলো।

তবে প্রাথমিক তদন্তে উঠে এসেছে পারভেজ হত্যার মূল পেছনে কোনো রাজনৈতিক দ্বন্দ্ব নয়, বরং ক্যাম্পাসে একটি গ্রুপের ছাত্রদের আধিপত্য বিস্তার মূলত এ জন্য দায়ী। এ ছাড়াও এর পেছনে রয়েছে ব্যক্তিগত ইগো এবং ক্যাম্পাসে নিজেদের শক্তি প্রদর্শনের প্রবণতা। এ ক্ষেত্রে তাদের আধিপত্য বিস্তারে সহযোগিতা করেছে স্থানীয় কিশোর গ্যাংয়ের সদস্যরা।

বিশ্ববিদ্যালয়ের আইন বিভাগের প্রত্যক্ষদর্শী শিক্ষার্থী মোহাম্মদ মাফরাজ দ্য ডেইলি ক্যাম্পাসকে জানান, আমাদের ক্যাম্পাসের নানা সমস্যা বহুদিন ধরেই চলে আসছে। কিছু ঘটলেই বহিরাগতদের এনে পরিস্থিতি আরও অস্থিতিশীল করা হয়। অতীতেও এসব শিক্ষার্থী ক্যাম্পাসে বহিরাগতদের মাধ্যমে একাধিকবার এ ধরনের ঝামেলা তৈরি করেছে। এরই ফল হিসেবে এই ঘটনা ঘটেছে।

তিনি আরও বলেন, এর আগেও ক্যাম্পাসে আমার সঙ্গে একটি ঝামেলার ঘটনা ঘটেছিল। তখনও দেখা গেছে, ক্যাম্পাসের বাইরের কিশোর গ্যাংয়ের সদস্যদের ডেকে আনা হয়েছে। যেকোনো ছোটখাটো সমস্যায় বা বিরোধে এভাবে বহিরাগতদের এনে আমাদের ভয় দেখানো হয় কিংবা মারামারি করা হয়। এসব কিশোর গ্যাংয়ের সদস্যরা মূলত বিভিন্ন অপরাধমূলক কর্মকাণ্ডে জড়িত এবং ক্যাম্পাসের পরিবেশ অশান্ত করতে তাদের ব্যবহার করা হয়।

প্রত্যক্ষদর্শী সহপাঠিদের ভাষ্য অনুযায়ী, গত শনিবার (১৯ এপ্রিল) বেলা ৩টার দিকে মিডটার্ম পরীক্ষা শেষে পারভেজ তার বন্ধু সুকর্ণ, তরিকুল, ইমতিয়াজসহ কয়েকজনের সঙ্গে বিশ্ববিদ্যালয়ের বিপরীতে র‍্যানকন বিল্ডিংয়ের সামনের একটি পুরি-শিঙাড়ার দোকানে দাঁড়িয়ে হাসি-ঠাট্টা করছিলেন। তাদের কিছুটা পেছনে ইউনিভার্সিটি অব স্কলারসের দুই ছাত্রী এবং প্রাইমএশিয়ার মেহেরাজ ইসলাম, আবু জহর গিফফারি পিয়াস ও মাহাথির হাসান অবস্থান করছিলেন। বন্ধুদের হাসাহাসি দেখে ওই দুই নারী শিক্ষার্থী মনে করেন, তাদের উদ্দেশ্য করে কটাক্ষ করা হচ্ছে। এ নিয়ে উভয়পক্ষে কথা-কাটাকাটি হয়।

বিষয়টি জানতে পেরে বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রক্টর মোশাররফ হোসেন উভয় পক্ষকে ডেকে পাঠান। সেখানে টেক্সটাইল বিভাগের শিক্ষক সুষমা ছোঁয়াতী ও সাইকোলজি বিভাগের শিক্ষক আবুল হাশেমের উপস্থিতিতে মীমাংসার চেষ্টা করা হয়। প্রক্টরের পরামর্শে পারভেজ দুই ছাত্রীর কাছে ক্ষমাও চান। মীমাংসার পর সবাই যার যার মতো চলে গেলেও এরপরই ঘটে মর্মান্তিক হামলার ঘটনা।

প্রত্যক্ষদর্শীদের ভাষ্যমতে, পারভেজ প্রক্টর অফিস থেকে বের হওয়ার পর ইংরেজি বিভাগের কয়েকজন শিক্ষার্থী তাকে হুমকি দিতে থাকেন। বের হওয়া পরপরই বহিরাগত ১৫/২০ জনের মত কিশোর গ্যাং সদস্য এসে তার ওপর হামলা চালায়।

ঘটনার দিনের সিসিটিভি ফুটেজে দেখা গেছে, পারভেজ রক্তাক্ত অবস্থায় পেটে হাত দিয়ে একটি চেয়ারে বসে আছেন, পাশে উদ্বিগ্ন সহপাঠীরা তার সাড়া পাওয়ার চেষ্টা করছেন। দ্রুত কুর্মিটোলা হাসপাতালে নেওয়া হলে চিকিৎসকরা জানান, আগেই তার মৃত্যু হয়েছে।

আমাদের ক্যাম্পাসের নানা সমস্যা বহুদিন ধরেই চলে আসছে। কিছু ঘটলেই বহিরাগতদের এনে পরিস্থিতি আরও অস্থিতিশীল করা হয়। অতীতেও এসব শিক্ষার্থী ক্যাম্পাসে বহিরাগতদের মাধ্যমে একাধিকবার এ ধরনের ঝামেলা তৈরি করেছে। এরই ফল হিসেবে এই ঘটনা ঘটেছে— মোহাম্মদ মাফরাজ, প্রত্যক্ষদর্শী আইন বিভাগের শিক্ষার্থী।

প্রত্যক্ষদর্শী এবং নিহত শিক্ষার্থীর সহপাঠী মেকানিকাল ইঞ্জিনিয়ারিং বিভাগের শিক্ষার্থী সিয়াম দ্য ডেইলি ক্যাম্পাসকে বলেন, ‘জাহিদুল প্রাইম এশিয়ার গলিতে চা-সিঙ্গারা খাওয়ার জন্য গিয়েছিল। ওই সময় সেখানে দুই জন মেয়েও ছিল। এলএলবি ও ইংরেজি বিভাগের তিন ছাত্র মাহাথি, মেহেরাব, আবুজর গিফারী এরাও ছিল।’

তার ভাষ্যে, ‘হঠাৎ করে ছেলেগুলো পারভেজকে বলতেছে তুমি এর দিকে কেন তাকিয়েছো। পরে আমার বন্ধু পারভেজ বললো যে ভাই আমরা এরদিকে তাকাই নি, একপর্যায়ে এটা নিয়ে কথা-কাটাকাটি হয় তাদের মধ্যে। তখন স্যাররা তাদেরকে নিয়ে যায় মিটমাট করিয়ে দেয়।

পারভেজের সহপাঠীদের ভাষ্যমতে, প্রক্টর অফিসে মীমাংসা হওয়ার পরও ইংরেজি ও ইন্টারন্যাশনাল হসপিটালিটি ম্যানেজমেন্ট বিভাগের কয়েকজন শিক্ষার্থী তাকে হুমকি দিতে থাকেন। এরপর বহিরাগতদের ডেকে এনে নির্মমভাবে হত্যা করা হয় পারভেজকে। অভিযোগের ভিত্তিতে প্রাইমএশিয়া বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রক্টর কার্যালয়ে ডাকার পরও সামান্য অভিযোগে শিক্ষার্থীকে হত্যার ঘটনা সারা দেশে তীব্র প্রতিক্রিয়ার জন্ম দিয়েছে।

পুলিশ ও তদন্ত সংশ্লিষ্ট সূত্র জানিয়েছে, হত্যাকাণ্ডের ঘটনায় অন্তত ১৫-২০ জন জড়িত ছিল। তাদের মধ্যে এখন পর্যন্ত ১১ জনের নাম পাওয়া গেছে। তারা হলো: মেহেরাজ ইসলাম, আবু জহর গিফফারি পিয়াস, মো. মাহাথির হাসান, সোবহান নিয়াজ তুষার, হৃদয় মিয়াজি, রিফাত, আলী, ফাহিম, আল কামাল শেখ ওরফে কামাল, আলভী হোসেন জুনায়েদ এবং আল আমিন সানি।

অভিযুক্তদের মধ্যে মেহেরাজ ইসলাম প্রাইমএশিয়ার বিবিএ বিভাগের শিক্ষার্থী। মহাখালীর হাজারীবাড়ী এলাকায় বাস করা মেহেরাজ নাসিম গ্যাংয়ের সদস্য বলে জানা গেছে। হত্যাকাণ্ডের সময় তার ডাকা বহিরাগতদেরও দেখা যায়। আবু জহর গিফফারি পিয়াস প্রাইমএশিয়ার এলএলবির শিক্ষার্থী এবং কড়াইল বস্তিতে তার আড্ডা রয়েছে। 

সিসিটিভি ফুটেজ অনুযায়ী, তিনিই পারভেজের ওপর ধারালো অস্ত্র দিয়ে হামলা চালান। মাহাথির হাসান প্রাইমএশিয়ার ইংরেজি বিভাগের শিক্ষার্থী এবং গাজীপুরের কাপাসিয়ার বাসিন্দা। তার ছাত্রলীগের রাজনীতির সঙ্গে সম্পৃক্ততার অভিযোগও রয়েছে।

একটি বিশেষ সূত্রে জানা গেছে, হামলার আগে মেহেরাজ, পিয়াস ও মাহাথির কিশোর গ্যাং 'বেনসন গ্রুপের' সদস্যদের খবর দেন। পরে আল কামাল শেখ ওরফে কামাল, আলভী হোসেন জুনায়েদ, আল আমিন সানি, রিফাত, আলী ও ফাহিম এসে হামলায় অংশ নেয়। এদের অধিকাংশই বনানী, মহাখালী ও কড়াইল এলাকার বাসিন্দা এবং তাদের বিরুদ্ধে মাদক সেবন, ছিনতাইসহ নানা অভিযোগ রয়েছে। সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমেও তারা নিজেদের কার্যক্রম প্রচার করে আসছিল।

এদিকে হত্যার ঘটনায় নিহত পারভেজের চাচাতো ভাই হুমায়ুন কবীর বাদী হয়ে  ৮ জনের নাম উল্লেখ করে বনানী থানায় একটি মামলা করেছেন। যার মধ্যে বিশ্ববিদ্যালয়ের এলএলবি ও ইংরেজি বিভাগের তিন ছাত্র মাহাথি, মেহেরাব, আবুজর গিফারী ছাড়াও আরও পাঁচজনকে আসামি করে মামলা করা হয়েছে। এছাড়া ২০ থেকে ৩০ জনকে অজ্ঞাতনামা আসামি করা হয়েছে। ঘটনায় সাথে সংশ্লিষ্টতার অভিযোগে সোমবার ৩ জনকে গ্রেপ্তার করে পুলিশ। ওই আদালত তাদের সাত দিনের রিমান্ড মঞ্জুর করেছেন।

তবে ঘটনার চার দিন পেরিয়ে গেলেও মামলার মূল অভিযুক্ত তিন শিক্ষার্থী এখনো আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর ধরাছোঁয়ার বাইরে রয়েছে। তবে তাদের গ্রেপ্তারে বিশেষ টিম কাজ করছে বলে জানিয়েছেন বনানী থানার পরিদর্শক (অপারেশনস) এ কে এম মইনুদ্দিন। 

তিনি দ্য ডেইলি ক্যাম্পাসকে বলেন, আসামিদের শনাক্ত করা হয়েছে এবং দ্রুত সময়ের মধ্যেই তাদের গ্রেপ্তারের চেষ্টা চলছে। আশা করছি খুব দ্রুতই তাদের গ্রেপ্তার করতে পারবো আমরা।

মামলার আসামী নয় এমন তিনজনকে গ্রেপ্তার প্রসঙ্গে তিনি বলেন, তিনজনের কেউই ওই বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্র নয়, তারা প্রধান তিন আসামির স্কুল ফ্রেন্ড। গ্রেপ্তার তিনজন ও তিন আসামি বনানী বিদ্যানিকেতন স্কুলে পড়াশোনা করেছে। আসামিদের ডাকে তারা সেদিন ঘটনাস্থলে গিয়েছিল। গ্রেপ্তাররা বিভিন্ন বিশ্ববিদ্যালয়ে ভর্তির চেষ্টায় ছিল বলেও জানান তিনি। তবে ইতিপূর্বে তাদের বিরুদ্ধে থানায় কোন অভিযোগ নেই।

প্রাইমএশিয়া বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ একটি চিঠির মাধ্যমে অভিযুক্ত দুই ছাত্রী সম্পর্কে জানতে চেয়েছিল। এরপর প্রাথমিক তদন্তের ভিত্তিতে আমরা তাদেরকে সাময়িক বহিষ্কারের সিদ্ধান্ত নিয়েছিক্যাপ্টেন মোবাশ্বের আলী খন্দকার, রেজিস্ট্রার, ইউনিভার্সিটি অব স্কলার্স। 

অন্যদিকে হামলার সময় বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের বনানী শাখার যুগ্ম আহ্বায়ক সোবহান নিয়াজ তুষার ও যুগ্ম সদস্যসচিব হৃদয় মিয়াজিকেও উপস্থিত থাকতে দেখা গেছে বলে নিশ্চিত করেছেন বিশ্ববিদ্যালয়ের একাদিক শিক্ষার্থী। তাদেরকে মামলার আসামি ও করা হয়েছে। সোমবার (২১ এপ্রিল) রাতে কুমিল্লার তিতাস উপজেলার বলরামপুর ইউনিয়নের মনাইরকান্দি গ্রামে অভিযান চালিয়ে হৃদয় মিয়াজিকে তার মামা হারুন অর রশিদ সিকদারের বাড়ি থেকে গ্রেপ্তার করা হয়।

এদিকে পারভেজ হত্যার সঙ্গে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের নেতা-কর্মীদের জড়িত থাকার অভিযোগ করেছে ছাত্রদল। সংগঠনটির কেন্দ্রীয় সভাপতি রাকিবুল ইসলাম রাকিব জানান, হত্যার ঘটনায় বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের নেতা-কর্মীরা জড়িত এবং এটি পরিকল্পিত। হত্যার সঙ্গে জড়িত সন্ত্রাসীদের দ্রুত গ্রেপ্তারের দাবি জানান তিনি।

তবে অভিযোগ অস্বীকার করেছে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলন। গতকাল এক জরুরি সংবাদ সম্মেলনে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের মুখপাত্র উমামা ফাতেমা বলেন, ঘটনার সময় বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের হৃদয় মিয়াজি ও সোহান তুষার নেয়াজ ছিলেন।

উামামা দাবি করেন, সেখানে তখন ছাত্রদল কর্মী তাওহিদ, প্রাইমএশিয়া বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্রদলের প্রেসিডেন্ট প্রার্থী ইমতিয়াজ জাহিদ এবং আরও কিছু সাধারণ শিক্ষার্থী উপস্থিত ছিলেন। তিনি বলেন, ‘তবে তদন্তের আগে আমরা কোনোভাবেই সিদ্ধান্তে পৌঁছাতে চাই না যে কারা এই হত্যাকাণ্ডের সঙ্গে জড়িত। অপরাধ প্রমাণিত হওয়ার আগেই ছাত্রদল বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের বিরুদ্ধে বিভ্রান্তিমূলক প্রচারণা চালিয়ে মিডিয়া ট্রায়ালে লিপ্ত হয়েছে, যা নিন্দনীয় ও অনভিপ্রেত।’

নিহত পারভেজ ময়মনসিংহের ভালুকা উপজেলার কাইচান গ্রামের কুয়েতপ্রবাসী মো. জসীম উদ্দিনের একমাত্র ছেলে। এক মেয়ে ও এক ছেলেকে নিয়ে জসীম উদ্দিন ও পারভীন ইয়াসমিন দম্পতির ছিল সুখের সংসার। পারভেজ প্রাইমএশিয়া বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থী ছিলেন। তাঁর ছোট বোন জুইমনি ঢাকার মাইলস্টোন কলেজে উচ্চমাধ্যমিকের প্রথম বর্ষের শিক্ষার্থী।

স্থানীয় সাংবাদিকরা জানিয়েছেন, নিহত শিক্ষার্থীর পরিবার এতটাই ভেঙে পড়েছেন যে বাবা-মা কারও সঙ্গে ঠিকভাবে কথাও বলতে পারছেন না। বাড়িতে চলছে শোক আর আহাজারি।

এদিকে, ঘটনার দিন ইউনিভার্সিটি অব স্কলার্সের যে দুই নারী শিক্ষার্থী দিকে তাকিয়ে হাসাহাসির জেরে নিহত শিক্ষার্থী পারভেজকে হত্যার ঘটনায় সেই দুই শিক্ষার্থীকে সাময়িক বহিষ্কার করেছে বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন।

আজ মঙ্গলবার (২২ এপ্রিল) ইউনিভার্সিটি অব স্কলার্সের রেজিস্ট্রার ক্যাপ্টেন মোবাশ্বের আলী খন্দকার দ্য ডেইলি ক্যাম্পাসকে বিষয়টির সত্যতা নিশ্চিত করেছেন।

তিনি জানান, প্রাইমএশিয়া বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ একটি চিঠির মাধ্যমে অভিযুক্ত দুই ছাত্রী সম্পর্কে জানতে চেয়েছিল। এরপর প্রাথমিক তদন্তের ভিত্তিতে আমরা তাদেরকে সাময়িক বহিষ্কারের সিদ্ধান্ত নিয়েছি।

এর আগে প্রাইমএশিয়া বিশ্ববিদ্যালয়ের ভারপ্রাপ্ত উপাচার্য অধ্যাপক ড. রায়হানা বেগম জানিয়েছেন হত্যাকাণ্ডের ঘটনায় পাঁচ সদস্যের কমিটি গঠন করা হয়েছে। উপাচার্য বলেছেন, পারভেজের পরিবারের পাশে বিশ্ববিদ্যালয় থাকবে।

তিনি আরও বলেছেন, পারভেজ হত্যায় যে দুই নারী শিক্ষার্থীর সম্পৃক্ততা রয়েছে বলে জানা যাচ্ছে, তারা স্কলার্স ইউনিভার্সিটির শিক্ষার্থী। ব্যবস্থা নিতে ইতোমধ্যে বিশ্ববিদ্যালয়টির উপাচার্য বরাবর চিঠি দিয়েছে প্রাইমএশিয়া কর্তৃপক্ষ। যে তিন শিক্ষার্থীর সম্পৃক্ততা মিলেছে, তাদের সাময়িক বহিষ্কার করা হয়েছে।

প্রসঙ্গত, শনিবার বিকেলে পাশের ইউনিভার্সিটি অব স্কলার্সের দু’ছাত্রীকে নিয়ে হাসাহাসির জেরে প্রাইম এশিয়ার ইংরেজি বিভাগের শিক্ষার্থীদের সাথে পারভেজের বাকবিতণ্ডা হয়। পরবর্তীতে দু’পক্ষের মধ্যে মীমাংসা করা হয় বলে জানায় বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ। এরপর ক্যাম্পাস থেকে বের হলে পারভেজকে ৩০ থেকে ৪০ জন ঘিরে ধরে। এ সময় ধারালো অস্ত্র দিয়ে আঘাত করলে গুরুতর আহত হন পারভেজ। পরে উদ্ধার করে কুর্মিটোলা জেনারেল হাসপাতালে নিয়ে গেলে কর্তব্যরত চিকিৎসক তাকে মৃত ঘোষণা করেন।


সর্বশেষ সংবাদ

×
  • Application Deadline
  • December 17, 2025
  • Admission Test
  • December 19, 2025
APPLY
NOW!
GRADUATE ADMISSION
SPRING 2026!
NORTH SOUTH UNIVERSITY
Center of Excellence