অবৈধভাবে শিক্ষার্থী ভর্তির উদ্যোগ বেসরকারি জেডএনআরএফ ইউনিভার্সিটিতে

ইলেকট্রিক্যাল এন্ড ইলেকট্রনিক ইঞ্জিনিয়ারিং বিভাগ

জেডএনআরএফ ইউনিভার্সিটি অব ম্যানেজমেন্ট সায়েন্স
জেডএনআরএফ ইউনিভার্সিটি অব ম্যানেজমেন্ট সায়েন্স  © সংগৃহীত

বাংলাদেশ বিশ্ববিদ্যালয় মঞ্জুরী কমিশনের (ইউজিসি) অনুমোদন ছাড়াই একটি বিভাগে শিক্ষার্থী ভর্তির উদ্যোগ গ্রহণ করেছে বেসরকারি জেডএনআরএফ ইউনিভার্সিটি অব ম্যানেজমেন্ট সায়েন্স। প্রতিষ্ঠানটিকে নিজেদের সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম ফেসবুক পেজে শিক্ষার্থী ভর্তির এ বিজ্ঞাপন দিতে দেখা যায়। 

বিজ্ঞাপনে কম্পিউটার সায়েন্স এন্ড ইঞ্জিনিয়ারিং (সিএসই), ইলেকট্রিক্যাল এন্ড ইলেকট্রনিক ইঞ্জিনিয়ারিং (ইইই), ইনফরমেশন টেকনোলজি ম্যানেজমেন্ট (আইটিএম), ইংরেজি, ইকোনোমিক্স, ব্যাচেলর অব বিজনেস অ্যাডমিনিস্ট্রেশন (বিবিএ) এবং মাস্টার্স অব বিজনেস অ্যাডমিনিস্ট্রেশন (এমবিএ) শিক্ষার্থী ভর্তির অফার করে। 

‘কীভাবে বিশ্ববিদ্যালয়টি এমন কোর্স অফার করছে, সেটা আমার বোধগম্য নয়। এটা বেআইনি। ইউজিসির নির্দেশনার বাইরে গিয়ে কেউ কাজ করলে এটার জন্য প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেবে এটাই স্বাভাবিক— অধ্যাপক ড. আনোয়ার হোসেন, সদস্য, ইউজিসি

তবে ইউজিসি সূত্রে জানা যায়, ইলেকট্রিক্যাল এন্ড ইলেকট্রনিক ইঞ্জিনিয়ারিং (ইইই) বিভাগে বিশ্ববিদ্যালয়টি এখনো শিক্ষার্থী ভর্তির অনুমোদন পায়নি। ২০২৩ সালের অক্টোবরে ইউজিসি বরাবর আবেদন করলেও ল্যাব ঘাটতি থাকায় তাদের অনুমোদন দেয়া হয়নি। ইউজিসির বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয় বিভাগের পরিচালক ড. মো. সুলতান মাহমুদ ভূইয়ার সাথে কথা হলে তিনি জানান, বিষয়টি স্পর্শকাতর। এমনটি করা হলে সেটি শিক্ষার্থীদের সাথে প্রতারণার শামিল।

অনুমোদন না পাওয়া বিষয়ে শিক্ষার্থী ভর্তির বিজ্ঞপ্তি

ইউজিসির এই পরিচালক আরও বলেন, গত ১৫ বছরে এতগুলো বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয়ের অনুমোদন দেয়া হয়েছে, যেগুলোর মান রক্ষার জন্য আমরা অনবরত কাজ করলেও বিভিন্ন উপায়ে তাদের মধ্যে মান রক্ষা না করার প্রবণতা দেখা যায়। কোন একটি পক্ষ থেকে যদি আমাদেরকে বিষয়টি জানানো হয়, তাহলে আমরা দ্রুতই এটার বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেব।

‘এটার সিলেবাসটি অনুমোদিত কিন্তু ল্যাবরেটরিটা এখন তারা (ইউজিসি) অনুমোদন দেবে। তবে বিভাগটিতে আমরা এখনও কোন শিক্ষার্থী ভর্তি করিনি, সেশন শুরু করিনি। একটা বিজ্ঞাপন গেছে, যেটা আসছে সেমিস্টারে শিক্ষার্থী ভর্তির প্রস্তুতি হিসেবে দেওয়া হয়েছে— ড. মুহাম্মদ আলি, রেজিস্ট্রার, জেডএনআরএফ ইউনিভার্সিটি

তবে জেডএনআরএফ কর্তৃপক্ষের দ্য ডেইলি ক্যাম্পাসের পক্ষ থেকে যোগাযোগ করা হলে তোরা জানান, বিজ্ঞাপন দেয়া মানেই শিক্ষার্থী ভর্তি নয়। ভবিষ্যতে শিক্ষার্থী ভর্তির উদ্যোগ হিসেবে এই বিজ্ঞাপন প্রচার করা হচ্ছে।

আরও পড়ুন: ‘মান রক্ষায়’ ব্যতিক্রমী গ্রেডিং ৬ বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয়ে

ইউনিভার্সিটির রেজিস্ট্রার ড. মুহাম্মদ আলি দ্যা ডেইলি ক্যাম্পাসকে বলেন, এটার সিলেবাসটি অনুমোদিত কিন্তু ল্যাবরেটরিটা এখন তারা (ইউজিসি) অনুমোদন দেবে। তবে বিভাগটিতে আমরা এখনও কোন শিক্ষার্থী ভর্তি করিনি, সেশন শুরু করিনি। একটা বিজ্ঞাপন গেছে, যেটা আসছে সেমিস্টারে শিক্ষার্থী ভর্তির প্রস্তুতি হিসেবে দেওয়া হয়েছে। ফাইনালি আমরা অনুমোদনের জন্য সকল কাগজপত্র সংযুক্ত করে আবেদন পাঠিয়েছি। স্প্রিং সেমিস্টার শুরু হতে এখনও ২ থেকে ৩ মাস বাকি আছে। এর মধ্যেই আমরা ইউজিসি থেকে অনুমোদন পেয়ে যাব।

জানতে চাইলে ইউজিসির সদস্য অধ্যাপক ড. আনোয়ার হোসেন বলেন, যদি ইউজিসির অনুমোদন না থাকে তাহলে কীভাবে বিশ্ববিদ্যালয়টি এমন কোর্স অফার করছে, সেটা আমার বোধগম্য নয়। এটা বেআইনি। ইউজিসির নির্দেশনার বাইরে গিয়ে কেউ কাজ করলে এটার জন্য প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেবে এটাই স্বাভাবিক। আমরা বিষয়টি অবগত ছিলাম না, নথিপত্র ঘেঁটে এ বিষয়ে প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ নেব।

আরও পড়ুন: আইনের জোরে ‘যাচ্ছেতাই পিএইচডি’ পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয়ে!

জানা যায়, ২০১৮ সালের শুরুতে ৯৬তম বিশ্ববিদ্যালয় হিসেবে শিক্ষা মন্ত্রণালয় থেকে জেডএনআরএফ ইউনিভার্সিটি অব ম্যানেজমেন্ট সায়েন্সেস অনুমোদন পায়। বর্তমানে বিশ্ববিদ্যালয়টি রাজধানীর মধ্য বাড্ডায় অস্থায়ী ক্যম্পাসে ইউজিসির অনুমোদন নিয়ে ৬টি বিষয়ে শিক্ষা কার্যক্রম পরিচালনা করছে।


সর্বশেষ সংবাদ