বাংলাদেশ-ভারতের যৌথ অপহরণকারীদের থেকে বিশ্ববিদ্যালয় শিক্ষার্থী উদ্ধার

গ্রেপ্তারকৃতরা হলেন- আব্দুল মালেক, ড্রাইভার সামিদুল, মানিক মিয়া এবং মোবারক হোসেন।
গ্রেপ্তারকৃতরা হলেন- আব্দুল মালেক, ড্রাইভার সামিদুল, মানিক মিয়া এবং মোবারক হোসেন।  © সংগৃহীত

বহুল আলোচিত অপহৃত বিশ্ববিদ্যালয় শিক্ষার্থী হাসিবুর রহমান হিমেলকে সুনামগঞ্জের তাহিরপুর থেকে উদ্ধার করা হয়েছে। এ অপহরণে জড়িত বাংলাদেশ ও ভারতের কিছু ব্যক্তি। এ সময় অপহরণ চক্রের মূলহোতাসহ ৫ জনকে গ্রেফতার করা হয়েছে।

র‌্যাব জানিয়েছে, হিমেলকে অপহরণের পর পাশবিক কায়দায় নির্যাতন করা হয় এবং মুক্তিপণও চাওয়া হয়। অপহৃত হিমেলকে সুনামগঞ্জের তাহিরপুরের সীমান্তবর্তী এলাকা থেকে উদ্ধার করা হয়েছে।
 
রাজধানীর উত্তরা, নেত্রকোনা ও সুনামগঞ্জের তাহিরপুরে অভিযান চালিয়ে অপহরণ চক্রের মূলহোতা মালেকসহ ৫ জনকে গ্রেফতার করা হয়। এ সময় তাদের কাছ থেকে আগ্নেয়াস্ত্র, গোলাবারুদ ও ওয়াকিটকি জব্দ করেছে  আইনশৃঙ্খলা বাহিনী। 
 
এর আগে ঢাকা মহানগর গোয়েন্দা পুলিশের অতিরিক্ত কমিশনার (ডিবি) হারুন অর রশীদ জানান, প্রায় এক মাস আগে গাজীপুরের রাজেন্দ্রপুর থেকে অপহরণ করা হয় বিশ্ববিদ্যালয় শিক্ষার্থী হাসিবুর রহমান হিমেলকে। অপহরণের পর তাকে নিয়ে যাওয়া হয় ভারতের মেঘালয়ে। এ ঘটনায় সাত জেলায় অভিযান চালিয়ে গ্রেফতার করা হয় পাঁচ জনকে।
 
সিঙ্গাপুর থেকে ডিবি প্রধান বলেন, এ ঘটনার তদন্ত করতে গিয়ে বাংলাদেশ এবং ভারতীয় অপহরণ চক্রটিকে শনাক্ত করা হয়েছে।

তিনি আরও বলেন, অপহরণের পর হিমেলকে নিয়ে যাওয়া হয় ভারতের মেঘালয়ে।  সেখানে দিনের পর দিন তাকে আটকে রেখে করা হয় নির্মম নির্যাতন। নির্য়াতনের ভিডিও ফুটেজ পাঠিয়ে পরিবারের কাছে দাবি করা হয় দুই কোটি টাকা মুক্তিপণ। গাছের সঙ্গে ঝুলিয়ে নির্যাতন করা হচ্ছে বিশ্ববিদ্যালয় শিক্ষার্থী হিমেলকে, এমন ভিডিও চিত্র উদ্ধার করা হয়েছে চক্রটির কাছ থেকে। প্রাণে বাঁচতে মায়ের কাছে আকুতির শেষ নেই ভুক্তভোগীর এমন ফুটেজ আমরা সংগ্রহ করেছি।

ভিডিও বার্তায় মাকে উদ্দেশ্য করে অপহৃত হিমেলকে কান্নাজড়িত কণ্ঠে বলতে শোনা যায়— “মা, মা, ও মা, ওদের ভাষা আমি বুঝি না মা। ওদের একজন শুধু বাংলায় কথা বলে মা। বাকিদের কথা শুধু বুঝি না মা। ওদের সবার কাছে অস্ত্র। কাল যদি না আসো মা, তাহলে ওরা আমার হাত-পা কেটে বাংলাদেশে ভাসায় দেবে বলছে। কাল আসো মা। ৫ থেকে ১০ মিনিট লাগবে টাকা পৌঁছে দিতে মা। কালই আসো, টাকা দিয়ে আমারে নিয়ে যাও মা।”

ভুক্তভোগীর পরিবার থেকে জানা যায়, গত বছরের ডিসেম্বরের ২৬ তারিখ ভোরে রাজধানীর উত্তরার বাসা থেকে নিজের প্রাইভেটকারযোগে চালক সামিদুলকে নিয়ে ব্যবসায়িক কাজে শেরপুরের উদ্দেশে রওয়ানা হন হাসিবুর রহমান হিমেল। সকাল সাড়ে ১১টা থেকে তার মোবাইল ফোন বন্ধ পাওয়া যায়। অনেক খোঁজাখুঁজির পর ছেলেকে না পেয়ে থানায় সাধারণ ডায়েরি করেন তার মা। এরইমধ্যে একাধিক ভারতীয় মোবাইল নম্বরের হোয়াটসঅ্যাপ থেকে হাসিবের মায়ের ফোনে আসে অপরহরণকারীর কল। দাবি করা ২ কেটি টাকা মুক্তিপণ।
 
শুরু থেকেই এ ঘটনার ছায়া তদন্ত করতে থাকে ডিবির লালবাগ বিভাগ। তথ্য প্রযুক্তির সহায়তা ঢাকা ও গাজীপুর থেকে শুরু করে ময়মনসিংহ, নেত্রকোনা, সুনামগঞ্জে শুরু হয় অভিযান। গুরুত্বপূর্ণ ক্লু পায় ডিবি। অপহরণকারী চক্রের বাংলাদেশি হোতাদের শনাক্ত করা হয়। গ্রেফতার করা হয় দুই নারীসহ এ ঘটনার অন্যতম পরিকল্পনাকারী মাসুদকে। গ্রেফতার দুই নারী অপহরণ চক্রের মূল দুই হোতার স্ত্রী। পাশাপাশি চলতে থাকে ভারতের পুলিশের সঙ্গে যোগাযোগ। মেঘালয়ের পাহাড়ি এলাকায় অভিযান চালিয়ে উদ্ধার করা হয় ভিকটিমের কিছু জিনিসপত্র। সেখানকার পুলিশ ভারতীয় একজনকে গ্রেফতারের পর মেলে আরও গুরুত্বপূর্ণ তথ্য। এ ঘটনার সঙ্গে যুক্ত হয় র‌্যাবও।


সর্বশেষ সংবাদ

×
  • Application Deadline
  • December 17, 2025
  • Admission Test
  • December 19, 2025
APPLY
NOW!
GRADUATE ADMISSION
SPRING 2026!
NORTH SOUTH UNIVERSITY
Center of Excellence