১৩ আসনে প্রার্থী বদল বিএনপির, কপাল পুড়ল যাদের
পরিবর্তন আসতে পারে আরও
- টিডিসি রিপোর্ট
- প্রকাশ: ২৮ ডিসেম্বর ২০২৫, ০৮:০৮ PM , আপডেট: ২৮ ডিসেম্বর ২০২৫, ০৮:১১ PM
দলীয় মনোনয়নের তালিকা ঘোষণার পর থেকেই সারাদেশে ঘোষিত প্রার্থীদের নিয়ে বিতর্ক ও নেতাকর্মীদের ক্ষোভের কারণে এখন পর্যন্ত মোট ১৩টি আসনের ধানের শীষের প্রার্থী বদল করেছে বিএনপি। প্রথম দফায় দলটি ২৩৭ ও পরবর্তিতে দ্বিতীয় দফায় আরও ৩৬টি আসনে দলের ‘সম্ভাব্য চূড়ান্ত’ প্রার্থী তালিকা ঘোষণা করে বিএনপি।
এরমধ্যে প্রথম দফার তালিকা ঘোষণার পর তৃণমূলে বিক্ষোভ ও প্রার্থী নিয়ে চরম বিতর্ক তৈরি হওয়ায় পরদিনই মাদারীপুর-১ আসনের প্রার্থী স্থগিত করে দলটি। এরপর বেশকিছুদিন তৃণমূলের দাবিকে আমলে না নিয়ে ‘চুপ থাকার’ পন্থা নেয় দলটি। কিন্তু গেল ২৫ ডিসেম্বর বৃহস্পতিবার দীর্ঘ প্রায় সাড়ে ১৭ বছর পর লন্ডনে নির্বাসন থেকে দেশে ফেরার পর বিতর্কিত প্রার্থীদের বদলের প্রক্রিয়া শুরু হয় দলটিতে। এর ধারাবাহিকতায় গতকাল শনিবার মোট ৮টি নির্বাচনী আসনের প্রার্থী পরিবর্তন করে বিএনপি। রবিবার আরও ৫টি আসনে চূড়ান্ত হয়। মনোনয়ন জমা দেয়ার আগ মুহূর্ত পর্যন্ত এই পরিবর্তন প্রক্রিয়া চলবে বলে বিএনপি সূত্রে জানা গেছে। শেষ মুহুর্তে তা আরও বাড়তে পারে।
এদিকে, রবিবার মোট ৪টি আসনে ধানের শীষের প্রার্থী পরিবর্তন করে দলটি। এর মধ্যে চট্টগ্রাম-৬, ব্রাম্মণবাড়িয়া-৪, চট্টগাম-১৪সহ আরও কয়েকটি আসনে প্রার্থী পরিবর্তন ও নতুন প্রার্থী দিয়েছে বিএনপি। চট্টগ্রাম-৬ (রাউজান) সংসদীয় আসনে বিএনপির প্রার্থী পরিবর্তন করা হয়েছে। এই আসনে চূড়ান্ত মনোনয়ন পেয়েছেন বিএনপি চেয়ারপারসনের উপদেষ্টামণ্ডলীর সদস্য গোলাম আকবর খোন্দকার। এর আগে কেন্দ্রীয় ভাইস চেয়ারম্যান (বর্তমানে পদ স্থগিত) গিয়াস উদ্দিন কাদের চৌধুরীকে প্রাথমিক মনোনয়ন দিয়েছিল দলটি। রবিবার (২৮ ডিসেম্বর) বিকেলে বিষয়টি নিশ্চিত করে গোলাম আকবর খোন্দকার সাংবাদিকদের জানিয়েছেন, রবিবার বিকেলেই দলীয় মনোনয়ন হাতে পেয়েছি। আমি খুবই আনন্দিত।
এর আগে গত ৪ ডিসেম্বর রাজধানীর গুলশানে বিএনপির চেয়ারপারসনের কার্যালয়ে আয়োজিত এক সংবাদ সম্মেলনে দলটির মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর চট্টগ্রাম-৬ (রাউজান) আসনে কেন্দ্রীয় ভাইস চেয়ারম্যান (বর্তমানে পদ স্থগিত) গিয়াস উদ্দিন কাদের চৌধুরীকে প্রাথমিক মনোনয়ন দিয়েছিলেন।
এদিকে, শনিবার চট্টগ্রামের দুইটি আসনে চূড়ান্ত মনোনয়ন তালিকায় নতুন দুজনকে মনোনয়ন দিয়েছে বিএনপি। প্রাথমিক তালিকায় নাম না থাকলেও দলটির সিদ্ধান্ত অনুযায়ী চট্টগ্রাম-৪ (সীতাকুণ্ড ও চট্টগ্রাম নগরের আংশিক) আসনে বিএনপি চেয়ারপারসনের উপদেষ্টামণ্ডলীর সদস্য মোহাম্মদ আসলাম চৌধুরী এবং চট্টগ্রাম-১০ (পাহাড়তলী-হালিশহর) আসনে প্রয়াত নেতা আব্দুল্লাহ আল নোমানের ছেলে সাঈদ আল নোমান চূড়ান্ত মনোনয়ন পেয়েছেন।
এদিকে, ব্রাহ্মণবাড়িয়া-৪ (কসবা-আখাউড়া) আসনে চূড়ান্ত মনোনয়ন পেয়েছেন বিএনপির নির্বাহী কমিটির সদস্য কবীর আহমেদ ভূঁইয়া। রবিবার (২৮ ডিসেম্বর) গণমাধ্যমে তিনি নিজেই বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন। জানা যায়, রবিবার দুপুরে গুলশানে বিএনপি চেয়ারপারসনের রাজনৈতিক কার্যালয় থেকে তিনি চূড়ান্ত মনোনয়নের চিঠি সংগ্রহ করেন।
এর আগে এই আসনে সম্ভাব্য মনোনয়ন দেয়া হয়েছিল সাবেক এমপি মুশফিকুর রহমানকে। তবে নব্বয়োর্ধ্ব বয়সি অসুস্থ নেতাকে মনোনয়ন দেয়ায় স্থানীয় নেতাকর্মীদের মধ্যে অসন্তোষ তৈরি হয়েছিল। দীর্ঘদিন ধরেই স্থানীয় বিএনপির নেতাকর্মীরা বিক্ষোভসহ নানা কর্মসূচি পালন করেছেন। অবশেষে লন্ডনে বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমানের দেখভাল করা আতাউর রহমান সানির বড় ভাই কবীর আহমেদ ভূঁইয়ার হাতে ধানের শীষ তুলে দিল বিএনপি।
এদিকে, মনোনয়ন পরিবর্তনের দাবিতে বিভিন্ন জায়গায় বিক্ষোভসহ বিভিন্ন কর্মসূচি পালন করছেন বিএনপির নেতাকর্মীরা। ময়মনসিংহের গফরগাঁওয়ে রেললাইনে আগুন দেয়ার ঘটনা ঘটেছে। কুমিল্লার চান্দিনায় মহাসড়ক, যশোরের মনিরামপুর ও কিশোরগঞ্জে বিক্ষোভ মিছিল করা হয়েছে। পটুয়াখালীর দশমিনায় গণপদত্যাগের হুমকি দিয়েছে স্থানীয় বিএনপির নেতাকর্মীরা।
এ বিষয়ে বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য ইকবাল হাসান মাহমুদ টুকু বলেন, আগেই বলা হয়েছিল, এটা সম্ভাব্য তালিকা। কোনো এলাকায় তেমন পরিবর্তন মনে করলে অবশ্যই সেটা করা হবে। আর বড় দল হিসেবে প্রতিটি আসনে একাধিক যোগ্য প্রার্থী আছে। দল যেখানে যাকে অধিক যোগ্য মনে করবে, তাকে চূড়ান্ত করবে।
নিজ দলের বাইরে যুগপৎ আন্দোলন শরিকদের মধ্যে জমিয়ত উলামায়ে ইসলামকে চারটি আসন এবং নাগরিক ঐক্য, গণসংহতি আন্দোলন, বিপ্লবী ওয়ার্কার্স পার্টি ও গণঅধিকার পরিষদ একটি করে আসন পেয়েছে। এ ছাড়া দল বিলুপ্ত করে দুটি দল দুটি আসন, বিএনপিতে যোগদান করে ধানের শীষ প্রতীকে নির্বাচন করবেন তিন নেতা।
বিএনপি সূত্রে জানা গেছে, দলের স্থায়ী কমিটির সদস্য আমীর খসরু মাহমুদ চৌধুরীকে চট্টগ্রাম-১০ (পাহাড়তলী-হালিশহর) আসন থেকে সরিয়ে চট্টগ্রাম-১১ (বন্দর-পতেঙ্গা) আসনে নেয়া হয়েছে। আর চট্টগ্রাম-১০ আসনে বিএনপির প্রয়াত নেতা আব্দুল্লাহ আল নোমানের ছেলে সাঈদ আল নোমানকে মনোনয়ন দিয়েছে দলটি। আবার চট্টগ্রাম-৪ (সীতাকুণ্ড ও চট্টগ্রাম নগরের আংশিক) আসনে বিএনপি চেয়ারপারসনের উপদেষ্টামণ্ডলীর সদস্য মোহাম্মদ আসলাম চৌধুরীকে চূড়ান্ত মনোনয়ন দিয়েছে দলটি। এর আগে এই আসনে বিএনপি নেতা কাজী মোহাম্মদ সালাউদ্দিনকে মনোনয়ন দিয়েছিল। তবে তৃণমূল নেতাকর্মীদের আন্দোলনের মুখে এ পরিবর্তন আনা হয়।
চট্টগ্রাম-১৪ আসনটি এতদিন লিবারেল ডেমোক্রেটিক পার্টি (এলডিপি) চেয়ারম্যান কর্নেল (অব.) অলি আহমদের ছেলে অধ্যাপক ওমর ফারুকের জন্য নির্ধারিত ছিল। সেখানে জসীমউদ্দিনকে মনোনয়ন দিয়েছে বিএনপি।
পিরোজপুর-১ আসনটি জোটের প্রার্থী হিসেবে জাতীয় পার্টি (কাজী জাফর) চেয়ারম্যান মোস্তফা জামাল হায়দারের জন্য নির্ধারিত ছিল। তাকে বাদ দিয়ে আসনটিতে জেলা বিএনপির অধ্যক্ষ আলমগীর হোসেনকে মনোনয়ন দেয়া হয়েছে। জানা গেছে, মোস্তফা জামাল শারীরিকভাবে অসুস্থ হওয়ায় মনোনয়ন থেকে বাদ পড়েছেন তিনি।
ঢাকা-১২ আসনে বিএনপির মনোনয়ন পেয়েছিলেন যুবদলের সাবেক সভাপতি সাইফুল আলম নীরব। তিনি ২০১৮ সালের নির্বাচনেও এই আসনে নির্বাচন করেছিলেন। তবে জোটের রাজনীতিতে বিপ্লবী ওয়ার্কার্স পার্টির সাধারণ সম্পাদক সাইফুল ইসলামকে এই আসনে মনোনয়ন চূড়ান্ত করেছে বিএনপি।
দলের ভেতরের বিরূপ প্রতিক্রিয়া ও প্রার্থীর শারীরিক অসুস্থতার প্রেক্ষাপটে মুন্সীগঞ্জ-২ আসনে প্রার্থী পরিবর্তন করেছে বিএনপি। মনোনীত প্রার্থী মিজানুর রহমান সিনহার পরিবর্তে দলের যুগ্ম মহাসচিব অ্যাডভোকেট আব্দুস সালাম আজাদকে চূড়ান্ত মনোনয়ন দেয়া দিয়েছে বিএনপি।
যশোরের ছয়টি আসনের মধ্যে চারটিতে প্রাথমিকভাবে মনোনয়ন পরিবর্তন করেছে বিএনপি। এর মধ্যে একটি আসন জোটের শরিক দলকে ছেড়ে দিয়েছে। যশোর-৫ (মনিরামপুর) আসনের প্রার্থী পরিবর্তন করা হয়। যশোর-১ (শার্শা) ও যশোর-৬ (কেশবপুর) আসনের প্রার্থী পরিবর্তন করেছে। যশোর-৫ আসনে প্রাথমিকভাবে মনিরামপুর উপজেলা বিএনপির সভাপতি শহীদ মোহাম্মদ ইকবাল হোসেনকে মনোনয়ন দিয়েছিল দল। পরে তাকে বাদ দিয়ে বিএনপির যুগপৎ আন্দোলনের শরিক জমিয়তে উলামায়ে ইসলামের (একাংশ) জ্যেষ্ঠ যুগ্ম মহাসচিব মুফতি রশীদ বিন ওয়াক্কাসকে মনোনয়ন দেয়া হয়। যশোর-৪ আসনে প্রথমে মনোনয়ন পান কেন্দ্রীয় নেতা ইঞ্জিনিয়ার টিএস আইয়ূব। নতুন করে পেয়েছেন দলের অভয়নগর উপজেলা সভাপতি মতিয়ার রহমান ফারাজী।
কিশোরগঞ্জ-৫ (নিকলী-বাজিতপুর) আসনে উপজেলা বিএনপির সভাপতি শেখ মুজিবুর রহমান ইকবালকে মনোনয়ন দিয়েছিল দরটি। তবে সম্প্রতি ১২ দলীয়
জোটের সমন্বয়ক ও বাংলাদেশ জাতীয় দলের চেয়ারম্যান অ্যাডভোকেট সৈয়দ এহসানুল হুদা নিজের দল বিলুপ্ত করে বিএনপিতে যোগ দিয়ে মনোনয়ন নিশ্চিত করেন। নড়াইল-২ আসনে বিএনপি নেতা মনিরুল ইসলামকে মনোনয়ন দিয়েছিল দল। তবে ১১ দলীয় জোটের প্রধান সমন্বয়ক ও এনপিপির চেয়ারম্যান ফরিদুজ্জামান ফরহাদকে এই আসনে মনোনয়ন চূড়ান্ত করা হয়েছে। তিনি ধানের শীষ প্রতীকে নির্বাচন করবেন।
নীলফামারী-১ আসনে জমিয়তে উলামায়ে ইসলামের মহাসচিব মঞ্জুরুল ইসলাম আফেন্দী, নীলফামারী-৩ আসনে জলঢাকা উপজেলার সাবেক চেয়ারম্যান সৈয়দ আলী, লালমনিরহাট-২ আসনে জেলা বিএনপির সহসভাপতি রোকনউদ্দিন আহমেদ বাবুল, বগুড়া-২ আসনে নাগরিক ঐক্যের সভাপতি মাহমুদুর রহমান মান্না, পাবনা-১ আসনে বেড়া উপজেলার সাবেক সাধারণ সম্পাদক শামসুর রহমান সামসু, ঝিনাইদহ-১ আসনে অ্যাটর্নি জেনারেল অ্যাডভোকেট আসাদুজ্জামান আসাদ, ঝিনাইদহ-২ আসনে জেলা বিএনপির সভাপতি এমএ মজিদ, ঝিনাইদহ-৪ আসনে বিএনপির মনোনয়ন পেয়েছেন গণঅধিকার পরিষদের সাবেক সাধারণ সম্পাদক রাশেদ খান। রাশেদ শনিবার গণঅধিকার থেকে পদত্যাগ করে বিএনপিতে যোগ দেন।
পটুয়াখালী-৩ আসনে গণঅধিকার পরিষদের সভাপতি নুরুল হক নুর, ময়মনসিংহ-১০ আসনে বিএনপি নেতা আক্তারুজ্জামান বাচ্চু, ঢাকা-১৩ আসনে এনডিএম চেয়ারম্যান ববি হাজ্জাজকে মনোনয়ন দিয়েছে বিএনপি। যদিও ববি এনডিএম বিলুপ্ত করে বিএনপিতে যোগ দিয়ে ধানের শীষ প্রতীকে নির্বাচন করবেন।
ঢাকা-২০ আসনে ধামরাই উপজেলা বিএনপির সভাপতি তমিজউদ্দিন, নরসিংদী-৩ জেলা বিএনপির নেতা মঞ্জুর এলাহী, নারায়ণগঞ্জ-৪ সমমনা জমিয়তে উলামায়ে ইসলামের মনির হোসেন কাসেমী, ব্রাহ্মণবাড়িয়া-২ জমিয়তে উলামায়ে ইসলামের জুনায়েদ আল হাবিব, ব্রাহ্মণবাড়িয়া-৬ গণসংহতি আন্দোলনের জোনায়েদ সাকি, কুমিল্লা-৭ আসনে এলডিপির সাবেক মহাসচিব ড. রেদোয়ান আহমেদ। এর মধ্যে ড. রেদোয়ান সম্প্রতি বিএনপিতে যোগ দিয়ে ধানের শীষে নির্বাচন করার ঘোষণা দিয়েছেন। লক্ষ্মীপুর-১ আসনে সদ্য বিলুপ্ত বিএলডিপি চেয়ারম্যান শাহাদাত হোসেন সেলিম। তিনি সম্প্রতি বিএনপিতে যোগ দিয়ে মনোনয়ন নিশ্চিত করেছেন। লক্ষ্মীপুর-৪ আসনে কেন্দ্রীয় নেতা আশরাফউদ্দিন নিজানকে মনোনয়ন দিয়েছে বিএনপি। এ কারণে বিএনপির সঙ্গ ত্যাগ করে নির্বাচন করার ঘোষণা দিয়েছে জেএসডি।
বাগেরহাট-১ আসনে মনোনয়ন পেয়েছেন বিশ্ব হিন্দু পরিষদ বাংলাদেশ শাখার মহাসচিব ও মতুয়া সমাজ ঐক্যজোটের সাধারণ সম্পাদক কপিল কৃষ্ণ মণ্ডল, বাগেরহাট-২ (সদর ও কচুয়া) আসনে মনোনয়ন পেয়েছেন জেলা বিএনপির আহ্বায়ক কমিটির সদস্য ও সুপ্রিম কোর্টের আইনজীবী ব্যারিস্টার শেখ মোহাম্মদ জাকির হোসেন। অন্যদিকে বাগেরহাট-৩ (মোংলা-রামপাল) আসনে মনোনয়ন পেয়েছেন জেলা বিএনপির যুগ্ম আহ্বায়ক ড. শেখ ফরিদুল ইসলাম। বাগেরহাট-৪ আসনে মনোনয়ন পেয়েছেন বিশ্ব হিন্দু পরিষদ বাংলাদেশ শাখার সভাপতি ও মতুয়া সমাজ ঐক্যজোটের সভাপতি সোমনাথ দে।
ঢাকা-১৭ আসনে আলোচনা ছিল সমমনা শরিক দল বিজেপি চেয়ারম্যান ব্যারিস্টার আন্দালিব রহমান পার্থর প্রার্থী হওয়ার। কিন্তু এই আসনে বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমান নির্বাচন করবেন বলে নিশ্চিত করা হয়েছে। এই আসনে তারেক রহমানের নির্বাচন পরিচালনায় রবিবার সন্ধ্যায় বিএনপি চেয়ারপারসনের উপদেষ্টা কাউন্সিল সদস্য আব্দুস সালামকে প্রধান সমন্বয়ক ও বিএনপি চেয়ারপারসনের উপদেষ্টা কাউন্সিল সদস্য ডা. ফরহাদ হালিম ডোনারসহ অন্যদের নিয়ে নির্বাচন পরিচালনা কমিটি গঠন করা হয়েছে।
অপরদিকে, বিজেপির পার্থ ভোলা-১ আসনে নির্বাচন করবেন। সেখানে জেলা বিএনপির সভাপতি গোলাম নবী আলমগীরকে মনোনয়ন দিয়েছিল বিএনপি।
নোয়াখালী-৫ আসনে বিএনপি ঘোষিত প্রার্থী মো. ফখরুল ইসলামের বিরুদ্ধে জুলাই গণঅভ্যুত্থানে হত্যা মামলা রয়েছে। তাছাড়া, চাত্রজীবন থেকেই বিএনপি ঘোষিত এই প্রার্থী বিপরীত মেরু জামায়াতের আদর্শের রাজনীতির সঙ্গে জড়িত বলে অভিযোগ উঠেছে। এ আসনেও প্রার্থী বদল হয়ে ছাত্রদলের সাবেক সিনিয়র সহসভাপতি বিএনপির কেন্দ্রীয় নেতা বজলুর করিম চৌধুরী আবেদ পেতে পারেন বলে সূত্র জানিয়েছে।
চট্টগ্রাম-১২ আসনে অভ্যুত্থানের পর এস আলম গ্রুপের গাড়িকাণ্ডে দল থেকে বহিষ্কৃত ও বিতর্কিত নেতা এনামুল হককে মনোনয়ন দেয়া নিয়ে নেতাকর্মীদের চাপ রয়েছে। এই আসনে কেন্দ্রীয় বিএনপির সাবেক সদস্য ও আওয়ামী আমলে গুমের শিকার সৈয়দ সাদাত আহমেদ স্বতন্ত্র নির্বাচনের জন্য মনোনয়ন জমা দিয়েছেন। এই আসনেও রদবদল হতে পারে।
নাটোর-১ (লালপুর-বাগাতিপাড়া) আসনে বিএনপির প্রয়াত নেতা ফজলুর রহমান পটলের ছোট মেয়ে জেলা বিএনপির আহ্বায়ক কমিটির যুগ্ম আহ্বায়ক অ্যাডভোকেট ফারজানা শারমিন পুতুলকে মনোনয়ন দিয়েছে বিএনপি। এখানে বিএনপির কেন্দ্রীয় সহদপ্তর সম্পাদক তাইফুল ইসলাম টিপু স্বতন্ত্র নির্বাচন করবেন।
নেত্রকোনা-৫ (পূর্বধলা উপজেলা) আসনে ঘোষিত প্রার্থীর বিতর্কিত কর্মকান্ডের কারণে রদবদলের চিন্তা রয়েছে বলে দলীয় সূত্রে জানা গেছে।
জ্ঞাত আয়বহির্ভূত সম্পদ অর্জন ও বিদেশে অর্থ পাচারের অভিযোগে চাঁদপুর-২ (মতলব) আসনে ত্রয়োদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে বিএনপির মনোনীত প্রার্থী ড. জালাল উদ্দিনসহ পাঁচজনের দেশত্যাগে নিষেধাজ্ঞা দিয়েছেন আদালত। এ আসনে মনোনয়ন পরিবর্তন হয়ে ডা. মাহবুবের রহমান শামীম পেতে পারেন বলে জানা গেছে। চাঁদপুর-৪ (ফরিদগঞ্জ) আসনে প্রার্থী ঘোষণার পর থেকে দলের মনোনয়নবঞ্চিত নেতাদের ‘বিদ্রোহ’ চলছে। এমন পরিস্থিতিতে ফরিদগঞ্জ উপজেলা বিএনপির সব কমিটির কার্যক্রম স্থগিত করেছে কেন্দ্রীয় বিএনপি। এই আসনেও প্রার্থীর রদবদল হতে পারে।