হাদির ওপর হামলা সুপরিকল্পিত ষড়যন্ত্র, প্রকৃত দুষ্কৃতকারীদের দৃষ্টান্তমূলক শাস্তির দাবি রিজভীর

বক্তব্য রাখছেন রুহুল কবির রিজভী
বক্তব্য রাখছেন রুহুল কবির রিজভী  © সংগৃহীত

ঢাকা–৮ আসনের স্বতন্ত্র প্রার্থী ও ইনকিলাব মঞ্চের মুখপাত্র শরিফ ওসমান হাদি এবং চট্টগ্রাম–৮ আসনে বিএনপির মনোনয়নপ্রাপ্ত প্রার্থী এরশাদ উল্লাহর ওপর সন্ত্রাসী হামলার ঘটনাকে কেন্দ্র করে গভীর উদ্বেগ ও ক্ষোভ প্রকাশ করে বিএনপির সিনিয়র যুগ্ম মহাসচিব রুহুল কবির রিজভী বলেছেন, এটি কোনো বিচ্ছিন্ন ঘটনা নয় বরং বিএনপি নেতাদের বিরুদ্ধে পরিকল্পিতভাবে দায় চাপানোর একটি সুপরিকল্পিত ষড়যন্ত্র। সুষ্ঠু তদন্তের মাধ্যমে প্রকৃত দুষ্কৃতকারীদের শনাক্ত করে দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি নিশ্চিত করতে হবে।

শনিবার (১৩ ডিসেম্বর) নয়াপল্টনে বিএনপির কেন্দ্রীয় কার্যালয়ের সামনে বিএনপির উদ্যোগে আয়োজিত প্রতিবাদ সমাবেশে তিনি এসব কথা বলেন। সমাবেশটি আয়োজন করা হয় হাদি ও এরশাদ উল্লাহর ওপর হামলার ঘটনার প্রতিবাদ এবং দ্রুত বিচার দাবিতে।

রিজভী আহমেদ বলেন, হামলার ঘটনার মাত্র এক থেকে দুই ঘণ্টার মধ্যেই সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে একটি উদ্দেশ্যপ্রণোদিত পোস্ট ছড়িয়ে দেওয়া হয়, যেখানে কোনো ধরনের তদন্ত ছাড়াই বিএনপির জাতীয় স্থায়ী কমিটির সদস্য মির্জা আব্বাসকে ইঙ্গিত করে আপত্তিকর ও মানহানিকর মন্তব্য করা হয়। তিনি প্রশ্ন তুলে বলেন, ঘটনার এত অল্প সময়ের মধ্যে যদি ফেসবুকে দোষী নির্ধারণ করে ফেলা হয়, তাহলে তদন্তের প্রয়োজন কোথায়? এটি কি ‘ঠাকুর ঘরে কে রে, আমি কলা খাইনি’ধরনের অবস্থা নয়?

তিনি বলেন, এই এলাকায় দীর্ঘদিন ধরে বিভিন্ন রাজনৈতিক দলের প্রভাবশালী নেতারা বসবাস করেন। শান্তিনগর, শাহজাহানপুর, খিলগাঁওসহ আশপাশের এলাকায় বহু বড় রাজনৈতিক নেতা থাকেন কিন্তু তারা কেউ কখনো এ ধরনের হামলার শিকার হননি। তাহলে কেন হঠাৎ করে শরিফ ওসমান হাদিকে টার্গেট করা হলো?

বিএনপির এই নেতা বলেন, শরিফ ওসমান হাদি কখনোই মির্জা আব্বাসের বিরুদ্ধে কোনো বক্তব্য দেননি, তাকে বিরক্ত করেননি বা রাজনৈতিকভাবে আক্রমণ করেননি। তিনি দেশের শত্রুদের বিরুদ্ধে কথা বলেছেন, অন্যায়ের বিরুদ্ধে কথা বলেছেন। ঢাকা–৮ আসনে স্বতন্ত্র প্রার্থী হওয়াই কি তার অপরাধ?

রিজভী আরও বলেন, একজন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের সদ্য সাবেক ছাত্রনেতা কোনো তদন্ত ছাড়াই সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে জাতীয় পর্যায়ের একজন সিনিয়র নেতাকে গ্যাংস্টার বলে আখ্যা দেয়। আমরা ৩৬ বছর আগেও ছাত্রনেতা ছিলাম, বড় বিশ্ববিদ্যালয়ের ভিপি ছিলাম কিন্তু কখনো অন্য দলের কোনো সিনিয়র নেতাকে এভাবে কুরুচিপূর্ণ ভাষায় আক্রমণ করিনি।

মির্জা আব্বাসের রাজনৈতিক জীবন তুলে ধরে তিনি বলেন, প্রায় ৫০ বছরের রাজনৈতিক ক্যারিয়ারে তার বিরুদ্ধে সহিংসতার কোনো অভিযোগ নেই। নেতাকর্মীরা নিজেরাই মজা করে বলেন, তিনি অনেক সময় বকাবকি করলেও কখনো কাউকে আঘাত করেননি বরং যাকে তিনি পছন্দ করেন না, সেই ব্যক্তিও অসুস্থ হলে তার কাছে গেলে খালি হাতে ফেরেন না। এমন একজন অভিভাবকসুলভ মানুষ হঠাৎ করে নিজের সন্তানের বয়সী একজন তরুণ প্রার্থীকে ক্ষতিগ্রস্ত করবেন, এটি কোনোভাবেই বিশ্বাসযোগ্য নয়।

রিজভী বলেন, পুলিশ কমিশনার নিজেই গণমাধ্যমে জানিয়েছেন যে হামলার সঙ্গে জড়িতদের পরিচয় শনাক্ত করা হয়েছে এবং তদন্তে গুরুত্বপূর্ণ তথ্য পাওয়া গেছে। এটি বিএনপির কোনো বক্তব্য নয়। এটি রাষ্ট্রের দায়িত্বশীল তদন্তকারী সংস্থার বক্তব্য। 

তিনি অভিযোগ করেন, একটি সংগঠিত মহল সুপরিকল্পিতভাবে বিএনপি নেতাদের বিরুদ্ধে দায় চাপাতে এই হামলার নকশা তৈরি করেছে। এই মাস্টারপ্লান এখন ধীরে ধীরে দিনের আলোতে পরিষ্কার হয়ে যাচ্ছে। জনগণ বুঝে গেছে, প্রশাসনও বুঝে গেছে কারা এই ভয়ংকর ষড়যন্ত্রের নায়ক।
রিজভী আরও বলেন, আমরা গণতন্ত্রের জন্য লড়াই করেছি। কিন্তু কেউ কেউ ৫ আগস্টের পর দেশে জনতাতন্ত্র ও বিশৃঙ্খলার সংস্কৃতি তৈরি করতে চেয়েছে। উশৃঙ্খল জনতাতন্ত্র দিয়ে কখনো সুশাসন, ন্যায়বিচার ও গণতান্ত্রিক সমাজ প্রতিষ্ঠা করা যায় না।

বক্তব্যের শেষ পর্যায়ে রিজভী বলেন, হাদির ওপর যারা হামলা চালিয়েছে, তারা যেই হোক জনগণ তাদের চিনে ফেলেছে। আমরা চাই সুষ্ঠু তদন্তের মাধ্যমে প্রকৃত অপরাধীদের শনাক্ত করে দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি নিশ্চিত করা হোক।

সমাবেশে বিএনপির জাতীয় স্থায়ী কমিটির সদস্য, সাবেক মন্ত্রী ও সাবেক মেয়র এবং ঢাকা–৮ আসনে ধানের শীষের প্রার্থী মির্জা আব্বাস উপস্থিত ছিলেন। এছাড়া দলের সংগ্রামী যুগ্ম মহাসচিব এডভোকেট আব্দুস সালাম সরফতুসহ ঢাকা মহানগর দক্ষিণে বিএনপির বিভিন্ন আসনের প্রার্থীরা, নেতাকর্মী এবং বিপুল সংখ্যক সমর্থক অংশ নেন। সমাবেশে বিভিন্ন গণমাধ্যমের সাংবাদিকরাও উপস্থিত ছিলেন।


সর্বশেষ সংবাদ

×
  • Application Deadline
  • December 17, 2025
  • Admission Test
  • December 19, 2025
APPLY
NOW!
GRADUATE ADMISSION
SPRING 2026!
NORTH SOUTH UNIVERSITY
Center of Excellence