চট্টগ্রাম-১৩ আসনে মনোনয়ন বদলে তারেক রহমানকে চার নেতার চিঠি 

বিএনপির লোগো
বিএনপির লোগো   © টিডিসি সম্পাদিত

চট্টগ্রাম–১৩ (আনোয়ারা–কর্ণফুলী) আসনে বিএনপির প্রাথমিক মনোনয়ন নিয়ে তৃণমূলে অসন্তোষ দেখা দিয়েছে। দলের দায়সারা নেতৃত্ব ও আন্দোলনের কঠিন সময় ‘মাঠে না থাকা’, এ দুই অভিযোগ তুলে সরওয়ার জামাল নিজামের মনোনয়ন পুনর্বিবেচনার দাবি জানিয়ে দলের ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমানের কাছে চিঠি দিয়েছেন দক্ষিণ জেলা বিএনপি ও স্থানীয় পর্যায়ের চার নেতা।

বুধবার (১৯ নভেম্বর) গুলশানে চেয়ারপার্সনের কার্যালয়ে লিখিত আবেদন জমা দেন দক্ষিণ জেলা বিএনপির সদস্যসচিব হেলাল উদ্দীন, সিনিয়র যুগ্ম আহ্বায়ক আলী আব্বাস ও কর্ণফুলী বিএনপির সাবেক আহ্বায়ক এস এম মামুন মিয়া। আবেদনে তারা দাবি করেন, তিনবারের সাবেক সাংসদ সরওয়ার জামাল নিজাম ২০০৮ সালের পর থেকে দলীয় রাজনীতিতে কার্যত নিষ্ক্রিয় ছিলেন। আন্দোলন-সংগ্রামের দীর্ঘ সময় তিনি দেশের বাইরে কাটিয়েছেন, অথচ নির্বাচন এলেই সক্রিয় হয়েছেন।

আবেদনে উল্লেখ করা হয়, ২০১৩ সালের আন্দোলনকালে তিনি ১৯ জানুয়ারি থেকে ২ সেপ্টেম্বর পর্যন্ত যুক্তরাষ্ট্রে ছিলেন। ২০১৪ সালের ৫ জানুয়ারির নির্বাচনের আগে কেবল মনোনয়ন নিতে দেশে ফেরেন। একই চিত্র দেখা যায়, ২০১৮ সালের নির্বাচনে মনোনয়ন পাওয়ার পরও মাঠে প্রচার দেখা যায়নি, পোস্টার লাগানো বা এজেন্ট নিয়োগের মতো মৌলিক দায়িত্বও পালন করেননি। আবেদনকারীদের দাবি, নির্বাচনের সময় তিনি পরিবারসহ আত্মগোপনে চলে যান।

স্থানীয় নেতারা আবেদনে আরও অভিযোগ করেন, ২০২৩ সালের ২৮ অক্টোবর বিএনপির নয়াপল্টন সমাবেশের আগেও সরওয়ার জামাল নিজাম দেশে ছিলেন না। তারা বলেন, ‘১৮ অক্টোবর দেশে ত্যাগ করে তিনি ফেরেন পরের বছরের জানুয়ারিতে, যখন আন্দোলনের সবচেয়ে কঠিন সময় চলছিল।’

এছাড়া তার অতীত রাজনৈতিক পরিচয় নিয়েও প্রশ্ন তোলা হয়েছে। আবেদনে দাবি করা হয়, ১৯৯১ সালের নির্বাচনে সরওয়ার জামাল নিজাম নৌকা প্রতীকের প্রধান নির্বাচনী এজেন্ট ছিলেন, যা দলের আদর্শের সঙ্গে সাংঘর্ষিক বলে উল্লেখ করা হয়।

দক্ষিণ জেলা বিএনপির নেতারা বলেন, তৃণমূলের কর্মীরা দীর্ঘদিন ধরে আন্দোলনে সক্রিয়। মাঠের এ কর্মীদের পাশ কাটিয়ে ‘সুবিধাবাদী’ বলে পরিচিত একজনকে মনোনয়ন দিলে তা হবে তৃণমূলের প্রতি অন্যায়। আবেদনকারীরা মনে করেন, প্রাথমিক মনোনয়ন তালিকা থেকে সরওয়ার জামাল নিজামের নাম বাদ দিলে তৃণমূলের মধ্যে আস্থা ফিরবে এবং সাংগঠনিক ঐক্য আরও দৃঢ় হবে।

দলীয় সূত্র বলছে, মনোনয়ন সংক্রান্ত এ আবেদন নিয়ে এখনো চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত হয়নি। তবে স্থানীয় পর্যায়ে বিষয়টি ব্যাপক আলোচনার জন্ম দিয়েছে।


সর্বশেষ সংবাদ