দেশে কি পুরোনো বন্দোবস্তই বহাল, প্রশ্ন গণমাধ্যম সংস্কার কমিশনের প্রধানের

কামাল আহমেদ
কামাল আহমেদ  © ফাইল ছবি

ঢাকা রিপোর্টার্স ইউনিটিতে (ডিআরইউ) আওয়ামী লীগ থেকে বহিষ্কৃত সাবেক মন্ত্রী আবদুল লতিফ সিদ্দিকী ও ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক হাফিজুর রহমান কার্জনকে হেনস্তা করে গ্রেপ্তার এবং পরে কারাগারে পাঠানোর ঘটনায় কঠোর সমালোচনা করেছেন গণমাধ্যম সংস্কার কমিশনের প্রধান ও জ্যেষ্ঠ সাংবাদিক কামাল আহমেদ।

সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম ফেসবুকে দেওয়া এক স্ট্যাটাসে তিনি প্রশ্ন তোলেন, “দেশে কি পুরোনো বন্দোবস্তই বহাল রইল?”

কামাল আহমেদ লিখেছেন, অন্তর্বর্তী সরকারের কাছে ন্যূনতম প্রত্যাশা ছিল তারা এমন কিছু করবে না বা হতে দেবে না, যাতে বিগত স্বৈরশাসকের ফ্যাসিবাদী কাজ জনআলোচনা থেকে হারিয়ে যায়। তিনি উল্লেখ করেন, ২০২৪ সালের আগের ১৫ বছরে অসংখ্য সভা আওয়ামী লীগ ও তাদের সহযোগীরা ভেঙে দিয়েছে। ওই সময়ে বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য, প্রবীণ বুদ্ধিজীবী, রাজনৈতিক নেতা, মুক্তিযোদ্ধা, এমনকি সাংবাদিকরাও শারীরিক ও মানসিক লাঞ্ছনা ও নির্যাতনের শিকার হয়েছেন। সন্ত্রাস দমন আইন ও ডিজিটাল নিরাপত্তা আইনের চরম অপব্যবহার ভুক্তভোগীরা কখনোই ভুলতে পারবেন না।

তিনি বলেন, স্বৈরাচারের অবসানের পর ধারণা করা হয়েছিল এসব কর্মকাণ্ডের ইতি ঘটবে এবং আইনের যথাযথ প্রয়োগ দেখা যাবে। কিন্তু ডিআরইউতে সাম্প্রতিক ঘটনাগুলো দেখে বিস্মিত হতে হয়। লতিফ সিদ্দিকীর অতীত অপরাধ বা কার্জন–পান্নার বিরুদ্ধে অভিযোগকে সামনে এনে সভা ভণ্ডুল করা কিংবা সন্ত্রাস দমন আইনে মামলা দেওয়ার সাফাই দেওয়া মানে তাঁদের অযথা ‘মজলুমের আসনে’ বসিয়ে দেওয়া।

কামাল আহমেদ আরও প্রশ্ন তোলেন, তাঁদের বিরুদ্ধে যেসব অভিযোগ রয়েছে, গত এক বছরে কেন তার কোনো বিচার হয়নি? যদি সভা আয়োজন আইনত নিষিদ্ধ না হয়, তবে মুক্ত নাগরিক হিসেবে সবারই সরকারের পক্ষে–বিপক্ষে মতপ্রকাশের স্বাধীনতা থাকা উচিত। কিন্তু এই স্বাধীনতা হরণ করে খারাপ দৃষ্টান্ত তৈরি করা হলো এবং ১৫ বছরের অপকর্মের আলোচনাকে আড়ালে ঠেলে দেওয়া হলো।

তিনি সতর্ক করেন, প্রকাশ্য সভায় অংশ নেওয়া বা বক্তব্য রাখাকে সন্ত্রাস হিসেবে গণ্য করাও অতীতের পুনরাবৃত্তি। অতীতে জামায়াত–শিবিরের ঘরোয়া বৈঠক থেকেও এভাবে গ্রেপ্তার করে সন্ত্রাসবিরোধী আইনে মামলা দেওয়া হয়েছে। তাই প্রশ্ন থেকেই যায়—দেশে কি পুরোনো বন্দোবস্তই বহাল রইল?


সর্বশেষ সংবাদ