স্কুল কমিটির দ্বন্দ্বে বিএনপি-জামায়াত সংঘর্ষ, আহত ১৫
- টিডিসি রিপোর্ট
- প্রকাশ: ০৭ আগস্ট ২০২৫, ০৬:১৬ PM , আপডেট: ০৮ আগস্ট ২০২৫, ১১:২৯ AM
ঝিনাইদহ সদরে স্কুলের অ্যাডহক কমিটি নিয়ে দ্বন্দ্বের জেরে বিএনপি ও জামায়াত সমর্থকদের মধ্যে সংঘর্ষের ঘটনা ঘটেছে। এতে অন্তত ১৫ জন আহত হয়েছেন। বৃহস্পতিবার (৭ আগস্ট) সকালে সদর উপজেলার ইসলামপুর হরিপুর কবি ফজের আলী মাধ্যমিক বিদ্যালয়ের সামনে এ ঘটনা ঘটে।
পুলিশ ও এলাকাবাসী সূত্রে জানা যায়, প্রায় চার মাস আগে ইসলামপুর-হরিপুর কবি ফজের আলী মাধ্যমিক বিদ্যালয়ের চার সদস্যের আহ্বায়ক কমিটি গঠন করা হয়। সেখানে আহ্বায়ক হন জামায়াত সমর্থিত জহুরুল ইসলাম। এ নিয়ে বিএনপির সঙ্গে তাদের বিরোধ তৈরি হয়। মাঝেমধ্যে দুই পক্ষের মধ্যে বাগ্বিতণ্ডা হতো। আজ সকালে জহুরুল বিদ্যালয়ে গেলে উভয় পক্ষের মধ্যে সংঘর্ষ শুরু হয়। এতে জামায়াতের ৯ জন ও বিএনপির ৬ নেতাকর্মী আহত হন।
আহতদের ঝিনাইদহ সদর হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে। সেখানে দুপুর ১২টার দিকে সদর হাসপাতালের জরুরি বিভাগে দুই দলের আহত নেতাকর্মীরা আরেক দফায় মারামারিতে লিপ্ত হন। এ সময় সেবাগ্রহীতাদের মধ্যে আতঙ্ক ছড়িয়ে পড়ে। খবর পেয়ে হাসপাতালে পুলিশ মোতায়েন করা হয়।
বিএনপির আহতরা হলেন, কানুহরপুর গ্রামের ইমদাত মোল্লা, একই গ্রামের মাসুম, গোলাম মোস্তফা, সুমন, রেহানা খাতুন ও মহারাজপুর গ্রামের রহমতুল্লাহ।
জামায়াতের আহতরা হলেন, জহুরুল ইসলাম, হুসাইন, মুজাব আলী, হাফিজুর রহমান, রুপচাঁদ আলী, ফয়জুল্লাহ, সলেমান মন্ডল, তোতা মিয়া ও সফর আলী।
সদর দক্ষিণ ছাত্রশিবিরের সাবেক সভাপতি জহুরুল বলেন, ‘প্রশাসন, শিক্ষা কর্মকর্তা ও আমরা—সব পক্ষের মানুষ মিটিং করে বোর্ডের মাধ্যমে আহ্বায়ক কমিটি হয়েছে এবং আমি আহ্বায়ক হয়েছি। প্রথম দিন আমরা স্কুলে গেলে তারা বাধা দেয়। আজও একই ঘটনার পুনরাবৃত্তি হয় এবং এরই জেরে এই মারামারি।’
মহারাজপুর ইউনিয়নের বিএনপির সভাপতি মো. শাহাজান আলী বিশ্বাস বলেন, বর্তমান প্রধান শিক্ষক আলমগীর হোসেন মন্টু নিজে কৌশল করে একটি পকেট কমিটি করেছে। সেই কমিটিতে জহুরুল ইসলামকে সভাপতি, প্রধান শিক্ষক আলমগীর হোসেন মন্টু, শিক্ষক প্রতিনিধি মোস্তফা এবং অভিভাবক সদস্য লাভলু (লাবু) চারজন আছে। তার মধ্যে শিক্ষক প্রতিনিধি মোস্তফা এবং অভিভাবক সদস্য লাভলু (লাবু) পদত্যাগ করেছে। সে কারণে ডিসি অফিস থেকে এলাকায় তদন্ত করে কমিটি না রাখার জন্য চিঠি দিয়েছে। কিন্তু তারা কোনো কিছু না মেনে আজ মিটিং করতে যায়।
তিনি আরও বলেন, দাতা সদস্য আমির উদ্দীন মোল্লার ছেলে এমদাত মোল্লা আমাকে সকালে ফোন দেয়। তার ফোন পেয়ে আমি এবং ইউনিয়ন বিএনপির সাধারণ সম্পাদকসহ কয়েকজন মিলে স্কুলে যাই। সেখানে গিয়ে দেখি প্রধান শিক্ষক, সভাপতি বেশ কিছু লোকজন নিয়ে স্কুল দখল করার জন্য স্কুল খুলার আগে থেকেই সেখানে উপস্থিত হয়েছে। আমরা সেখানে যেতে না যেতেই এমদাত মোল্লার সাথে তর্কে জড়িয়ে পড়ে তারা। কথা কাটাকাটির এক পর্যায়ে প্রধান শিক্ষক আলমগীর হোসেন, জহুরুলসহ তার বাবা, ভাইসহ সবাই এমদাতের ওপর হামলা করে। জহুরুল এমদাতকে প্রথমে ধারালো অস্ত্র দিয়ে আঘাত করলে উভয় পক্ষের মধ্যে মারামারি শুরু হয়। ওই ঘটনায় উভয় পক্ষের বেশ কয়েকজন আহত হয়েছে। আমরা চাই ঘটনার সুষ্ঠু তদন্ত করে দোষীদের আইনের আওতায় আনা হোক।
এ বিষয়ে ঝিনাইদহ সদর থানা পুলিশের ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) আব্দুল্লাহ আল মামুন বলেন, খবর পেয়ে পুলিশ ঘটনাস্থলে পৌঁছে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনে। এ ঘটনায় কাউকে আটক করা হয়নি এবং থানায় কেউ অভিযোগ করেননি। অভিযোগ পেলে তদন্ত করে আইনানুগ ব্যবস্থা নেওয়া হবে।