এনসিপির ‘বারবার’ অনুরোধের প্রেক্ষিতে সমাবেশস্থল পাল্টাল ছাত্রদল
- টিডিসি রিপোর্ট
- প্রকাশ: ৩০ জুলাই ২০২৫, ১১:৩৭ AM , আপডেট: ০২ আগস্ট ২০২৫, ১১:৫২ AM
জুলাই গণ-অভ্যুত্থান স্মরণে মাসব্যাপী কর্মসূচির অংশ হিসাবে ৩ আগস্ট সমাবেশস্থল বদলেছে জাতীয়তাবাদী ছাত্রদল। এনসিপির অনুরোধে শহীদ মিনার থেকে শাহবাগে কর্মসূচি পালন করবে দলটি। আজ বুধবার আয়োজিত সংবাদ সম্মেলন করে সমাবেশের বিষয়ে চূড়ান্ত এই সিদ্ধান্ত জানান ছাত্রদল সভাপতি রাকিবুল ইসলাম রাকিব। এনসিপির নেতৃবৃন্দের ‘বারবার অনুরোধের’ প্রেক্ষিতে এই সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে বলে জানান তিনি।
এর আগে একইদিন এদিন একই স্থানে (শহীদ মিনার) সমাবেশ করতে চায় জাতীয় নাগরিক পার্টি (এনসিপি) ও ছাত্রদল। অনুমতির জন্য আগে আবেদন করায় ছাত্রদল ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ থেকে শহীদ মিনারে প্রোগ্রামের অনুমতি পেয়েছে। তবে এনসিপি এখনো চূড়ান্ত অনুমোদন পায়নি। মূলত সেই প্রেক্ষিতেই আজ বুধবার এই সিদ্ধান্ত দিল ছাত্রদলের কেন্দ্রীয় শাখা।
সংবাদ সম্মেলনে ছাত্রদল জানায়, পূর্বঘোষিত ধারাবাহিক কর্মসূচিগুলোর মাঝে গুরুত্বপূর্ণ একটি কর্মসূচি ছিল ৩ আগস্টে কেন্দ্রীয় শহীদ মিনারে-ছাত্র সমাবেশ। জুন মাসেই ঘোষিত এই কর্মসূচিটি পালনের জন্য ২২ জুন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রক্টরের বরাবর লিখিত আবেদন করা হয়। উক্ত আবেদনের প্রেক্ষিতে গত ২৬ জুন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রক্টর অফিস থেকে আমাদেরকে ৩ তারিখে শহীদ মিনারে ছাত্র সমাবেশের অনুমতি প্রদান করা হয়।
তবে আমাদের কর্মসূচি ঘোষণার কয়েকদিনের মাঝে জাতীয় নাগরিক পার্টিও একইদিনে একই স্থানে সমাবেশ করার কথা আমরা প্রথমে গণমাধ্যম মারফত অবগত হই। পরবর্তীতে নাগরিক পার্টির নেতৃবৃন্দ ব্যক্তিগতভাবে বারবার আমাদের সাথে এই বিষয়ে যোগাযোগ করে সমাবেশের স্থান পরিবর্তনের অনুরোধ জানান। এই বিষয়ে আমাদের সিনিয়র নেতৃবৃন্দের সাথেও তারা যোগাযোগ করেন।
‘সকল প্রস্তুতি সম্পন্ন করার পর কর্মসূচিটি ভিন্ন কোন স্থানে সরিয়ে নেয়া খুবই বিব্রতকর ও কষ্টসাধ্য কাজ। কর্মদিবসে আমাদের কর্মসূচির কারণে যেন কোন জনভোগান্তি তৈরি না হয়, সমাবেশটি শহীদ মিনারে করতে চাওয়ার এটিও ছিল একটি অন্যতম কারণ। তাছাড়া আমরাই যেহেতু কর্মসূচিটি প্রথমে ঘোষণা করি এবং যথাযথ কর্তৃপক্ষের অনুমতিও লাভ করি, তাই উক্ত স্থানে সমাবেশ করার আমরাই একমাত্র বৈধ দাবিদার।’
সংবাদ সম্মেলনে ছাত্রদল সভাপতি আরও বলেন, ‘এ ধরনের একটি কর্মসূচি ঘোষণা এবং সকল প্রস্তুতি সম্পন্ন করার পর কর্মসূচিটি ভিন্ন কোন স্থানে সরিয়ে নেয়া খুবই বিব্রতকর ও কষ্টসাধ্য কাজ। কর্মদিবসে আমাদের কর্মসূচির কারণে যেন কোন জনভোগান্তি তৈরি না হয়, সমাবেশটি শহীদ মিনারে করতে চাওয়ার এটিও ছিল একটি অন্যতম কারণ। তাছাড়া আমরাই যেহেতু কর্মসূচিটি প্রথমে ঘোষণা করি এবং যথাযথ কর্তৃপক্ষের অনুমতিও লাভ করি, তাই উক্ত স্থানে সমাবেশ করার আমরাই একমাত্র বৈধ দাবিদার। তারপরেও একটি উদার, গণতান্ত্রিক, সহাবস্থানে বিশ্বাসী, পরমতসহিঞ্চু, গ্রহণযোগ্য সকল মত ও পথের প্রতি শ্রদ্ধাশীল সংগঠন হিসেবে আমরা জাতীয় নাগরিক পার্টির অনুরোধকে বিবেচনায় নিয়ে আমাদের ছাত্র সমাবেশের স্থানটি পরিবর্তন করার সিদ্ধান্ত গ্রহণ করেছি। আমাদের ৩ আগস্টের সমাবেশটি সেদিন শহীদ মিনারের পরিবর্তে শাহবাগে অনুষ্ঠিত হবে। একান্তই উদারনৈতিক রাজনৈতিক অবস্থানের প্রতিফলন হিসেবে এই স্থান পরিবর্তনের কারণে রাজধানীর ব্যস্ত সড়কে যদি কোনরূপ ভোগান্তি তৈরি হয়, এই অনিচ্ছাকৃত সমস্যার জন্য আমরা নগরবাসীর নিকট অগ্রীম দুঃখ প্রকাশ করছি। আশা করছি তারা এই দিনটির তাৎপর্য ও আমাদের স্থান পরিবর্তনের উদারতাকে অবশ্যই তাদের বিবেচনায় রাখবেন।’
রাকিব আরও বলেন, আমরা চাইলে সমাবেশটি ঘোষিত স্থানেই করতে পারতাম। কিন্তু আমরা কাঁটার পরিবর্তে ফুল দিলাম। আমরা উস্কানির বিপরীতে শান্তি ও সহানস্থানের বার্তা দিলাম। আমরা মনে করি, আমরা অকারণ উত্তেজনা ছড়ানোর বদলে উদারতার অনন্য দৃষ্টান্ত স্থাপন করলাম। আমরা মনে করি, এই ঘটনা বাংলাদেশের ছাত্ররাজনীতির ইতিহাসে শান্তি, সম্প্রীতি, উদারতা ও সৌহার্দ্যের অনন্য নজীর হয়ে থাকবে। যারা সফল অভ্যুত্থানের পর অভ্যুত্থানের একক মালিক হয়ে উঠতে চাইছেন, আশা করি এই উদারতার পর তারা নিজেদের সম্ভিত ফিরে পাবেন এবং সঠিক ও সুস্থ ধারায় নিজেদের রাজনৈতিক কার্যক্রম পরিচালনা করবেন। অন্য সকল মত ও পথের প্রতি নূন্যতম শ্রদ্ধা পোষণ করবেন। সকল বিষয়ে হঠকারিতার রাস্তা পরিত্যাগ করবেন।