আজ ৯৫তম জন্মবার্ষিকী তাজউদ্দীন আহমদের
- টিডিসি রিপোর্ট
- প্রকাশ: ২৩ জুলাই ২০২০, ০৮:২৪ AM , আপডেট: ২৩ জুলাই ২০২০, ০৮:২৪ AM
আজ ২৩ জুলাই, বৃহস্পতিবার। বাংলাদেশের প্রথম প্রধানমন্ত্রী তাজউদ্দীন আহমদের ৯৫তম জন্মদিন। ১৯২৫ সালের এই দিনে গাজীপুরের কাপাসিয়ার দরদরিয়া গ্রামে জন্মগ্রহণ করেন জাতীয় চার নেতার অন্যতম এই নেতা। তার পিতা মৌলভী মো. ইয়াসিন খান এবং মাতা মেহেরুননেসা খান। ৪ ভাই, ৬ বোনের মাঝে ৪র্থ ছিলেন তাজউদ্দীন আহমদ।
১৯৪৩ সালে ছাত্রজীবনে রাজনীতিতে হাতেখড়ি হয় তাজউদ্দীনের। পরের বছর মাত্র ১৯ বছর বয়সে বঙ্গীয় মুসলিম লীগের কাউন্সিলর নির্বাচিত হন। ১৯৪৭ সালে পাকিস্তান প্রতিষ্ঠার পরপরই বুঝতে পারেন মুসলিম লীগ বাংলাদেশে নয়া উপনিবেশ কায়েম করছে। বাঙালির স্বাধীনতা আসেনি। তাজউদ্দীন আহমদ মুসলিম লীগ থেকে বেরিয়ে বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের নেতৃত্বে ১৯৪৮ সালের ৪ জানুয়ারি ছাত্রলীগ গঠন করেন।
তখন ছিল ভাষা আন্দোলনের উষালগ্ন। পরের বছর পূর্ববাংলা স্বাধিকারের স্বপ্নে মওলানা ভাসানীর নেতৃত্বে গঠিত হয় আওয়ামী মুসলিম লীগ। যার অন্যতম উদ্যোক্তা ছিলেন তাজউদ্দীন। তিনি একাধিকবার এই দলের সাধারণ সম্পাদকের দায়িত্ব পালন করেন। ১৯৫৪ সালের নির্বাচনে যুক্তফ্রন্টের প্রার্থী হয়ে বিপুল ভোটে পরাজিত করেন মুসলিম লীগ প্রার্থীকে। তিনি আইয়ুববিরোধী আন্দোলনের অগ্রণী সেনা ছিলেন।
বঙ্গতাজের নাম বাংলার ইতিহাসে অবিস্মরণীয় হয়ে আছে মুক্তিযুদ্ধকালীন ভূমিকার কারণে। ১৯৭১ সালের ২৫ মার্চ পাকিস্তানি সেনারা গণহত্যা শুরু করে। গ্রেফতার হন বঙ্গবন্ধু। আওয়ামী লীগ হয় ছত্রভঙ্গ। এ অবস্থায় ভারতে যান তাজউদ্দীন আহমদ। অন্য নেতাদের সহায়তায় গঠন করেন স্বাধীন বাংলার প্রবাসী সরকার। তিনি এ সরকারের প্রধানমন্ত্রী হন।
বঙ্গবন্ধুর অনুপস্থিতিতে চরম সংকটময় সময়ে তাজউদ্দীনের সরকার মুক্তিযুদ্ধের নেতৃত্ব দেয়। এ সরকারের অবিস্মরণীয় সফলতায় বিশ্ব বিবেকের সমর্থন পায় মুক্তিযুদ্ধ।
১৯৭২ সালের ১০ জানুয়ারি বঙ্গবন্ধু পাকিস্তানের কারাগার থেকে দেশে ফিরে আসা পর্যন্ত প্রধানমন্ত্রীর দায়িত্ব পালন করেন বঙ্গতাজ। ১৯৭২ সালের ১২ জানুয়ারি বঙ্গবন্ধুর সরকারে অর্থ ও পরিকল্পনামন্ত্রীর দায়িত্ব নেন তাজউদ্দীন আহমদ।
আদর্শ ও নীতিগত প্রশ্নে ১৯৭৪ সালের ২৬ অক্টোবর পদত্যাগ করেন তিনি। তবে তার প্রিয় ‘মুজিব ভাই’কে ছেড়ে যাননি। ১৯৭৫ সালের ১৫ আগস্ট ঘাতকরা বঙ্গবন্ধুকে হত্যা করলে তিনিই প্রথম ধানমন্ডির ৩২ নম্বরের দিকে এগিয়ে যান। পরবর্তী সময়ে গ্রেফতার হন। আটক অবস্থায় ওই বছরের ৩ নভেম্বর কারাগারে জাতীয় অন্য তিন নেতার সঙ্গে তাকেও হত্যা করে ঘাতকরা।
তার স্ত্রী সৈয়দা জোহরা তাজউদ্দীনও বাংলাদেশ আওয়ামী লীগের ভারপ্রাপ্ত সভাপতি ও সভাপতিমণ্ডলীর সদস্য ছিলেন। তাদের চার সন্তান। বড় মেয়ে শারমিন আহমদ; মেজো মেয়ে গাজীপুর-৪ আসনের বর্তমান সংসদ সদস্য সিমিন হোসেন রিমি এবং ছোট মেয়ে মাহজাবিন আহমদ মিমি এবং একমাত্র ছেলে সাবেক স্বরাষ্ট্র প্রতিমন্ত্রী তানজিম আহমেদ সোহেল তাজ।