ইউরোপ-আমেরিকায় ছড়িয়ে পড়া বিরল মাংকিপক্স নিয়ে যা জানা যাচ্ছে

আফ্রিকার বিরল মাংকিপক্স রোগ ইউরোপ-আমেরিকায় ছড়িয়ে পড়েছে
আফ্রিকার বিরল মাংকিপক্স রোগ ইউরোপ-আমেরিকায় ছড়িয়ে পড়েছে  © বিবিসি

আফ্রিকার বিরল মাংকিপক্স রোগ যুক্তরাষ্ট্র, কানাডা, স্পেন, পর্তুগাল ও ব্রিটেনে ছড়িয়ে পড়েছে। বিরল এই রোগের সর্বশেষ রোগী পাওয়া গেছে যুক্তরাষ্ট্রে। ক্যানাডায় ১৩টি ঘটনা স্বাস্থ্য কর্তৃপক্ষ তদন্ত করে দেখছে। পর্তুগালে পাঁচ ব্যক্তি ও স্পেনে সাতজন সংক্রমিত হয়েছে।ব্রিটেনে আক্রান্ত হয়েছে নয়জন।

এ রোগ ছড়ায় মাংকিপক্স নামে ভাইরাসের মাধ্যমে। এটি অনেকটা জল বসন্তের ভাইরাসের মতো। তবে ক্ষতিকারক প্রভাব কম। বিশেষজ্ঞরা বলছেন, এর সংক্রমণের হারও কম। পশ্চিম ও মধ্য আফ্রিকার নিরক্ষীয় বনাঞ্চলে এর প্রাদুর্ভাব বেশি।

মাংকিপক্স দুই ধরনের হয়। মধ্য আফ্রিকান এবং পশ্চিম আফ্রিকান। ব্রিটেনে সংক্রমিত হয়েছেন যে দুজন, তারা সম্প্রতি নাইজেরিয়া সফর করেছেন। তারা পশ্চিম আফ্রিকা ধরনে আক্রান্ত বলে সন্দেহ করা হচ্ছে। তৃতীয় ব্যক্তি একজন স্বাস্থ্যকর্মী। তিনি রোগীদের কাছ থেকে আক্রান্ত হয়েছেন বলে মনে করা হচ্ছে।

আরো পড়ুন: করোনা নিয়ন্ত্রণে আরেমিকার চেয়ে এগিয়ে বাংলাদেশ

এ রোগের প্রাথমিক উপসর্গ জ্বর, মাথাব্যথা, হাড়ের জয়েন্ট ও মাংসপেশিতে ব্যথা এবং অবসাদ। জ্বর শুরুর পর শরীরে গুটি দেখা দেয়। এর জন্য চুলকানি হয়। পরে ক্ষত দেখা দেয়। গুটি বসন্তের মতোই রোগী সুস্থ হয়ে উঠলেও দেহে ক্ষত চিহ্ন রয়ে যায়। সংক্রমিত রোগীর সংস্পর্শ থেকে এ ভাইরাস ছড়ায়। শ্বাস-প্রশ্বাসের মাধ্যমে, ক্ষত থেকে এবং নাক, মুখ ও চোখের ভেতর দিয়ে ভাইরাস মানুষের দেহে প্রবেশ করে।

বিশেষজ্ঞরা জানাচ্ছেন, বানর, ইঁদুর, কাঠবিড়ালি, মাংকিপক্সে আক্রান্ত রোগীর ব্যবহৃত বিছানাপত্র থেকেও এ ভাইরাস সংক্রমিত করতে পারে। বেশিরভাগ ক্ষেত্রে এর প্রভাব মৃদু, জল বসন্তের মতোই। কয়েক সপ্তাহের মধ্যে আক্রান্ত রোগী সুস্থ হয়ে ওঠেন।

যুক্তরাষ্ট্রে প্রথম এই রোগী শনাক্ত হয় ২০০৩ সালে। দেশটিতে এ পর্যন্ত ৮১টি ঘটনা ধরা পড়েছে। এর বড় প্রকোপ দেখা দেয় নাইজেরিয়াতে ২০১৭ সালে। সে দেশে ১৭২ জন আক্রান্ত হন।

এ ভাইরাসের কোনো চিকিৎসা নেই। তবে উপযুক্ত পদক্ষেপ নিয়ে প্রকোপ রোধ করা যায়। গুটি বসন্তের টিকা ৮৫ শতাংশ কার্যকর বলে দেখা গেছে। মাংকিপক্সের জন্য টিকাই ব্যবহার করা হচ্ছে। কঙ্গোতে আক্রান্ত বন্য প্রাণীর ওপর গবেষণা চলছে।

বিশেষজ্ঞরা বলছেন, ব্যাপক হারে ছড়িয়ে না পড়লে দুশ্চিন্তার কিছু নেই। ইংল্যান্ডের জনস্বাস্থ্য বিভাগের কর্মকর্তা নিক ফিন বলছেন, মাংকিপক্সের ভাইরাস সহজে মানুষের মধ্যে ছড়াতে পারে না। সে কারণেই শঙ্কার কিছু নেই। খবর: বিবিসির।


সর্বশেষ সংবাদ