জেনে নিন ৪০ বছর বয়সী ‘মেম লর্ড’ ওসিতার নানা অজানা

ওসিতা আইহেম
ওসিতা আইহেম  © টিডিসি ফটো

‘মেম লর্ড’ খ্যাত নাইজেরিয়ান অভিনেতা ওসিতা আইহেম। সোশ্যাল মিডিয়ার সুবাদে পুরো বিশ্ব তাকে চিনি। বিশেষ করে কোন মজার ভিডিও, মিমে তার উপস্থিতি ব্যাপক। অনেকেই ভাবে তিনি একজন কিশোর। কিন্তু না। কি শুনে অবাক হচ্ছেন! অবাক হওয়ারই কথা। দেখতে কিশোর মনে হলেও তার বয়স এখন চল্লিশ বছর। কিশোর বয়সে যখন তিনি পর্দায় অভিনয় শুরু করেছিলেন তখন যেমন ছিলেন এখনও তেমনই আছেন।

মাত্র ৪ ফুট ৩ ইঞ্চি ও ৪৫ কেজি ওজনের এই ব্যাক্তিকে আমরা নিয়মিতই দেখি কিন্তু তার সম্পর্কে জানি খুব কম মানুষেই। নাইজেরিয়ার এই জীবন্ত কিংবদন্তী ওসিতা আহেমি গত ২০ ফেব্রুয়ারি ৪০ বছরে পা দিয়েছে। আজকে আমরা তার সম্পর্কে জানবো।

আরও পড়ুন: ঝড়ে উপড়ে গেছে বিজ্ঞানী নিউটনের সেই আপেল গাছ!

ওসিতা আইহেম জন্ম ১৯৮২ সালের ২০ শে ফেব্রুয়ারি এক গরিব ঘরে। তিনি নাইজেরিয়ার ইমো স্টেটের এমবাইটোলির বাসিন্দা। প্রাথমিক ও মাধ্যমিক বিদ্যালয়ের পড়াশোনা শেষে লাগোস স্টেট বিশ্ববিদ্যালয় থেকে কম্পিউটার সাইন্সে স্নাতক ডিগ্রি অর্জন করেন।

চেয়েছিলেন আইনজীবি হতে কিন্তু হয়ে গেলেন অভিনেতা। ২০০১ সালে আনুষ্ঠানিকভাবে নাইজেরিয়ান মুভি ইন্ডাস্ট্রিতে (নলিউড) যোগ দিয়েছিলেন। ইহেমের উচ্চতা তাকে নাইজেরিয়ান চলচ্চিত্র শিল্পের অন্যান্য অভিনেতাদের থেকে আলাদা করেছে। এই উচ্চতার কারণে তাকে সবাই সহজে চিনতে পারে।

কর্মজীবনের শুরুতে ওসিতা আইহেম প্রায়ই একটি শিশুর ভূমিকায় টাইপকাস্ট ছিল। ২০০২ সালে তার মতই আরেক বিখ্যাত কমেডিয়ান চিনেডু ইকেডিজের সাথে কমেডি চলচ্চিত্র ‘আকি না উকওয়া’তে অভিনয় করে খ্যাতি অর্জন। সেখানে তিনি ‘পাওপাও’ চরিত্রে অভিনয় করে ব্যাপক পরিচিতি পেয়েছেন।

‘পাওপাও’ চরিত্রে ইহেম একটি দুষ্টু শিশুর ভূমিকায় অভিনয় করেছেন। তিনি তার অনেক ছবিতে শিশুর চরিত্রে অভিনয় করেছেন কিন্তু পরবর্তীতে আরও পরিণত চরিত্রেও করেছেন। পরবর্তীকালে, চিনেডু-ইহেম জুটি হয়ে ওঠে। অনেকের বিবেচনায় তারা সর্বকালের অন্যতম মজার নলিউড কমেডিয়ান জুটি।

ফিল্ম ইন্ডাস্ট্রি থেকে অনানুষ্ঠানিকভাবে অবসর নেয়ার পরও ‘পাওপাও’ এখন তার ছোট ক্লিপগুলি দিয়ে বিনোদন পরিবেশন করে চলেছে। ওসিতার চরিত্র টুইটার, ফেসবুক, ইউটিউবসহ অন্যান্য সামাজিক মিডিয়া প্ল্যাটফর্মে ২০১৯ সাল থেকে মেমের মাধ্যমে ছড়িয়ে পড়েছে। মূলত ভিন্ন দেশেরে দর্শকরা তাকে সেই হিসেবেই চিনতে পেরেছে। এসব ক্লিপের মাধ্যমে তিনি ‘মেম লর্ড’ খ্যাতি অর্জন করেছে।

আরও পড়ুন: প্রকৌশল গুচ্ছে ‘সেকেন্ড টাইম’ রাখার বিষয়ে আলোচনা করে সিদ্ধান্ত

তিনি রোটারি ইন্টারন্যাশনাল ডিস্ট্রিক্ট-৯১১০ এর নিউ জেনারেশন অ্যাম্বাসেডর এবং ইন্সপায়ারড-১০১ বইয়ের লেখক। আইহেম একশোরও বেশি সিনেমায় অভিনয় করেছেন।

তিনি তার কর্মজীবনে একজন কৌতুক অভিনেতা থেকে বহুমুখী প্রতিষ্ঠিত অভিনেতা হয়ে উঠেছেন। তাকে নাইজেরিয়ার সবচেয়ে বিখ্যাত অভিনেতাদের একজন বলে মনে করা হয়। ২০০৭ সালে আইহেম আফ্রিকান মুভি একাডেমি অ্যাওয়ার্ডে ‘লাইফটাইম অ্যাচিভমেন্ট পুরস্কার’ পান। নাইজেরিয়ান ফিল্ম ইন্ডাস্ট্রির বৃদ্ধিতে তার অবদানের জন্য ২০১১ সালে রাষ্ট্রপতি গুডলাক জোনাথন কর্তৃক নাইজেরিয়ান জাতীয় সম্মানে ভূষিত হন। এছাড়া ২০১৪ সালে তিনি ‘আফ্রিকান ম্যাজিক ভিউয়ার্স চয়েজ এওয়ার্ড’ এ সেরা অভিনেতা ক্যাটাগরিতে জয়ী হয়েছিলেন।

তিনি ‘ইন্সপায়ার মুভমেন্ট আফ্রিকা’ প্রতিষ্ঠাতা যা তিনি তরুণ নাইজেরিয়ান এবং আফ্রিকানদের মনকে অনুপ্রাণিত, এবং উদ্দীপিত করার জন্য প্রতিষ্ঠা করেছিলেন। এছাড়াও বেশ কিছু ট্রান্সপোর্ট কোম্পানি ও হোটেলের মালিক তিনি।


সর্বশেষ সংবাদ