হিজাব পরে স্কুলে ঢুকতে বাধা, বিশ্বজুড়ে সমালোচনা

হিজাব পরে স্কুলে ঢুকতে বাধা দেয়ায় বিতর্ক চলছে বিশ্বজুড়ে।
হিজাব পরে স্কুলে ঢুকতে বাধা দেয়ায় বিতর্ক চলছে বিশ্বজুড়ে।  © সংগৃহীত

কর্ণাটকের বেশ কিছু শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে হিজাব পরে ঢুকতে বাধা দেওয়ায় বিশ্বজুড়ে সমালোচনায় সরব হয়েছেন তারকারা। সোমবার (১৪ ফেব্রুয়ারি) সকালে রাজ্যের স্কুল-কলেজের  ক্যাম্পাসগুলোতে প্রবেশের আগে শিক্ষার্থীদের হিজাব খুলে ফেলার নির্দেশ দেয়া হয়। এরপর বিশ্বজুড়ে অনেক তারকারা শিক্ষার্থীদের সমর্থনে বিভিন্ন সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে তাদের ক্ষোভ প্রকাশ করছেন। খবর ভারতীয় সংবাদ সংস্থা এএনআই।

এ ঘটনার আগে শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান বন্ধের মধ্যে  (গত সপ্তাহে বন্ধ থাকার পরে) হাইকোর্টের এক আদেশে জানানো হয়েছিল, শিক্ষা প্রতিষ্ঠানগুলো আবার খুলে দেওয়া হতে পারে  তবে কোনও ধর্মীয় পোশাকের অনুমতি দেওয়া হবে না।

আরও পড়ুন: পরীক্ষার ফলে অনিয়ম করায় ঢাবির দুই শিক্ষককে অব্যাহতি

সংবাদ মাধ্যমটির শেয়ার করা ভিডিওতে দেখা যায়, একজন শিক্ষক মান্ডা জেলার একটি সরকারি স্কুলের গেটে হিজাব পরা ছাত্রীদের থামিয়ে দিচ্ছেন। সে সময় ওই শিক্ষককে বলতে শোনা যায়, "ওটা সরান, ওটা সরান"।

ভিডিওটিতে দেখা যাচ্ছে কিছু অভিভাবক তাদের সন্তানদের হিজাব পড়ে স্কুলে প্রবেশ করতে বাধা দেওয়ায় ওই শিক্ষকের সঙ্গে তর্কে জড়িয়েছেন। তর্কাতর্কির এক পর্যায়ে ছাত্রীরা হিজাব সরিয়ে  ( কেবল মাস্ক পড়ে) স্কুলে প্রবেশ করে।

একজন ভদ্রলোক যিনি দুজন ছাত্রীর বাবা তিনি কিছুক্ষণের জন্য স্কুলের গেটে দাঁড়িয়েছিলেন এরপর শিক্ষকের সঙ্গে তার বেশ সময় ধরে তর্ক চলে এবং এক পর্যায়ে হিজাব সরিয়ে তার সন্তানদের স্কুলে ঢুকার অনুমতি দেওয়া হয়।

আরও পড়ুন: গুচ্ছের ভর্তি পরীক্ষার স্কোর ৩৬, বিশ্ববিদ্যালয়ে হলো ৪২.২৫

নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক একজন  অভিভাবকের উদ্ধৃতি দিয়ে এএনআই জানিয়েছে, শিক্ষকরা অভিভাবকদের অনুরোধ করছেন যাতে শিক্ষার্থীরা হিজাব পড়ে স্কুলে প্রবেশ না করে। অন্যদিকে, অভিভাবকরা অনুনয় করছিল তাদের সন্তানদের ক্লাসরুমে যেতে দেয়ার জন্য। অভিভাবকদের অভিযোগ হল পরে না হয় হিজাব খুলে নেওয়া যেতে পারে কিন্তু স্কুলের শিক্ষকরা তো প্রবেশের অনুমতিই দিচ্ছে না।

উল্লেখ্য, কর্ণাটকের উডুপি জেলার ছয়জন নারী শিক্ষার্থী তাদের উদ্বেগ প্রকাশ করার পর ডিসেম্বরে মুসলিম শিক্ষার্থীদের হিজাব পরা নিষিদ্ধ করা নিয়ে বিতর্ক শুরু হয়। এরপর তারা হাইকোর্টের দ্বারস্থ হন। তারপর, মামলাটি সুপ্রিম কোর্টের কাছে হস্তান্তর করা হয়েছে। তবে, ভারতের প্রধান বিচারপতি এনভি রমনা জানিয়েছেন, "আমরা শুধুমাত্র উপযুক্ত সময়ে হস্তক্ষেপ করব।" গত কয়েক সপ্তাহ ধরে বিক্ষোভ দ্রুত বৃদ্ধি পেয়েছে; গত সপ্তাহে মান্ডিয়ার এক তরুণ শিক্ষার্থীকে হেনস্থা করেন  'জয় শ্রী রাম' বলে স্লোগান দেয়া এক ব্যক্তি। এছাড়াও বিক্ষোভ দমাতে পুলিশ টিয়ারশেল ও পাথর নিক্ষেপ করেছে বলে অভিযোগ উঠেছে। ভারতে সাম্প্রদায়িক উত্তেজনা নিয়ে রাজনৈতিক বিতর্ক ছাড়াও, নোবেল বিজয়ী মালালা ইউসুফজাই এবং ফরাসি ফুটবলার পল পগবার মতো আন্তর্জাতিক ব্যক্তিত্বরাও এতে  শিক্ষার্থীদের সমর্থনে সরব হয়েছেন।


সর্বশেষ সংবাদ