ভারতের পশ্চিমবঙ্গ

অনলাইনে নয়, মাধ্যমিক-উচ্চ মাধ্যমিক পরীক্ষা অফলাইনেই হবে

মাধ্যমিক ও উচ্চ মাধ্যমিক পরীক্ষা
মাধ্যমিক ও উচ্চ মাধ্যমিক পরীক্ষা  © প্রতীকী ছবি

করোনাভাইরাসের সংক্রমণ বেড়ে যাওয়ার প্রেক্ষাপটে চলতি মাসের ৩ তারিখ থেকে বন্ধ রয়েছে ভারতের পশ্চিমবঙ্গের সব শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান। এই অবস্থায় চলতি বছরের মাধ্যমিক ও উচ্চ মাধ্যমিক পরীক্ষা অফলাইন নাকি অনলাইন হবে? এমন অনিশ্চয়তার অবসান ঘটাল মধ্যশিক্ষা পর্ষদ এবং উচ্চ উচ্চ মাধ্যমিক শিক্ষা সংসদ।

পর্ষদের সভাপতি কল্যাণময় গঙ্গোপাধ্যায় এবং সংসদের সভাপতি চিরঞ্জীব ভট্টাচার্য জানিয়ে দিয়েছেন, মাধ্যমিক ও উচ্চ মাধ্যমিক পরীক্ষা অফলাইনেই হবে। তার জন্য যাবতীয় পরিকল্পনা এবং প্রস্তুতিও শুরু হয়েছে। তবে উচ্চ মাধ্যমিক পরীক্ষা ‘হোম সেন্টার’ বা নিজের নিজের স্কুলে হলেও মাধ্যমিক হবে নির্দিষ্ট পরীক্ষা কেন্দ্রে। লিখিত ও প্র্যাক্টিক্যাল দুই পরীক্ষাই হবে সংক্ষেপিত পাঠ্যক্রমের ভিত্তিতে।

গত সোমবার এক বেসরকারি চ্যানেলের লাইভ ক্লাসরুম অনুষ্ঠানে চিরঞ্জীব ভট্টাচার্য জানান, উচ্চ মাধ্যমিক অনলাইনে নেওয়ার কোনও সম্ভাবনা নেই। নিশ্চিত ভাবে অফলাইনেই পরীক্ষা হবে। আগেই জানানো হয়েছিল, উচ্চ মাধ্যমিক পরীক্ষা হবে হোম সেন্টারে। প্র্যাক্টিক্যাল পরীক্ষা হবে ১৫ ফেব্রুয়ারি থেকে ৪ মার্চ পর্যন্ত। সীমিত সময়ে বিভিন্ন বিষয়ের যেসব অংশের উপরে ছাত্রছাত্রীরা প্র্যাক্টিক্যাল ক্লাস করেছে, প্র্যাক্টিক্যাল পরীক্ষার প্রশ্ন আসবে তার মধ্য থেকেই।

অন্যদিকে কল্যাণময় জানান, এবারের মাধ্যমিকও হবে অফলাইনে। তবে মাধ্যমিক পরীক্ষা হোম সেন্টারে নেওয়া সম্ভব নয়। কারণ, স্কুলের সংখ্যা ১০ হাজারের বেশি। এমন অনেক স্কুল আছে, যেগুলি প্রত্যন্ত এলাকায়। সেই সব স্কুলে পরীক্ষার পরিকাঠামো তৈরি করা সম্ভব নয়।

পর্ষদ সভাপতি জানিয়েছেন, প্রতিটি পরীক্ষা কেন্দ্রে আইসোলেশন রুম থাকবে। কোনও পরীক্ষার্থী পরীক্ষা চলাকালীন অসুস্থ হয়ে পড়লে এবং তার কোভিডের উপসর্গ দেখা দিলে সে আইসোলেশন রুমে করোনা বিধি মেনে পরীক্ষা দিতে পারবে। আইসোলেশন রুম, সেখানকার সাজসরঞ্জাম, পরীক্ষার প্রশ্ন, উত্তরপত্র— সবই স্যানিটাইজ় বা জীবাণুমুক্ত করা হবে নিয়মিত। স্কুলের অন্যান্য ঘরও জীবাণুমুক্ত করা হবে। উপরন্তু হাসপাতালে বসেও পরীক্ষা দেওয়ার ব্যবস্থা থাকবে।

কল্যাণময় ও চিরঞ্জীব দু’জনেই এদিন স্পষ্ট করে দিয়েছেন, করোনার জন্য মাধ্যমিক ও উচ্চ মাধ্যমিকের পাঠ্যক্রম সংক্ষিপ্ত করা হয়েছে। সেই সংক্ষেপিত পাঠ্যক্রমের ভিত্তিতেই হবে এ বারের পরীক্ষা। চিরঞ্জীব জানান, কিছু প্র্যাক্টিক্যাল ক্লাস ভার্চুয়াল ল্যাবের মাধ্যমেও করার পরিকল্পনা চলছে।

এ দিনের অনুষ্ঠানে শিক্ষামন্ত্রী ব্রাত্য বসু বলেন, করোনায় সমাজের প্রতিটি ক্ষেত্রই ক্ষতির সম্মুখীন হয়েছে। তবে শিক্ষার যা ক্ষতি হয়েছে, সম্ভবত তা অপূরণীয়। নানা মাধ্যমে শিক্ষার্থীদের পড়ানোর চেষ্টা হয়েছে। এবং তাতে সফলও হওয়া গিয়েছে। তবে শিক্ষা ক্ষেত্রে স্কুলে গিয়ে যে-শিক্ষাদান সম্ভব, আর অন্য কোনও ভাবে সেই সমমানের শিক্ষাদান সম্ভব বলে আমরা মনে করি না। পড়ুয়াদের স্কুলে এসে সমষ্টিগত যে-মূল্যবোধ তৈরি হয়, তারও ক্ষতি হয়েছে। শিক্ষা দফতর শিক্ষাকে চালু রাখার নানা উদ্যোগ নিয়ে চলেছে।

সূত্র: আনন্দবাজার পত্রিকা


সর্বশেষ সংবাদ