৩৭ বছর পর স্ত্রীকে পেলেন স্বামী
- টিডিসি রিপোর্ট
- প্রকাশ: ২৯ নভেম্বর ২০২১, ১০:৫০ AM , আপডেট: ২৯ নভেম্বর ২০২১, ১১:০২ AM
উমাপদ বাউরি দীর্ঘ ৩৭ বছর পর স্ত্রীকে নিজ চোখে দেখে আপ্লুত। দীর্ঘদিনের বিচ্ছেদ বেদনার পর স্বামীকে দেখে কান্না চেপে রাখতে পারেননি স্ত্রী ভবানী দেবীও। রবিবার (২৮ নভেম্বর) পশ্চিমবঙ্গের দক্ষিণ চব্বিশ পরগনার বকখালিতে এ ঘটনা ঘটে। হ্যাম রেডিওর মাধ্যমে ৩৭ বছর আগে হারিয়ে যাওয়া স্ত্রীকে ফিরে পান উমাপদ বাউরি।
৩৭ বছর আগে কোনো এক বিকেলে হাটে গিয়ে আর বাড়ি ফেরেননি ঝাড়খণ্ডের বোকারো জেলার কুমারদাগার বাসিন্দা ভবানী দেবী। সেই সময় অনেক খোঁজখবর করেও সন্ধান মেলেনি তার। ঘটনার ১৫ বছর পর স্ত্রীর মৃত্যুর সনদ হাতে পেয়েছিলেন উমাপদ। ঘরে দুই মেয়ে সন্তান। তাদের কথা ভেবেই দ্বিতীয় বিয়ে করেছিলেন উমাপদ।
তবে দীর্ঘ এ সময় পথেঘাটেই ঘুরে বেড়িয়েছেন ভবানী দেবী। ঘুরতে ঘুরতে শেষমেশ তার ঠাঁই হয় বকখালির সমুদ্রসৈকতের কাছে বানেশ্বর নামক স্থানে। সেখানে এক ব্যবসায়ীর বাড়িতে কাজ করতেন ভবানী।
কিছুদিন আগে একজন পর্যটকের মাধ্যমে ভবানী দেবীর নিখোঁজ হওয়ার পুরো খবর জানতে পারে ‘হ্যাম রেডিও’। রেডিওটির সংবাদকর্মী ও সুন্দরবন জেলা পুলিশ ভবানীর পরিচয় বের করেন। তারপর যোগাযোগ করা উমাপদের সঙ্গে।
তবে উমাপদের ঘরে ফেরায় বিপত্তি বাধে বাউরি সম্প্রদায়ের মানুষের রীতিনীতিতে। প্রতিবেশীরা কোনোভাবেই ভবানীকে স্বামীর ঘরে ফিরতে দিতে রাজি হচ্ছিলেন না। পরে বাউরি সম্প্রদায়ের গুরু ও স্থানীয় রাজনৈতিক নেতারা ভবানী দেবীকে উমাপদের ঘরে ফেরানোর ব্যবস্থা করেন।
রবিববার উমাপদ বাউরি ও তাদের প্রতিবেশীরা ভবানী দেবীকে স্বামীর ঘরে ফেরাতে যান সুন্দরবন জেলা পুলিশের এসপির কার্যালয়ে। সেখানে ৩৭ বছর পর মুখোমুখি হন উমাপদ ও ভবানী দম্পতি।
হ্যাম রেডিও’র পশ্চিমবঙ্গ স্টেশনের সম্পাদক অম্বরিশ নাগ বিশ্বাস বলেন, প্রথমে ওই নারীর প্রতিবেশীরা তাকে ফিরিয়ে নিতে চায়নি। পরে স্থানীয় প্রশাসনের তৎপরতায় তাদেরকে রাজি করানো হয়।
সুন্দরবন জেলা পুলিশের অতিরিক্ত পুলিশ সুপার রাকেশ সিংহ বলেন, স্বামীর ঘরে ভবানী দেবীকে ফেরাতে পেরে আমরা আনন্দিত।
সূত্র: আনন্দবাজার পত্রিকা।