ক্ষমতা ছেড়ে এ কাজ করেই কোটি ডলার আয় করবেন ট্রাম্প
- টিডিসি ডেস্ক
- প্রকাশ: ১৪ নভেম্বর ২০২০, ০১:০৪ PM , আপডেট: ১৪ নভেম্বর ২০২০, ০১:০৪ PM
যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের জীবনের ওপর ভিত্তি করে দুটি বই লিখেছেন মার্কিন সাংবাদিক ও পুলিৎজার পুরস্কারপ্রাপ্ত লেখক মাইকেল ডি’অ্যান্টোনিও৷ বহু বছর ধরে তিনি রীতিমতো কাছ থেকে দেখে আসছেন ট্রাম্পকে। সম্প্রতি মার্কিন প্রেসিডেন্ট নির্বাচনের ফলাফল ঘোষণার পর ডয়চে ভেলেকে সাক্ষাৎকার দিয়েছেন তিনি। সেখানে ডি’অ্যান্টোনিও জানান, ভবিষ্যতে রাজনীতি নয়, টেলিভিশনের পর্দাতেই জমি শক্ত করতে দেখা যেতে পারে ট্রাম্প ও তাঁর পরিবারকে৷
ডি’অ্যান্টোনিও বলেন, ‘২০০০ সাল থেকেই কিন্তু ডোনাল্ড ট্রাম্পের আয়ের মূল উৎস হয়ে উঠেছে টেলিভিশন। তাছাড়া নির্বাচনি প্রচারকালীন ট্রাম্পের অঙ্গভঙ্গি ও প্রচারের ধরন থেকে স্পষ্ট বোঝা যায় যে আসলেই ট্রাম্প কত বড় একজন পারফর্মার।’ তাছাড়া ট্রাম্পের টেলিভিশন ক্যারিয়ারে নতুন জোয়ার আনার পেছনে বড় লাভের হিসাবও থাকতে পারে। ডি'অ্যান্টোনিও মনে করছেন, প্রেসিডেন্ট পদ থেকে সরে যাওয়ার পর নিজের আলাদা টেলিভিশন নেটওয়ার্ক চালু করবেন ট্রাম্প। আর তা অবশ্যই লাভজনক একটি বিনিয়োগ হবে বলে মনে করছেন তিনি।
ভোটের হিসাব অনুযায়ী, ডোনাল্ড ট্রাম্প মোট সাত কোটি মানুষের ভোট পেয়েছেন, যা প্রায় তিন কোটি পরিবারের মোট ভোটের সংখ্যা হতে পারে। আর এই তিন কোটি পরিবার যদি ট্রাম্পের নতুন টেলিভিশন নেটওয়ার্কের জন্য গড়ে এক ডলারও প্রতিমাসে খরচ করে, তাহলেই স্পষ্ট হয়ে যায় যে, এই উদ্যোগ থেকে ঠিক কতটা লাভ করতে পারবেন বর্তমান প্রেসিডেন্ট। এ অনুমানে পৌঁছতে ডি’অ্যান্টোনিও মাথায় রাখছেন ট্রাম্পের ব্যবসায়িক ইতিহাস, যা তিনি গভীরভাবে লক্ষ্য করেছেন।
ইরানের দ্য তেহরান টাইমস মার্কিন নির্বাচন নিয়ে ‘ট্রাম্পের পতন উদযাপন করছে ইরান’ শিরোনামে সংবাদ করেছে। পত্রিকাটি লিখেছে, প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প মার্কিন নির্বাচনে পরাজিত হওয়ার বিষয়টি ইরানের সরকারি কর্মকর্তাদের জন্য স্বস্তিদায়ক হলেও নতুন প্রেসিডেন্ট তেহরানের প্রতি মার্কিন নীতিতে কতটা পরিবর্তন আনবেন তা নিশ্চিত হতে পারছেন না তারা। ফলে বাইডেনের জয়ের চেয়ে ট্রাম্পের প্রস্থানেই সন্তুষ্ট বেশি তারা।
যুক্তরাষ্ট্রের ইতিহাস বলে, মার্কিন প্রেসিডেন্টরা ক্ষমতা ছাড়ার পরেও জনসাধারণের জন্য তাঁদের কর্মকাণ্ডকে উন্মুক্ত রাখতে পছন্দ করেন। এজন্য প্রত্যেক প্রেসিডেন্টই তাঁদের শাসনমেয়াদ শেষে একটি ‘প্রেসিডেন্সিয়াল লাইব্রেরি’ বানান ও সেখানে তাঁদের শাসনকালের সমস্ত গুরুত্বপূর্ণ নথি রেখে দেন, যেন সেগুলো ভবিষ্যতে গবেষণার কাজে লাগতে পারে।
কিন্তু ডোনাল্ড ট্রাম্পও যে এই পথে হাঁটবেন, তা নিশ্চিত করে বলতে পারছেন না ডি’অ্যান্টোনিও। তাঁর মতে, ট্রাম্পের জন্য নির্দিষ্ট একটি জাদুঘর বা পাঠাগার তৈরি হলে তাতে কী কী রাখা হবে, সেটা তাঁর কাছে এখনও পরিষ্কার নয়। তবে মাইকেল ডি’অ্যান্টোনিও এ ব্যাপারে নিশ্চিত যে শুধু ডনাল্ড ট্রাম্পই নয়, বরং তাঁর গোটা পরিবারই ট্রাম্প-শাসনের মেয়াদ ফুরোলে ‘পলিটিক্যাল এন্টারটেইনমেন্ট’ জগতে পা রাখবেন।
আর যেহেতু ট্রাম্প দেশটির একটি অংশের মানুষের মানসিকতার প্রতিনিধিত্ব করে আসছেন, ফলে সেই অংশের কাছে ট্রাম্পের গ্রহণযোগ্যতা কোনোভাবেই কমবে না, মনে করেন মাইকেল। বরং, নির্বাচনে হারকেও নিজের বিরোধীগোষ্ঠীদের চক্রান্ত হিসাবে দেখিয়ে তা আখেরে নিজের টেলিভিশন ক্যারিয়ারে কাজে লাগাতে পারেন ট্রাম্প।