ভারতীয় ভিসা বন্ধ

কলকাতার ‘মিনি বাংলাদেশে’ ব্যবসায়িক ক্ষতি বছরে এক হাজার কোটি রুপি

মারকুইস স্ট্রিটের দোকানপাট বন্ধ
মারকুইস স্ট্রিটের দোকানপাট বন্ধ   © টাইমস অব ইন্ডিয়া

হাসিনা সরকারের পতনের পর প্রতিবেশী রাষ্ট্র ভারতের সঙ্গে বাংলাদেশের সম্পর্কের টানাপড়েন চলছে। গত এক বছর ধরে জরুরি চিকিৎসা সেবা ছাড়া বাংলাদেশিদের সব ধরনের ভিসা দেওয়ার ক্ষেত্র সীমিত করে রেখেছে দেশটি। এর প্রভাবে বাংলাদেশি পর্যটক নির্ভর কলকাতার ব্যবসায়িক খাতে বছরে ক্ষতি হয়েছে এক হাজার কোটি রুপি।

সোমবার (৪ আগস্ট) ভারতীয় গণমাধ্যম টাইমস অব ইন্ডিয়ার এক প্রতিবেদনে এ তথ্য উঠে এসেছে।

প্রতিবেদনে কলকাতার নিউমার্কেট ও এর আশপাশের এলাকাকে ‘মিনি বাংলাদেশ’ হিসেবে উল্লেখ করে বলা হয়,  এক বছর আগেও কলকাতার ‘মিনি বাংলাদেশ’ খ্যাত ছোট এই এলাকাটি ছিল খাদ্য, আতিথেয়তা ও বৈদেশিক মুদ্রা বিনিময়ের অন্যতম প্রাণকেন্দ্র। কিন্তু গত বছর বাংলাদেশে রাজনৈতিক অস্থিরতা শুরু ও হাসিনার সরকারের পতনের পর বাংলাদেশি পর্যটকদের সংখ্যা শূন্যের কাছাকাছি নেমে আসায় এলাকাটির ব্যবসায় ধস নেমেছে। গত এক বছরে এই এলাকায় ব্যাবসায়িক  ক্ষতির পরিমাণ ছাড়িয়েছে ১ হাজার কোটি রুপি। 

আরও পড়ুন: চীনের সঙ্গে হাত মিলিয়ে রাশিয়াকে যুদ্ধে সাহায্য করছে ভারত!

এতে আরও বলা হয়, এ সব এলাকার বেশ কিছু ব্যবসা প্রতিষ্ঠান ইতোমধ্যেই বন্ধ হয়ে গেছে। কিছু ব্যবসা প্রতিষ্ঠান স্থানীয় ক্রেতাদের আকৃষ্ট করার চেষ্টা করছে। ব্যবসায়ীদের মতে, সংকট শুরুর পর থেকে এলাকার প্রায় ৪০ শতাংশ ছোট ও মাঝারি রেস্তোরাঁ বন্ধ হয়ে গেছে। অনেক বড় রেস্তোরাঁ সীমিত আকারে পরিচালিত হচ্ছে।  

এনসি ভৌমিক নামে এক রেস্তোরাঁর মালিকে বলেন, ‘আমরা এখন পরিস্থিতি বদলের অপেক্ষায় আছি।’

ফ্রি স্কুল স্ট্রিট ট্রেডার্স অ্যাসোসিয়েশনের সাধারণ সম্পাদক হায়দার আলী খান বলেন, হোটেল, রেস্তোরাঁ, খুচরা ব্যবসা, ট্রাভেল এজেন্ট, বৈদেশিক মুদ্রা বিনিময়, চিকিৎসা সেবা ও পরিবহণ থেকে প্রতিদিনের ব্যবসার পরিমাণ ৩ কোটি রুপি। যদি নিউ মার্কেট ও বুররাবাজারের ক্ষতিও ধরা হয়, তাহলে অঙ্কটি ৫ হাজার কোটি রুপিরও বেশি দাঁড়ায়। 

মারকুইস স্ট্রিটের এক ট্রাভেল এজেন্সির ব্যবস্থাপক প্রবীর বিশ্বাস বলেন, ‘একসময় এই এলাকায় গাড়ি পার্ক করার জায়গাও পাওয়া যেত না, অথচ এখন টানা কয়েকদিন পর্যটকের দেখা মেলে না।’ 

ব্যবসায়ীদের বরাতে প্রতিবেদনে আরও বলা হয়, বাংলাদেশের রাজনৈতিক পট পরিবর্তন কলকাতার ব্যবসায়ীদের কাছে গত কয়েক বছরের মধ্যে ছিল দ্বিতীয় ধাক্কা। প্রথম ধাক্কা ছিল করোনা মহামারির সময়।  করোনাকালের সংকট কাটিয়ে অনেকে নতুন করে বিনিয়োগ করেছিলেন। কিন্তু গত বছরের আগস্টে বাংলাদেশি পর্যটক আসা বন্ধ হওয়ার পর থেকে ব্যবসায়ীরা দ্বিতীয় দফায় বিপাকে পড়েন। বিশেষ করে ঋণ নিয়ে যারা বিনিয়োগ করেছিলেন তাদের জন্য এখন টিকে থাকা কঠিন হয়ে পড়েছে। 


সর্বশেষ সংবাদ