ইরান-ইসরায়েল সংঘাতের অবসান: ‘সবার জন্য বিজয়’ বললেন ট্রাম্প

ডোনাল্ড ট্রাম্প
ডোনাল্ড ট্রাম্প  © সংগৃহীত

ইরান ও ইসরায়েলের মধ্যে ১২ দিনের রক্তক্ষয়ী সংঘাত শেষে যুদ্ধবিরতি কার্যকর হওয়ার পর মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প একে ‘সবার জন্য বিজয়’ বলে আখ্যা দিয়েছেন। তবে মার্কিন গোয়েন্দা সংস্থাগুলোর প্রাথমিক বিশ্লেষণ বলছে, ইরানের পারমাণবিক কর্মসূচি হয়তো মাত্র কয়েক মাসের জন্য থমকে গেছে, স্থায়ীভাবে নয়।

বুধবার নেদারল্যান্ডসের হেগ-এ অনুষ্ঠিত ন্যাটো সম্মেলনে ট্রাম্প বলেন, ‘আমরা ইরানের পারমাণবিক স্থাপনাগুলোতে যে হামলা চালিয়েছি, তা ছিল অত্যন্ত ধ্বংসাত্মক—প্রায় পুরোপুরি নিশ্চিহ্ন করে দিয়েছে। আমি নিশ্চিত, এখন তারা (ইরান) শান্তি চায়, পুনরুদ্ধার চায়, পারমাণবিক কর্মসূচি আবার শুরু করার কথা ভাবছে না।’

তিনি আরও যোগ করেন, ‘যদি তারা সেই পথে হাঁটে, তবে আমরা তা সামরিকভাবেও প্রতিহত করব।’

ট্রাম্প ইঙ্গিত দেন, এ সংঘাতের পর যুক্তরাষ্ট্র ও ইরানের মধ্যে নতুন ধরনের সম্পর্ক তৈরি হতে পারে, যা ভবিষ্যতে দ্বিপাক্ষিক পুনর্মিলনের পথ খুলে দিতে পারে। তার মধ্যপ্রাচ্যবিষয়ক দূত স্টিভ উইটকফ জানান, উভয় পক্ষের মধ্যে আলোচনা ‘আশাব্যঞ্জক’ এবং যুক্তরাষ্ট্র একটি দীর্ঘস্থায়ী শান্তিচুক্তি চায়, যাতে ইরান তার অর্থনীতি ও নিরাপত্তা পুনর্গঠন করতে পারে।

মার্কিন প্রতিরক্ষা গোয়েন্দা সংস্থা (ডিআইএ) জানিয়েছে, ইরানের পারমাণবিক সক্ষমতা কিছুটা ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে—তবে তা সাময়িক। আন্তর্জাতিক আণবিক শক্তি সংস্থার (আইএইএ) প্রধান রাফায়েল গ্রোসি বলেছেন, ইরান এখনো পারমাণবিক প্রযুক্তির জ্ঞান ও শিল্প-সক্ষমতা ধরে রেখেছে। সে কারণে পূর্ণ পরিদর্শন ও তদন্ত আবার শুরু করা জরুরি।

এদিকে, ইরানের পার্লামেন্ট আইএইএ-এর সঙ্গে সহযোগিতা স্থগিত করার প্রস্তাব অনুমোদন করেছে, যদিও তা কার্যকর হতে হলে জাতীয় নিরাপত্তা পরিষদের অনুমোদন লাগবে।

যুদ্ধ চলাকালে ইসরায়েলের হামলায় ইরানের শীর্ষ সামরিক নেতারা এবং কয়েকজন শীর্ষ পরমাণু বিজ্ঞানী নিহত হন। পাল্টা হামলায় ইরান প্রথমবারের মতো ব্যাপকভাবে ইসরায়েলের প্রতিরক্ষা ব্যবস্থাকে ভেদ করতে সক্ষম হয়।

ইরান জানায়, ইসরায়েলি হামলায় তাদের ৬১০ জন নিহত এবং প্রায় ৫ হাজার জন আহত হয়েছেন। তবে যুদ্ধকালে সংবাদমাধ্যমে কঠোর নিয়ন্ত্রণ থাকায় এই তথ্য স্বতন্ত্রভাবে যাচাই করা সম্ভব হয়নি। ইসরায়েলের পক্ষ থেকে জানানো হয়েছে, তাদের নিহতের সংখ্যা ২৮।

তেহরানে ৬৭ বছর বয়সী ফারাহ জানান, তিনি রাজধানীর বাইরে আশ্রয় নিতে বাধ্য হয়েছিলেন। এখন ফিরে এলেও ভবিষ্যৎ নিয়ে শঙ্কা কাটেনি। অন্যদিকে, তেল আবিবের বাসিন্দা ৩৮ বছর বয়সী রনি হোতার-ইশাই বলেন, ‘আমাদের সন্তানরা স্কুলে ফিরেছে, কিন্তু দুই সপ্তাহের অভিজ্ঞতা ছিল মানসিকভাবে ভয়াবহ।’

ইরান যুদ্ধশেষে কঠোর অবস্থান নিয়েছে। দেশটির বিচার বিভাগের তথ্যমতে, ইসরায়েলি গোয়েন্দা সংস্থা মোসাদের সঙ্গে সম্পৃক্ততার অভিযোগে তিনজনকে মৃত্যুদণ্ড দিয়ে তা কার্যকর করা হয়েছে। এছাড়াও, যুদ্ধকালীন সময়ে ইসরায়েলের সঙ্গে সম্পর্ক থাকার অভিযোগে ৭০০ জনকে গ্রেফতার করা হয়েছে।

যুদ্ধ চলাকালে ট্রাম্প ও ইসরায়েলি প্রধানমন্ত্রী বেনিয়ামিন নেতানিয়াহু ইঙ্গিত দিয়েছিলেন, এই সংঘাত ইরানে ধর্মীয় শাসনের পতনের সূচনা হতে পারে। কিন্তু যুদ্ধবিরতির পর ট্রাম্প জানান, ‘আমি ইরানে শাসন পরিবর্তন চাই না। আমি স্থিতিশীলতা চাই। এই মুহূর্তে বিশৃঙ্খলা ইরান বা পুরো অঞ্চলের জন্যই ক্ষতিকর।’


সূত্র: রয়টার্স।


সর্বশেষ সংবাদ

×
  • Application Deadline
  • December 17, 2025
  • Admission Test
  • December 19, 2025
APPLY
NOW!
GRADUATE ADMISSION
SPRING 2026!
NORTH SOUTH UNIVERSITY
Center of Excellence