সার্বিয়াতে-ছাত্র জনতার বিক্ষোভ, চাপের মুখে প্রেসিডেন্ট ভুসিচ
- টিডিসি রিপোর্ট
- প্রকাশ: ০২ ফেব্রুয়ারি ২০২৫, ০৫:৩৭ PM , আপডেট: ০২ ফেব্রুয়ারি ২০২৫, ০৫:৩৭ PM

সার্বিয়াতে সম্প্রতি একটি রেলওয়ে স্টেশনের ছাদ ধসে ব্যাপক প্রাণহানির ঘটনা ঘটে। এ ঘটনাকে কেন্দ্র করে শুরু হওয়া আন্দোলন আরও বড় আকার ধারণ করেছে। সরকারের অদক্ষতা ও দুর্নীতির অভিযোগে চাপের মুখে আছেন প্রেসিডেন্ট আলেক্সান্ডার ভুসিচ। পরিস্থিতি স্বাভাবিক করতে দেশটির প্রধানমন্ত্রী মিলোশ ভুচেভিচ পদত্যাগ করলেও আন্দোলন থামেনি।
গত বছরের নভেম্বর মাসে সার্বিয়ার নোভি সাদ শহরে একটি রেলওয়ে স্টেশনের ছাদ ধসে ১৫ জনের মৃত্যু হয়। এ ঘটনার দায়ে সরকারের জবাবদিহি চেয়ে রাজপথে বিক্ষোভ করতে নামেন হাজার হাজার মানুষ। এই বিক্ষোভে নেতৃত্ব দেন শিক্ষার্থীরা। প্রতিদিন সড়ক অবরোধ ও মাসের পর মাস বিশ্ববিদ্যালয় অবরোধ করে সরকারের ব্যর্থতার প্রতিবাদ জানান তারা।
গত সপ্তাহে এই বিক্ষোভ তীব্র আকার ধারণ করে। ইতিহাসের সবচেয়ে বড় বিক্ষোভ হিসেবে অভিহিত করা হয় একে। বিক্ষোভটি দেশটির শতাধিক প্রাদেশিক শহর ও গ্রামে ছড়িয়ে পড়েছে।
নভেম্বর মাস থেকে শুরু হওয়া ধর্মঘট ও বিক্ষোভের চূড়ান্ত পরিণতি দেখা যায় গতকাল শনিবার। সরকারের এই সিদ্ধান্তের প্রতিবাদে মানুষের ঢল নেমে আসে রাজপথে। সরকার এই দুর্ঘটনার জন্য কোনো দায় নিতে অস্বীকৃতি জানিয়েছে বলে অভিযোগ করেন তারা। বিক্ষোভকারীদের দাবি, রেলওয়ে স্টেশনটি চীনের একটি কনসোর্টিয়ামের সঙ্গে যৌথভাবে নির্মাণ করা হয়েছিল। কিন্তু এর নিরাপত্তায় কোনো মনোযোগ দেওয়া হয়নি।
বিক্ষোভে অংশগ্রহণকারী দেজান বাগারিক নামে এক শিক্ষার্থী বলেন, ‘সার্বিয়ার ইতিহাসে সবচেয়ে বড় বিক্ষোভ দেখতে পাচ্ছি আমরা। এমন আগে কখনো হয়নি। মানুষ সত্যিই মন থেকে অংশ নিয়েছে। কারণ সবাই দুর্নীতিতে ক্লান্ত। এই সরকার ভয়াবহ মাত্রায় দুর্নীতিগ্রস্ত।’
মানবাধিকার আইনজীবী চিতোমির স্টোজকোভিচ এ ঘটনায় একটি ফৌজদারি অভিযোগ দায়ের করেছিলেন, যা শেষ পর্যন্ত প্রসিকিউটরদের তদন্ত শুরু করতে বাধ্য করছে। তিনি বলেন, ‘এই নির্মাণে কোনো স্বচ্ছতা ছিল না, চুক্তির জন্য কোনো পাবলিক টেন্ডার হয়নি। যখন দুর্ঘটনা ঘটেছিল, তার ঠিকমতো তদন্ত হলো না। সরকার সবকিছু আড়ালের চেষ্টা করল।’
তিনি আরও বলেন, ‘মানুষ প্রেসিডেন্ট ভুসিচের এবং এই সরকারের অবসান চায়।’
তবে ভুসিচের দাবি, এই বিক্ষোভের পেছনে বিদেশি শক্তির হাত রয়েছে। তিনি বিক্ষোভকারীদের উদ্দেশে বলেন, ‘আমাদের দেশ আক্রমণের মুখে, বিদেশ থেকেও এবং অভ্যন্তর থেকেও।’
বিক্ষোভ নিয়ন্ত্রণে আনতে প্রেসিডেন্ট ভুসিচের ঘনিষ্ঠ মিত্র দেশটির প্রধানমন্ত্রী মিলোশ ভুচেভিচ পদত্যাগ করলেও ছাত্র-জনতার বিক্ষোভে কোনো পরিবর্তন আসেনি। অবশেষে রেলওয়ে স্টেশন ধসের গোপন নথি প্রকাশ করা হয়। শিক্ষার্থীদের দাবি মেনে নেওয়া হবে বলেও ঘোষণা দেওয়া হয়। তবে এই বিক্ষোভ খুব দ্রুত শেষ হবে না বলে মনে করছেন অনেকেই।