নিট পরীক্ষা ছাড়াই মেডিকেলে ভর্তি শিক্ষার্থী, স্বীকার ভারতীয় কলেজের
- টিডিসি ডেস্ক
- প্রকাশ: ২১ মার্চ ২০২৪, ১০:৫৯ AM , আপডেট: ২১ মার্চ ২০২৪, ১১:০৩ AM
ভারতের কাঁথি শহরের ‘মুশকিল আসান কেন্দ্র’র কর্তারা জানিয়েছিলেন, মেডিকেলের সর্বভারতীয় এন্ট্রান্স পরীক্ষা (নিট) ছাড়াই তারা এক ছাত্রকে কলকাতার সাগর দত্ত মেডিক্যাল কলেজে এমবিবিএসে ভর্তি করেছিল। বিনিময়ে নিয়েছিল মোটা অঙ্কের টাকা। সাগর দত্ত মেডিকেল কর্তৃপক্ষ স্বীকার করেছে, কাগজপত্র দেখে প্রমাণ পেয়েছে, ২০১৯ সালে ওই ছাত্র কলেজে ভর্তি হয়েছিল।
মেডিকেলের অধ্যক্ষ পার্থপ্রতিম প্রধান বলেন, কাঁথির ওই ছাত্র ভর্তি হলেও পরে রেজিস্ট্রেশন করায়নি। কলেজে আসাও বন্ধ করে দেয়। এ বক্তব্য জানার পরে একটি মহলের দাবি, ‘ডামি ক্যান্ডিডেট’ নিটে বসিয়ে এমবিবিএসে ভর্তি করানো হচ্ছে। অভিযোগ উঠেছে, একাধিক চক্র সক্রিয়। চলছে কোটি-কোটি টাকার খেলা।
কাঁথিতে সংস্থাটির অফিসে ‘দইসাই এজি চার্চ’ নামে আরেকটি সংস্থার কাজ চলে। তার বিরুদ্ধে কাঁথি মহকুমা হাসপাতালসহ একাধিক সরকারি হাসপাতালের নাম ব্যবহার করে নার্সিং কলেজে শিক্ষার্থী ভর্তির অভিযোগ উঠেছিল। চার্চের কর্ণধার অর্পণ রানা বলছেন, ‘শুনেছি মুশকিল আসান কেন্দ্র মেডিকেলে ভর্তির নামে অনিয়মের সঙ্গে যুক্ত। সব জেনেও ওদের সঙ্গে সম্পর্ক রেখেছি কারণ, ওরা আমাদের আইটিআই কলেজে ছাত্র-ছাত্রী ভর্তি করায়।’
এমন সংস্থা রাজ্যের বিভিন্ন প্রান্তে রয়েছে বলে অভিযোগ উঠেছে। ‘বাসন্তী দেবী এডুকেশন্যাল সার্ভিস’ এর মধ্যে একটি। সংস্থাটি হাজরার সদানন্দ রোডের। মেদিনীপুর শহরে শাখা অফিস রয়েছে। তাদের ফোনে বলা হয়েছিল, ৪-৫ জন একটি মেডিক্যাল কোচিংয়ে পড়ে। গতবার নিটে সুযোগ হয়নি। এবার এমবিবিএসে সুযোগ পেতে মরিয়া তারা। টাকা দিতেও প্রস্তুত।
পরে ফোনের অন্য প্রান্ত থেকে ‘বাসন্তী দেবী এডুকেশন্যাল সার্ভিস’র এক ব্যক্তি আশ্বাস দেন, ‘হয়ে যাবে। দেখা করুন। ৬০ লাখ থেকে ১ কোটি বাজেট থাকলে কাজ হবে। তফসিলি জাতির প্রার্থী হলে সরকারি মেডিকেলে নিট না-দিয়ে ভর্তির জন্য ৬০-৭০ লাখ লাগবে। সাধারণ প্রার্থীর ক্ষেত্রে বাজেট দাঁড়াবে ১ কোটিতে।’ ২০ মার্চ দুপুর পর্যন্ত সংস্থাটি থেকে ‘ডিল’ পাকা করতে চাপ দেওয়া হয়।
আর একটি সংস্থা ‘ভারত ইনস্টিটিউট অব হায়ার এডুকেশন অ্যান্ড রিসার্চ’। তাদের অবস্থান চেন্নাইয়ের। সংস্থার কর্ণধার বাসুদেব দাস ফোনে জানান, তাঁরা ‘ডামি ক্যান্ডিডেট’ দিয়ে নিট পাস করানোর ‘ঝুঁকি’ নেন না। কেউ ৫২০-৫৩০ নম্বর পেলে স্টেট কোটায় বেসরকারি কলেজে ভর্তির ব্যবস্থা করেন ৪৬-৪৮ লাখ টাকায়। ৬০০-এর বেশি নম্বর পেলে মেদিনীপুর বা উত্তরবঙ্গ মেডিকেলে ভর্তির ব্যবস্থা করেন। খরচ হয় ৫০ লাখ। ৬২০-৬২৫ পেলে কলকাতার মেডিকেল কলেজেও দেওয়া সম্ভব।’ খবর: আনন্দবাজার।