শীর্ষ জার্নাল ন্যাচারে বাংলাদেশি গবেষকদের প্রবন্ধ 

প্রবন্ধে প্রকাশিত ছবি
প্রবন্ধে প্রকাশিত ছবি   © ন্যাচার

বাংলাদেশি গবেষকদের আর্টিকেল প্রকাশ করলো বিশ্বসেরা জার্নাল ‘ন্যাচার’। বাংলাদেশের পানিসম্পদের অব্যবস্থাপনা, সেচকাজে অতিরিক্ত ভূগর্ভস্থ পানির ব্যবহারের বিভিন্ন দিক নিয়ে গবেষণা তুলে ধরা হয় প্রবন্ধটিতে।

২৬ অক্টোবর ন্যাচার ওয়েবসাইটে এটি প্রকাশিত হয়। এই জার্নালের ইমপ্যাক্ট ফ্যাক্টর ৬৯ দশমিক ৫। 

বাংলাদেশের পানিসম্পদের অব্যবস্থাপনা নিয়ে মোট ৭ জন গবেষক গবেষণা করেন। তাদের মধ্যে পাঁচজন বাংলাদেশি বিজ্ঞানী। তাদের মধ্যে নিশান কুমার বিশ্বাস নাসা ইউনিভার্সিটি অফ ম্যারিল্যান্ডের অ্যাসোসিয়েট বিজ্ঞানী, আদনান রাজীব টেক্সাস এম ইউনিভার্সিটির সহকারী অধ্যাপক, সুজয় কুমার নাসার গবেষক, মুজিবুর রহমান আহসানুল্লাহ ইউনিভার্সিটি অফ সাইন্স এন্ড টেকনোলজির অধ্যাপক এবং রবিন কুমার বিশ্বাস বাংলাদেশ পানি উন্নয়ন বোর্ডের প্রকৌশলী। 

গবেষক নিশান বিশ্বাস জানান, মূলত এই গবেষণা প্রবন্ধে ‘সেচকাজে ভুগর্ভস্থ পানি সাবধানে ব্যবহার না করলে ভবিষ্যতে বাংলাদেশের সামনে বড় বিপদ অপেক্ষা করছে সেটিই তুলে ধরা হয়েছে।’

আরও পড়ুন: ডিসিদের সিন্ডিকেট সদস্য করার পক্ষে না ইউজিসি-উপাচার্যরা 

তিনি তাঁর ফেসবুক পোস্টে আরও জানান, এই কাজটার শুরুর পিছনে খুব সুন্দর একটা গল্প আছে। এই বছরের শুরুর দিকে, আমি তখন ল্যান্ডস্লাইড টিমে কাজ করছি। হঠাৎ করে আমার সুপারভাইজার জিজ্ঞাসা করলেন আমি ইআইএস টিমে কাজ করতে ইচ্ছুক কি না! ইআইএস আমার কাছে খুব পছন্দের একটি ইনিশিয়েটিভ। তাই কিছু না ভেবেই বলে দিলাম, আমি রাজি। 

শুরুর দিনের বৈঠকে এ পিআই সুজয় কিছু আইডিয়া দিয়ে জিজ্ঞাসা করলেন কি নিয়ে কাজ করতে চাই? বললাম আমরা তো যুক্তরাষ্ট্রে নিয়ে অনেক কাজ করলাম। এবার বাংলাদেশ নিয়ে কিছু কাজ করি। প্রথম জিনিস যেটা আমাদের সবার মনে প্রশ্ন এলো, ডাটা কোথায় পাবো আমরা? সে সমাধান পেলাম আমার কাছে থাকা কিছু ডাটা আর পানি উন্নয়ন বোর্ডের কাছ থেকে কিছু ডাটা পেয়ে। কৃতজ্ঞতা গুগল আর্থ ইঞ্জিনের (Google Earth Engine) প্রতি যার কারনে অধিকাংশ স্যাটেলাইটের তথ্য খুব দ্রুত প্রসেস করতে পেরেছি। 

অন্যদিকে এ অর্জনটিকে বাংলাদেশের জন্য গবেষণায় মাইলফলক হিসেবে বিবেচনা করেছেন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের পদার্থ বিজ্ঞান বিভাগের অধ্যাপক ড. কামরুল হাসান। ফেসবুকে এক পোস্টের মাধ্যমে তিনি এ অনুভূতি প্রকাশ করেন। তিনি বলেন, এটা যে কত বড় এক প্রাপ্তি আমরা কি সেটা বুঝতে পারছি? এই আর্টিকেলটিতে বাংলাদেশের ছবি এসেছে। অর্থাৎ আমাদের বিজ্ঞানীদের এই আর্টিকেলের সুবাদে বিশ্ব বাংলাদেশকে নতুন করে চিনছে। বোঝাই যাচ্ছে বাংলাদেশে গবেষণার একটি পরিবেশ হয়ত সৃষ্টি হয়ে গেছে। এটাকে ত্বরান্বিত করতে হবে। এই পরিবেশকে আরো বেশি গবেষণাবান্ধব করে গড়ে তুলতে হবে। নিজের দেশে একটি আন্তর্জাতিক মানের ইনস্টিটিউট করে সেখানে এনভায়রনমেন্ট, কৃষি, ভৌত বিজ্ঞান এবং কম্পিউটার বিজ্ঞানকে এক ছাদের নিচে নিয়ে আসতে হবে। 

তিনি আরও বলেন, গ্লোবাল ওয়ার্মিং সবচেয়ে বড় ভিক্টিম যেহেতু আমরা আমাদের উচিত এসব বিষয়ে গবেষনা বেশি হারে করা। এর সুবিধা হলো ভালো কাজ করলেই ‘সাইন্স’, ‘নেচার’র মত জার্নালে প্রকাশিত হওয়ার বিশাল সম্ভবনা। একটি গবেষণাপত্রের মাধ্যমে বাংলাদেশের ছবি বিশ্বের সেরা জার্নালে এসেছে। এইরকম আর্টিকেলই বাংলাদেশের সেরা এম্বাসেডর। এইরকম জার্নালে একটা আর্টিকেলের যে কি ইমপ্যাক্ট তা ভাষায় প্রকাশ সম্ভব না। আমাদের উচিত শিক্ষায় বাজেট বরাদ্দ অন্তত ৩গুন বাড়ানো। এর একটা বড় অংশ গবেষণা ও গবেষণা ইনস্টিটিউট তৈরীতে বরাদ্দ দেওয়া।

ড. কামরুল আরও বলেন, একটি বিশ্বমানের ইনস্টিটিউট গড়ার কোন বিকল্প নেই। যেই ইনস্টিটিউটে গবেষণার বিশ্বমানের সুযোগ সুবিধা থাকবে, বিশ্বমানের গবেষক থাকবে এবং বিশ্বমানের বেতন ভাতাদি থাকবে। তাহলেই কেবল রিভার্স ব্রেইন ড্রেইন শুরু হবে। যখন থেকে দেশে উন্নতমানের মানুষের সংখ্যা বাড়তে থাকবে তখন থেকেই দেশ সত্যিকারের উন্নয়নের পথে হাটতে শুরু করবে। আমাদের বাংলাদেশকে বিশ্বের সামনে সর্বোচ্চ সুন্দরভাবে তুলে ধরার জন্য সকল কো-অথরদের জানাই অভিনন্দন। 


সর্বশেষ সংবাদ

×
  • Application Deadline
  • December 17, 2025
  • Admission Test
  • December 19, 2025
APPLY
NOW!
GRADUATE ADMISSION
SPRING 2026!
NORTH SOUTH UNIVERSITY
Center of Excellence