পিঁড়িতে বসিয়ে ৫০ বছর ধরে চুল-দাড়ি কাটছেন লক্ষন ও বলায়

পিঁড়িতে বসিয়ে ৫০ বছর ধরে চুল-দাড়ি কাটছেন লক্ষন ও বলায়
পিঁড়িতে বসিয়ে ৫০ বছর ধরে চুল-দাড়ি কাটছেন লক্ষন ও বলায়  © টিডিসি ফটো

কালক্রমে হারিয়ে যেতে বসেছে পিঁড়িতে বসে ভ্রাম্যমাণ নরসুন্দরদের সুনিপুণ হাতে চুল ও দাড়ি কাটার দৃশ্য। সময়ের আবর্তনের সঙ্গে পাল্লা দিয়ে অন্য অনেক পেশার মতো নরসুন্দরের এই পেশাও বদলে যাচ্ছে। তারপরও গ্রামাঞ্চল ও বিশেষ করে চরাঞ্চলের সাপ্তাহিক হাটবাজারগুলোতে চোখে পড়ে ভ্রাম্যমাণ নরসুন্দরদের কর্মব্যস্ততা।

গ্রামীণ এই ঐতিহ্য ধরে রেখেছেন লক্ষন চন্দ্র শীল (৭২) ও বলায় চন্দ্র শীল (৭০)। আর বাজারের ফুটপাতেই বসেই কাটিয়ে দিলেন জীবনের প্রায় ৫০টি বছর। ভোলার চরফ্যাশন উপজেলার শশীভুষন (লেতরা) বাজারের ফুটপাতে পিঁড়িতে বসিয়ে তারা স্থানীয়দের চুল ও দাড়ি কাটেন, করান শেভও। যার আয় দিয়ে কোনোরকমে চলে তাদের সংসার।

তাদের কাছে চুল-দাড়ি কাটতে আসেন বিভিন্ন বয়সের লোকজন। এ কাজের জন্য লক্ষন চন্দ্র শীল ও বলায় চন্দ্র শীলদের কাছে প্রয়োজনীয় জিনিসপত্র বলতে আছে চিরুনি, কাপড়, ছোট আয়না, ক্ষুর, কাঁচি ও একটি টুল বা পিঁড়ি।

তারা দুজনেই উপজেলার এওয়াজপুর ইউনিয়নের বাসিন্দা। নরসুন্দর বলায় চন্দ্র শীল জানান, গত ৫০ বছর ধরে তারা পিঁড়িতে বসে খোলা আকাশের নিচে এভাবেই চুল ও দাড়ি কাটেন। শেভও করান।

সেই ঐতিহ্য ধরে রেখেছেন তারা। তাদের কাছে ৩০ টাকায় চুল ও ২০ টাকায় দাড়ি কাটানো যায়। তারা দুজনে এ কাজ করে প্রতি হাটে ১৫০-২০০ টাকার মতো আয় করেন। এই পেশায় তাদের ৫০টি বছর অতিবাহিত হয়ে গেছে। এ সময়ে বাজারের চিত্র বদলে গেলেও বদলায়নি তাদের জীবন। স্বল্প আয়ের এই টাকা দিয়েই চলে তাদের ৬ সদস্যের পরিবার।

আরও পড়ুন: ইডেনের বকুল গাছের তলায় কেটে যাচ্ছে চর্মকারের তিন প্রজন্ম

বলায় চন্দ্র শীলের সংসারে দুই ছেলে ও এক মেয়ে রয়েছে। দুই ছেলে তার পেশায় রয়েছেন। আর মেয়েকে বিয়ে দিয়েছেন। তবে তার ছেলেরা ফুটপাতে নয়, কাজ করেন বাজারের সেলুনে।

May be an image of 4 people

আরেক নরসুন্দর লক্ষন চন্দ্র শীল বলেন, আমাদের কাছে বিভিন্ন বয়সের লোকজনই আসেন। কেউ ২০ টাকা, আবার কেউ ৪০ টাকা করে দেন। আর এই আয়ের টাকা দিয়ে কোনোরকমে চলে আমাদের সংসার। আমার সংসারে তিন ছেলে রয়েছেন।

চুল ও দাড়ি কাটার এ পদ্ধতিতে পরিবর্তন আনার কোনো চিন্তা আছে কিনা জানতে চাইলে তারা বলেন, গ্রাহকরা পিঁড়িতে বসে কাজ করায় অভ্যস্ত হয়ে গেছেন। আমরা নিজেরাও এভাবে অভ্যস্ত। এখন চাইলেও আর সম্ভব না। জীবনের বাকি দিনগুলোও এভাবে কাজ করে জীবনের ইতি টানতে চাই।

নরসুন্দর লক্ষন চন্দ্র শীল ও বলায় চন্দ্র শীলের কাছে চুল কাটাতে ও শেভ করতে আসা কয়েকজন জানান, এদের কাছে কম দামে চুল ও দাড়ি কাটানো যায়। শেভ করতেও তারা কম টাকা নেয়। এ জন্যই তারা এক শ্রেণির গ্রাহকদের ধরে রাখতে পেরেছেন। যেখানে বাজারের সেলুনগুলোতে গেলে এক থেকে দেড়শত টাকা করে দিতে হয়।

বলায় চন্দ্র শীলের কাছে সেবা নিতে আসা খোরশেদ আলম বেপারি বলেন, লক্ষন চন্দ্র শীল ও বলায় চন্দ্র শীল ফুটপাতে বসে চুল-দাড়ি কাটলেও তারা সুন্দরভাবে কাজ করে দেয়। তাদের কাছে কম খরচে চুল-দাড়ি কাটানো যায়।


সর্বশেষ সংবাদ

×
  • Application Deadline
  • December 17, 2025
  • Admission Test
  • December 19, 2025
APPLY
NOW!
GRADUATE ADMISSION
SPRING 2026!
NORTH SOUTH UNIVERSITY
Center of Excellence