সুবর্ণজয়ন্তীতে গৌরবের বিজয় দিবস

সুবর্ণজয়ন্তীতে গৌরবের বিজয় দিবস
সুবর্ণজয়ন্তীতে গৌরবের বিজয় দিবস  © সংগৃহীত

১৬ ডিসেম্বর। মহান বিজয় দিবস। বাঙালি জাতির সবচেয়ে বড় অর্জনের দিন। বিশ্ব মানচিত্রে স্বাধীন রাষ্ট্র হিসেবে বাংলাদেশ নাম প্রতিষ্ঠার এক মাইলফলকের মাহেন্দ্রক্ষণ। পাকিস্থানি শাসকগোষ্ঠীর দীর্ঘ সাড়ে তেইশ বছরের শোষণ বঞ্চনা আর নির্যাতনের কালো অধ্যায় অবসানের দিন এটি।

স্বাধীনতার জন্য বাঙালিকে দীর্ঘ সংগ্রামের পথ অতিক্রম করতে হয়েছে। ভাষা আন্দোলনের মধ্য দিয়ে বাঙালি জাতির স্বাধিকারের যে চেতনা প্রস্ফুটিত হয়েছিল, সময়ের পরিক্রমায় তা মুক্তিযুদ্ধে রুপান্তরিত হয়।

বাঙালির অবিসংবাদিত নেতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের নেতৃত্বে দীর্ঘ নয় মাস রক্তক্ষয়ী সংগ্রামে ত্রিশ লক্ষ শহীদ আর দুই লক্ষ মা-বোনের সম্ভ্রমহানির বিনিময়ে এসেছে বাঙালির ঐতিহাসিক বিজয়।

পড়ুন: গৌরবময় বিজয়ের সুবর্ণজয়ন্তী আজ

৭ মার্চের ঐতিহাসিক ভাষণে যে রেসকোর্স ময়দান থেকে বঙ্গবন্ধু বজ্র কন্ঠে ‘এবারের সংগ্রাম মুক্তির সংগ্রাম, এবারের সংগ্রাম স্বাধীনতার সংগ্রাম’ বলে ঘোষণা দিয়েছিলেন সেই ময়দানেই আজকের দিনে হানাদার বাহিনী যৌথ বাহিনীর কাছে আত্মসমর্পণ করে। এর মধ্য দিয়েই স্বাধীনতার রক্তিম সূর্যালোকে উদ্ভাসিত হয় প্রিয় মাতৃভূমি বাংলাদেশ। চূড়ান্ত বিজয়ের মধ্য দিয়ে অভ্যুদয় ঘটে স্বাধীন-সার্বভৌম বাংলাদেশ নামক রাষ্ট্রের।

পড়ুন: জাতীয় স্মৃতিসৌধে রাষ্ট্রপতি ও প্রধানমন্ত্রীর শ্রদ্ধা

বিশ্বের সকল স্বাধীন দেশের বিজয় দিবস না থাকলেও আমরা বিজয় দিবস পালন করা সেই সৌভাগ্যবান জাতি। প্রিয় মাতৃভূমির স্বাধীনতা অর্জনে জীবন উৎসর্গ করা যুদ্ধজয়ের আনন্দের কোন তুলনা হয় না। আমাদের সেই বিজয় আজ ৪৯ পেরিয়ে ৫০তম বর্ষে পদার্পণ করেছে। ইতিহাসের প্রেক্ষাপটে সময়ের এই ব্যাপ্তি খুব দীর্ঘ না হলেও একটি জাতির উন্নয়ন-অগ্রগতির জন্য একেবারে কম নয়।

নুরুল আলম আলমাস

পঞ্চাশ বছরে উপনীত গৌরবের বিজয়ে প্রত্যাশার আলোকে আমাদের যথেষ্ট প্রাপ্তি থাকলেও সামাজিক এবং অর্থনৈতিক ক্ষেত্রে কাঙ্ক্ষিত অর্জন আজও সম্ভব হয়ে ওঠেনি। যে স্বপ্ন, আশা আর প্রত্যাশা নিয়ে আমাদের বিজয় অর্জিত হয়েছিল নানা কারণে তা আজও সাফল্যের লক্ষ্যমাত্রা স্পর্শ করতে সামর্থ্য হয়নি।

পড়ুন: বিকেলে শপথ করাবেন প্রধানমন্ত্রী

স্বাধীনতা পরবর্তী বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানকে সপরিবারে হত্যা, বারবার সামরিক অভ্যুত্থান, রক্তপাতের মধ্য দিয়ে ক্ষমতা দখল, একদলীয় শাসন, মুক্তিযুদ্ধবিরোধী ষড়যন্ত্রকারীদের তৎপরতা, অর্থনৈতিক বৈষম্য, ঘুষ, দুর্নীতি ইত্যাদি অবক্ষয় মুক্তিযুদ্ধের চেতনাকে বিপন্ন করে চলেছে।

শিক্ষা, কৃষি, স্বাস্থ্যসহ বিভিন্ন খাতে আর্থসামাজিক সূচকে আমাদের অনেক অগ্রগতি হলেও রাজনৈতিক স্থিতিশীলতা অর্জনে আমরা ব্যর্থ হয়েছি।

পড়ুন: দেশের ইতিহাসে মোড় ঘুরানো ১৪টি ঘটনা যেভাবে ঘটেছিল

৫০তম বিজয় দিবস আমাদের সামনে এক ভিন্ন প্রেক্ষাপটে হাজির হয়েছে। বিজয়ের এই সুবর্ণজয়ন্তীর প্রাক্কালে স্বাধীনতার ঘোষণাপত্রে উল্লেখিত সাম্য, মানবিক মর্যাদা ও সামাজিক ন্যায়বিচার প্রতিষ্ঠায় বাংলাদেশের জনগনের জন্য আমরা কাজ করি।

অন্যায়, অবিচার ও শোষণমুক্ত সমাজ বিনির্মানই হোক আমাদের লক্ষ্য। তাই বিজয়ের দিনে মহান আল্লাহর কৃতজ্ঞতা জ্ঞাপনের পাশাপাশি দেশের সার্বিক উন্নয়নে আমাদের প্রত্যেকের অগ্রণী ভুমিকা পালন করা অপরিহার্য।

লেখক: সাংবাদিক ও মানবাধিকার কর্মী


সর্বশেষ সংবাদ

×
  • Application Deadline
  • December 17, 2025
  • Admission Test
  • December 19, 2025
APPLY
NOW!
GRADUATE ADMISSION
SPRING 2026!
NORTH SOUTH UNIVERSITY
Center of Excellence